সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ঠিক যেন জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের সেই মুখে মুখে ফেরা লাইনের মতো জীবন ছিল। খেলাধুলোয় চৌখস। পড়াশোনাতেও দারুণ।

Continues below advertisement

উদ্দালক আমেদ (Uddalok Ahmed)। ক্রিকেট মাঠের অলরাউন্ডার। পড়াশোনাতেও দুর্দান্ত। কিন্তু মাত্র ১৯ বছর বয়সে নিভে গেল জীবনের প্রদীপ। আচমকা প্রয়াত হলেন বাংলার প্রতিভাবান ক্রিকেটার। শোকের ছায়া ময়দানে।

অনূর্ধ্ব ১৮ পর্যায়ে ও পরে ওয়াইএমসিএ-র হয়ে সিএবি পরিচালিত ক্লাব ক্রিকেট খেলেছেন উদ্দালক। স্থানীয় ক্রিকেটে পরিচিত নাম ছিলেন। অলরাউন্ডার হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু অকালেই থেমে গেল সফর।

Continues below advertisement

উদ্দালকের ক্রিকেটীয় গুরু ছিলেন শিবশঙ্কর পাল। বাংলার প্রাক্তন ফাস্টবোলার এখন কোচ। বাংলা দলের সঙ্গে রবিবার দুপুরে হায়দরাবাদে পৌঁছেছেন সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-২০ টুর্নামেন্টের জন্য। নিজামের শহরে পা রেখেই ছাত্রের মৃত্যুর দুঃসংবাদ পান তিনি। মর্মাহত ময়দানের ম্যাকো। হায়দরাবাদ থেকে ফোনে বললেন, 'উদ্দালকের পড়াশোনার রেকর্ডও ঈর্ষণীয়। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রায় ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। ক্রিকেট মাঠেও নজর কাড়ছিল। আমার বাঘা যতীন অ্যাকাডেমিতে, পরে পাটুলিতে আমার কাছে প্র্যাক্টিস করেছে। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। কলকাতার কসবায় বাড়ি। বাবা কলেজের অধ্যাপক। মা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। এর চেয়ে খারাপ খবর হতে পারে না।'

কী হয়েছিল উদ্দালকের ? বছর খানেক আগে ক্রিকেট খেলতে খেলতেই মাথায়, পায়ে, হাঁটুতে ব্যথা হতো । বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন । ক্রিকেট খেলাও সেই থেকে বন্ধ । চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তাঁর মাথার স্ক্যান করে দেখা যায়, ব্রেন টিউমার হয়েছে। এবং সেটি ম্যালিগন্যান্ট। ক্যান্সারের একেবারে শেষ পর্ব ।

চিকিৎসায় কিছু হবে না জেনেও চেষ্টার কসুর করেননি উদ্দালকের বাবা-মা । কেমোথেরাপি দেওয়া হয় । তারপর মুম্বইয়ের টাটা মেডিক্যাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই জীবন যুদ্ধে হার মানলেন উদ্দালক । চিকিৎসকদের সমস্ত প্রয়াস ব্যর্থ হয়ে গেল। রবিবারই থেমে গেল উদ্দালকের লড়াই। বাংলা হারাল এক প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটারকে ।       

উদ্দালকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া ময়দানে । শোকস্তব্ধ তাঁর কোচ শিবশঙ্করও । বলছিলেন, 'সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-২০ শুরুর ঠিক আগে এত খারাপ খবর আসবে, ভাবতে পারিনি । কীভাবে ওর বাবা-মাকে সান্ত্বনা দেব জানি না ।' মর্মাহত ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত বাংলার প্রত্যেকে ।