মুম্বই: বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের টাকা বকেয়া রেখেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড! সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন খবরে সে রকমই জল্পনা ছড়াচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, অক্টোবর মাস থেকে বোর্ডের কাছে কোনও টাকা পায়নি কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় থাকা ২৭ ক্রিকেটার!


চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের চার দফায় টাকা দেয় বোর্ড। প্রত্যেক তিন মাস অন্তর একবার করে। তবে শোনা যাচ্ছে, অক্টোবর মাস থেকে আর কোনও টাকা পাননি বিরাটরা। বকেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ৯৯ কোটি টাকা। পাশাপাশি গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে করোনা আবহে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেটারেরা যে দুটি টেস্ট, ৯টি ওয়ান ডে ও ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন, সেগুলির ম্যাচ ফি-ও নাকি বাকি।

বোর্ডের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের মধ্যে কোহলি, রোহিত ও যশপ্রীত বুমরাহ আছেন এ প্লাস ক্যাটেগরিতে। বার্ষিক ৭ কোটি টাকা করে পাওয়ার কথা তাঁদের। এ, বি ও সি ক্যাটেগরিতে থাকা ক্রিকেটারেরা যথাক্রমে বার্ষিক ৫, ৩ ও ১ কোটি টাকা পান। পাশাপাশি টেস্ট ম্যাচ পিছু ১৫ লক্ষ টাকা, ওয়ান ডে পিছু ৬ লক্ষ ও প্রত্যেক টি-টোয়েন্টির জন্য ৩ লক্ষ টাকা করে ম্যাচ ফি পান ক্রিকেটারেরা।

২০১৮ সালের মার্চে শেষবার হিসেব প্রকাশ করেছিল বোর্ড। তাতে দেখা গিয়েছিল, নগদ ও ব্যাঙ্কে জমা অর্থরাসি মিলিয়ে বোর্ডের হাতে মোট ৫,৫২৬ কোটি টাকা ছিল। যার মধ্যে ২,৯৯২ কোটি টাকা পিক্সড ডিপোজিট। সে বছরের এপ্রিলে স্টার টিভির সঙ্গে ৫ বছরের চুক্তি হয় বোর্ডের। চুক্তির অঙ্ক ৬,১৩৮.১ কোটি টাকা।

নাম প্রকাশ না করে বোর্ডের চুক্তির তালিকায় থাকা আটজন ক্রিকেটার তাঁদের ১০ মাস ধরে টাকা না পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বলে খবর। পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে, ঘরোয়া ক্রিকেটারদেরও টাকা বকেয়া রয়েছে। বাংলা, মুম্বই, ঝাড়খণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, বঢোদরা, পুঁদুচেরি, রেলওয়েজ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের ক্রিকেটারেরা জানিয়েছেন, তাঁরা গত মরসুমের পুরো টাকা পাননি। বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের ক্রিকেটারদেরও টাকা বাকি রয়েছে বলে জল্পনা। তবে বোর্ডের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে যে, প্রত্যেক রাজ্য সংস্থাকে ১০ কোটি টাকা করে দেওয়া হয়েছে ক্রিকেটারদের টাকা মেটানোর জন্য।

ক্রিকেটারদের টাকা বকেয়া থাকা নিয়ে বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধূমলের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে বোর্ড সূত্রে খবর, সাংগঠনিক সমস্যার জন্যই এই দেরি। ডিসেম্বর মাস থেকে বোর্ডের চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার নেই। গত মাসে চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার রাহুল জোহরি ও জেনারেল ম্যানেজার (ক্রিকেট অপারেশনস) সাবা করিমের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসাবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও সচিব হিসাবে জয় শাহর মেয়াদও ফুরিয়েছে। কুলিং অফের নিয়ম বদলানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। সেই কারণেই বিভিন্ন কাজ আটকে রয়েছে বলে বোর্ডের একাংশ থেকে জানা যাচ্ছে।