ম্যাঞ্চেস্টার: তৃতীয় টেস্টে মন্থর গতির ওভাররেটের জন্য শাস্তি পেয়েছিল ইংল্যান্ড। ওল্ড ট্রাফোর্ডে চতুর্থ টেস্টের (IND vs ENG 4th Test) প্রথম দিনও তাঁরা নির্ধারিত ৯০ ওভারের বেশ অনেকটাই কম বল করল। মাত্র ৮৩ ওভারের খেলা হল গোটা দিন। চার উইকেটের বিনিময়ে ২৬৪ রানে দিনশেষ করল ভারতীয় দল। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে আপাতত ক্রিজে দুই অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর ও রবীন্দ্র জাডেজা উপস্থিত রয়েছেন। উভয়েরই সংগ্রহ ১৯ রান।
দিনের শেষ সেশনে ৩১ ওভারে ভারতীয় দল ১১৫ রান যোগ করল। এই সেশনে কেবল সাই সুদর্শনেরই উইকেট হারায় ভারত। তবে সেট ব্যাটার ঋষভ পন্থও এই সেশনে চোট পেয়ে ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে মাঠ ছাড়েন যা টিম ইন্ডিয়ার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। দ্বিতীয় সেশনে ইংল্যান্ড দুরন্তভাবে ম্যাচে ফেরার পর শেষ সেশনে দরকার ছিল পাল্টা লড়াইয়ের। ভারতের হয়ে ঠিক সেটাই করেন সুদর্শন ও পন্থ। দুইজনে মিলে চতুর্থ উইকেটে অর্ধশতরান যোগ করে ফেলেছিলেন। দলও দুইশো রানের গণ্ডি পার করেছিল।
সুদর্শন সেট হয়ে দেখেশুনেই এগোচ্ছিলেন। পন্থও নিজের মেজাজে ব্যাট করছিলেন। কিন্তু তখনই বিপদ। ওকসকে রিভার্স স্যুইপ মারতে গিয়ে পন্থের ডান পায়ের পাতায় বল লাগে। ব্যথায় কাতর পন্থ ৩৭ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হতে বাধ্য হন। সাই ১৩৪ বলে প্রচন্ড ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে নিজের টেস্ট কেরিয়ারের প্রথম অর্ধশতরান পূরণ করেন। তবে বেন স্টোকসের বলে পুল মারতে গিয়েই তিনি ৬১ রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর অবশ্য শার্দুল ও জাডেজা বেশ ভাল ব্যাটিং করে দলের হয়ে আর কোনও উইকেট পড়তে দেননি।
এর আগে প্রথম সেশনে টস হেরে ব্যাটিং করতে নামে ভারতীয় দল। একাদশে তিনটি বদল ঘটায় টিম ইন্ডিয়া। করুণ নায়ারের বলে সাই সুদর্শনকে দলে সুযোগ দেওয়া হয়। বোলিং সহায়ক পরিবেশে ভারতীয় দলের দুই ওপেনার কেএল রাহুল ও যশস্বী জয়সওয়াল প্রথম সেশনে দুরন্ত পরিপক্কতার সঙ্গে ব্যাটিং করেন। চতুর্থ টেস্টের প্রথম সেশনে ইংল্যান্ড বোলাররা ভারতীয় দলের কোনও উইকেটই ফেলতে পারেননি। দুই ওপেনার যশস্বী ৩৬ ও রাহুল ৪০ রানে অপরাজিত থেকেই সাজঘরে ফেরেন। ২৬ ওভারে তিন রান প্রতি ওভার গড়ে সেশনে মোট ৭৮ রান তোলে ভারতীয় দল।
তবে পরের সেশনে তিন উইকেট নিয়ে দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। লাঞ্চের পরপরই প্রথমে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে অর্ধশতরানের দোরগোড়ায় সাজঘরে ফেরেন রাহুল। ৪৬ রানে তাঁকে ফেরান ক্রিস ওকস। তাঁর ওপেনিং পার্টনার যশস্বী অবশ্য অর্ধশতরান পূরণ করেন। কিন্তু তারপর তিনিও বেশিদূর এগোতে পারেননি। প্রত্যাবর্তন ঘটানো লিয়াম ডসনের সপ্তম বলেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ৫৮ রানে ফেরেন তিনি।
এরপর সিরিজ়ে অনবদ্য ছন্দে থাকা শুভমন গিল ব্যাটে নামেন। তিনি শুরুটা মন্দ করেননি। তবে বেন স্টোকসের একটি বল একেবারে ভুল জাজমেন্ট করেন গিল। বল ছাড়তে যান। তবে সেই বল সোজা এসে গিলের প্যাডে লাগে। তাঁকে ১২ রানে সাজঘরে ফিরতে হয়। বাকি সময়টা খুব দেখেশুনে ভারতীয় দল যাতে আর কোনও উইকেট না হারায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বেশ দেখেশুনে বাকি সময়টা খেলেন সাই সুদর্শন ও ঋষভ পন্থ। ওই সেশনে সুদর্শনের ক্যাচও পড়ে। ২০ রানে জীবনদান পেয়ে অর্ধশতরান করে সেই সুযোগ কাজে লাগান তিনি। তবে শতরান হল।
প্রথম দিনের খেলা শেষে ম্যাচ আপাতত একেবারে ৫০-৫০। কাল প্রথম সেশন কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।