ঢাকা: তিন উইকেটে বাংলাদেশকে হারিয়ে ২-০ টেস্ট সিরিজে জিতে নিয়েছে কেএল রাহুলের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। তবে মীরপুরে আয়োজিত দ্বিতীয় টেস্টের শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছে ওপার বাংলার দল। যদিও শেষমেস রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও শ্রেয়স আইয়ারের অপরাজিত ৭১ রানের পার্টনারশিপে ভর করেই ম্যাচ (IND vs BAN 2nd Test) ও সিরিজ জিতে নেয় ভারতীয় দল। সিরিজ হারলেও টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে দলের পারফরম্যান্সে কিন্তু খুশি বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan)।


আর একটা উইকেট


দ্বিতীয় টেস্টের রোমহর্ষক চতুর্থ দিনে শাকিব ও মেহেদি হাসান মিরাজের দুরন্ত বোলিংয়ের সুবাদে একসময় ১৪৫ রান তাড়া করতে ৭৪ রানে সাত উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ভারতীয় দল। তবে অশ্বিন-শ্রেয়সের প্রতিআক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়েই ভারত ম্যাচ জিতে নেয়। বাংলাদেশ যদি এই পার্টনারশিপটা ভাঙতে পারত তাহলে ম্যাচের ফলাফল ভিন্ন হলেও, হতে পারত বলে মনে করছেন শাকিব। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, 'আমরা এই মাঠে বরাবরই ভাল খেলি। তবে চাপের মুখে অশ্বিন ও শ্রেয়স দারুণ খেলেছে। আমাদের আর একটা উইকেটের প্রয়োজন ছিল। আমরা অনেক যদি, কিন্তু নিয়েই এখন কথা বলতে পারি, তবে দিনের শেষে আমরা যেভাবে লড়াই করেছি, তাতে আমি খুশি।'


প্রথম টেস্ট ম্য়াচে চোটের কারণে তেমন বল করতে পারেননি শাকিব। এই টেস্টেও তিনি বোলিং করবেন কি না, সেই নিয়ে সংশয় ছিলই। শাকিব ম্যাচে বল তো করেনই, পাশাপাশি ছয়টি উইকেটও নেন। নিজের পারফরম্যান্স সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমি প্রথম টেস্টে একদমই ভাল বল করতে পারিনি। তবে এই ম্যাচে ভাল পারফর্ম করায় খুশি। এই দলের খেলোয়াড়দের মানসিকতাই আমাকে সন্তুষ্ট করছে। আশা করছি পরের বছরের ম্যাচগুলিতে আমরা ভাল ফল করব।'


চতুর্থ দিনের বিবরণ


তৃতীয় দিনের খেলা শেষে ভারতের স্কোর ছিল চার উইকেটের বিনিময়ে ৪৫ রান। বিরাট কোহলি (১), কেএল রাহুল (২), চেতেশ্বর পূজারারা (৬) ব্যাট হাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হন। ভারতের হয়ে অক্ষর পটেল ও নাইট ওয়াচম্যান জয়দেব উনাদকাট ক্রিজে ছিলেন। বাংলাদেশ সহ-অধিনায়ক লিটন দাস দিনের খেলা শেষে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, চতুর্থ দিনের সকালে দ্রুত উইকেট তুলতে পারলেই বাংলাদেশের পক্ষে ম্যাচ জেতাটা একেবারেই কঠিন নয়। ওপার বাংলার দল নিজেদের লক্ষ্যে সফলও হন। উনাদকাটকে ১৩ রানে ফিরিয়ে ভারতকে প্রথম ধাক্কাটি দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান।


ওয়ান ডে সিরিজে ভারতকে হারানোর পিছনে মেহেদি হাসান মিরাজের সবথেকে বড় ভূমিকা ছিল। তিনি ফের একবার বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতার বড় সুযোগ করে দেন। পরপর দুই ওভারে ঋষভ পন্থ (৯) ও সেট অক্ষরকে (৩৪) সাজঘরে ফেরত পাঠান মিরাজই। ৭৪ রানে সাত উইকেট হারিয়ে কার্যত ধুঁকছিল টিম ইন্ডিয়া। এই সময়ই ইনিংসের হাল ধরেন শ্রেয়স আইয়ার ও অশ্বিন। প্রথমে বাংলাদেশি স্পিনারদের জমাটি ডিফেন্স দিয়ে কিছুটা থামান, তারপরেই প্রতিআক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দুইজনে মিলে ভারতের জয় সুনিশ্চিত করেন।


চাপের মুখেই মিরাজ ও শাকিবের বিরুদ্ধে আক্রমণের শুরুটা করেন শ্রেয়সই। এরপরে ফাস্ট বোলিংয়ের বিরুদ্ধে অশ্বিনও ব্যাট চালাতে শুরু করেন। মুহূর্তের মধ্য়েই হু হু করে জয়ের জন্য রানের ব্যবধান কমে আসে। অশ্বিন ও শ্রেয়স ভারতের জয় সুনিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন। দুইজনে মিলে অষ্টম উইকেটে অপরাজিত ৭১ রান যোগ করেন। মেহেদি হাসান মিরাজ পাঁচ উইকেট নিলেও বাংলাদেশকে শেষমেশ হারতেই হল। দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ জিতল টিম ইন্ডিয়া।


আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে হারিয়েও শাকিবদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অশ্বিন