ত্রিনিদাদ: শেষরক্ষা হয়নি। তীরে এসে তরী ডুবেছে। তবুও ওদের দেশে নতুন সূর্যোদয় হয়েছে। ক্রিকেটের সূর্যোদয় হয়েছে। সেই সূর্যোদয়ের সাক্ষী থেকেছে গোটা দেশের মানুষ। যাদের খাছে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের জোগান ছিল না, তাঁরাই আজ ক্রিকেট নিয়ে বেঁচে আছেন। বাংলাদেশের (Bangaldesh vs Afghanistan) বিরুদ্ধে ম্য়াচর পর এরকম ছবি দেখা গিয়েছিল। সেদিন তো হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছিলেন রশিদ খান (Rashid Khan) ও তাঁর ছেলেরা। কিন্তু এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa vs Afghanistan) বিরুদ্ধে ম্য়াচ হারতে হয়েছে। সেমিতেই দৌড় শেষ হয়েছে। তবুও কাবুলের রাস্তাঘাটে কোথাও জায়গা ফাঁকা নেই। সেদেশের কচিকাঁচা থেকে বুড়ো সবাই রাস্তায় নেমে এসেছেন প্রিয় দলটাকে সমর্থন করতে, তাঁদের হয়ে গলা ফাটাতে। সেমিফাইনালের পর আফগানিস্তান ক্রিকেটের সোশ্য়াল মিডিয়া জুড়ে কিছু ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে যে রাস্তায় তিল ধারনের জায়গা নেই। গিজগিজ করছে মানুষ। রাস্তাতেই জায়ান্ট স্ক্রিনে বা বড় টিভিতে খেলাতে চোখ রেখেছিলেন সবাই। 


 






ম্য়াচে হারের পর আবার নিজেরাই একে অপরকে স্বান্তনা দিচ্ছেন। কেউ কাউকে জড়িয়ে ধরেছেন। আসলে ওঁরা সবাই আজ কাঁদছেন। ছেলেরা অনেকটা চেষ্টা করেছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এই দেশে তালিবানদের শাসন চলে এখন। স্বাধীনতা শব্দটা আফগানিস্তানের মানুষের জীবন থেকে অনেকদিন আগেই চলে গিয়েছে। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুশঙ্কা কাজ করে। এই যে ক্রিকেট খেলা, সেটাও তো একসময় নিজেদের দেশে খেলা বারণ ছিল আফগানিস্তানের। অন্য দেশে অনুশীলন সারতে হয়েছিল। সেখান থেকে আজ বিশ্বকাপের মঞ্চে সেমিফাইনালে খেলা। তার থেকেও বড় কথা টুর্নামেন্টে খেতাব জয়ের অন্য়তম দাবিদার ২ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে হারানো, তাও আবার হেলায়। এগুলোই তো প্রাপ্তি। এই ছোট ছোট হার্ডল টপকে রশিদরা আজ সেমিতে খেলেছে। ওঁরা হেরেছে, কিন্তু ওঁরা শিখেছে, ওঁরা বিশ্বমঞ্চে নিজেদের উপস্থিতির প্রমাণ দিয়েছে। যা আগামীতে আফগানিস্তান ক্রিকেটকে আরও অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। 


আরও পড়ুন: যে কোনও দলকে হারাতে পারি, এই বিশ্বাস জন্মেছে, পরের বার আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরব: রশিদ