লন্ডন: ওভালে পঞ্চম টেস্টে (IND vs ENG 5th Test) জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট, ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার যেমনভাবে শুরুটা করেছিলেন, তাতে ভারতীয় সমর্থকদের উদ্বেগ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। বিনা উইকেটেই ইংল্যান্ড যখন শতরানের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল, তখন হয়তোই কেউ ভেবেছিলেন যে ইংল্যান্ড ২৫০ রানের গণ্ডিও পার করতে পারবে না। তবে তেমনটাই হল। ২৪৭ রানে অল আউট হয়ে গেল ইংল্যান্ড। চারটি করে উইকেট নিলেন মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj) ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ (Prasidh Krishna)।

দিনের প্রথম সেশনটা একেবারেই ভারতের বিপক্ষে গিয়েছিল। তবে দ্বিতীয় সেশনেই ম্যাচে দুরন্তভাবে ফেরে ভারতীয় দল। ছয় উইকেট তুলে নেয় ভারতীয় দল। তৃতীয় সেশনে ইংল্যান্ডের শেষ ভরসা ছিলেন হ্যারি ব্রুক। তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য ক্রিজে উপস্থিত ছিলেন গাস অ্যাটকিনসন। তাঁরা মিলে ইংল্যান্ডকে প্রথম ইনিংসে লিড নিতেও সাহায্য করেন। নিজের ব্যাটিং দক্ষতায় ব্রুককে ভরসা জোগাচ্ছিলেন অ্যাটকিনসন। তবে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের শর্ট লংথের বলে বড় শট মারতে গিয়েই মিড অনে ধরা দেন অ্যাটকিনসন।

জশ টাঙ এরপর ব্যাটে নামেন। তিনি ব্রুককে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করেন। বেশ জমাটি কয়েকটি রক্ষণাত্মক শট খেলেন টাঙ। তাঁর সহায়তা পেয়ে ব্রুকও এগিয়ে যান। তিনি বেশ নজরকাড়া এক অর্ধশতরান পূরণ করেন বটে, তবে তারপর আর বেশিদূর এগোতে পারেননি। ৫৩ রানে সিরাজের বলে বোল্ড হন তিনি। চোটের কবলে পড়া ক্রিস ওকস এই ম্যাচে আর খেলতে পারবেন না বলে ইংল্যান্ড বোর্ডের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল। তাই ব্রুক আউট হতেই ইংল্যান্ডের ইনিংসও শেষ হয়ে যায়। 

এর আগে প্রথম দুই সেশনে প্রথম সেশনে ডাকেট ও জ্যাক ক্রলির দাপুটে ব্যাটিংয়ের পর ইংল্যান্ডের এমন অবস্থা হবে, তা হয়তোই কেউ ভেবেছিলেন। তবে লাঞ্চের পরপরই অর্ধশতরান হাঁকানো ক্রলিকে ৬৪ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফেরানোর সফরটা শুরু করেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। অপরপ্রান্ত থেকে সিরাজ ইংল্যান্ডের স্ট্যান্ড ইন অধিনায়ক অলি পোপকে ২২ রানে আউট করেন। তবে ক্রিজে তখনও ভারতের সম্ভবত সবথেকে বড় কাঁটা জো রুট উপস্থিত ছিলেন। ইংল্যান্ড তারকাকেও কিন্তু সিরাজই সাজঘরে ফেরান। তাঁর উইকেটটা যেন পোপের উইকেটের একেবারে কার্বন কপি। উভয় ব্যাটারই সিরাজের ইনস্যুইংয়ে এলবিডব্লু হন।

আট ওভারের এক স্মরণীয় স্পেলে এরপর সিরাজের পরবর্তী শিকার ছিলেন জেকব বেথেল। তিনিও ঘটনাক্রমে এলবিডব্লুই হন। দু'শোর গণ্ডি পার করার আগে পঞ্চম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এখনও কিন্তু ভারতীয় দলের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সাত নম্বরে ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যাটে নামেন আরেক আগ্রাসী ইনফর্ম ব্যাটার জেমি স্মিথ। তিনি আগ্রাসী মেজাজেই ব্যাট করার প্রচেষ্টায় ছিলেন। সিরাজের লম্বা স্পেলের পর তাঁর এন্ড থেকে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ ইংল্যান্ডের ওপর চাপ বজায় রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনেকেই সংশয়ে ছিলেন। 

কৃষ্ণ শুধু চাপ বজায় রাখলেন না, চা বিরতির আগে শেষ ওভারে জোড়া সাফল্যও পেলেন তিনি। কাট মারতে গিয়ে স্লিপে রাহুলের হাতে ধরা দেন স্মিথ। এরপর আরেক জেমিকেও ফেরান তিনি। ওভারটন খাতা খোলার আগেই আউট হন। এই উইকেটের সঙ্গে সঙ্গেই দ্বিতীয় সেশন সমাপ্ত হয়। তৃতীয় সেশনে ইংল্যান্ড ইনিংস গুটিয়ে ফেলতে কিন্তু বেশি সময় নিল না ভারতীয় দল।