লন্ডন: টেস্ট সিরিজে প্রথম দুটো টেস্টে ব্যাট হাতে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। তবে যে ৩৪ বছরের ইংল্যান্ড ব্যাটার জ্বলে উঠলেন হোম অফ ক্রিকেটে। টেস্টে নিজের ২৮৪ তম ইনিংসে এসে সচিন তেন্ডুলকরের পরে টেস্টে দ্বিতীয় সর্বাধিক অর্ধশতরানের মালিক হয়ে উঠেছেন জো রুট। 

২৪ বছরের কেরিয়ারে সচিন ২০০ টেস্ট খেলেছিলেন। ৫১টি সেঞ্চুরি ও ৬৮টি অর্ধশতরান হাঁকিয়েছেন নিজের কেরিয়ারে। অন্য়দিকে জো রুট লর্ডসে ভারতের বিরুদ্ধে অর্ধশতরান হাঁকানোর ফলে নিজের টেস্ট কেরিয়ারে ৬৭টি অর্ধশতরান হাঁকিয়ে ফেলেছেন। তিনি এক্ষেত্রে টপকে গেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দ্রপলকে। যিনি তাঁর ১৬৪ টেস্টের কেরিয়ারে ৬৬টি অর্ধশতরান হাঁকিয়েছেন। 

লিডসে প্রথম টেস্টে অপরাজিত অর্ধশতরান হাঁকিয়েছিলেন। ৫৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এছাড়া বৃহস্পতিবার পঞ্চাশ রানের গণ্ডি পেরিয়েছিলেন ৪৬ ওভারে। নীতীশ কুমার রেড্ডিকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন। 

২০১২ সালে ৩১ ডিসেম্বরে এই ভারতের বিরুদ্ধেই বিদর্ভে টেস্টে অভিষেক হয় জো রুটের। ভারতের বিরুদ্ধে ১৩টি অর্ধশতরান হাঁকিয়েছেন। ভারতের বিরুদ্ধে অবশ্য টেস্টে সবচেয়ে বেশি অর্ধশতরান হাঁকিয়েছেন পাকিস্তানের জাভেদ মিঁয়াদাদ। টেস্ট ক্রিকেটে জ্যাক কালিস ও রিকি পন্টিং ১০৩ বার পঞ্চাশ বা তার বেশি রান করেছেন। 

ভারতের বিরুদ্ধে টেস্টে তিন হাজার রনও পূরণ করে ফেলেছেন রুট। বিশ্বের প্রথম ব্যাটার হিসেবে লাল বলের ফর্ম্যাটে তিন হাজার রান পূরণ করেছিলেন।

ঘটনাটি ঘটে ইনিংসের ৩১তম ওভারে। বোলার সিরাজকে ফলো থ্রুতে ব্যাটার রুটের কাছে গিয়ে বলতে শোনা যায়, 'রুট বাজ়বল কই, হ্যাঁ? কোথায় বাজ়বল?' আরেকবার তিনি বলেন, 'বাজ়, বাজ়, বাজ়বল। কোথায় বাজ়বল দেখাও।'

তৃতীয় টেস্টে প্রথম দিনে স্বভাববিরুদ্ধ, একেবারে প্রথাগত টেস্ট ক্রিকেট খেললেন ইংল্যান্ড ব্যাটাররা। মাত্র ৩.০২ রান প্রতি ওভারে লর্ডসে প্রথম দিন ৮৩ ওভারে চার উইকেটে ২৫১ রান তোলে। এটা যে একেবারেই বাজ়বলোচিত খেলা নয়, তা বুঝতে খুব একটা বড় বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয় না। ম্যাচের মাঝেই তো একটা সময় ইংল্যান্ড নাগাড়ে ২৮ বলে কোনও রানই করতে পারেনি। এরপরেই ম্যাচের দ্বিতীয় সেশনে জো রুটকে (Joe Root) খোঁচা দিতে দেখা যায় মহম্মদ সিরাজকে।

তবে রুট সিরাজের স্লেজিং সত্ত্বেও নিজের মাথা ঠান্ডা রেখেই কিন্তু নিজের খেলা চালিয়ে যান। গোটা দিনজুড়ে তিনি ব্যাট করে যান এবং দিনশেষে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন। দিনশেষে রুট ৯৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন। ৯৯ রান করতে তিনি ১৯১ বল খেলেন, স্ট্রাইক রেট মোটে ৫১.৮৩। এমনকী ইংল্যান্ডের হয়ে এই ম্য়াচে সর্বাধিক স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা বেন ডাকেটের স্ট্রাইক রেটও মাত্র ৫৭.৫০ ছিল। অর্থাৎ গোটা দিনটায় ইংল্যান্ড ক্ষুরধার ভারতীয় বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে যে একেবারেই অবাজ়বলোচিত ক্রিকেটটা খেলেছে, তা একেবারে স্পষ্ট।