বিশাখাপত্তনম: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম দুই ম্য়াচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। তৃতীয় ম্যাচটি ছিল তাঁর পয়মন্ত বিশাখাপত্তনমে। সেখানে কিন্তু বিরাট কোহলি সুযোগ হাতছাড়া করলেন না। ৪৫ বলে ফের একবার দুরন্ত এক ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন বিরাট কোহলি।
প্রথম দুই ম্যাচের মতো তৃতীয় ম্যাচেও কোহলি অনবদ্য ছন্দে ছিলেন। রোহিতের অর্ধশতরান এবং যশস্বী জয়ওয়ালের সেঞ্চুরির পর কোহলির অর্ধশতরানে ভারতীয় দল ৬১ বল বাকি থাকতেই নয় উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়। এরপরেই অর্শদীপ সিংহকে কোহলিকে বলতে শোনা যায়, 'পাজি রানটাই কম ছিল, নয়তো সেঞ্চুরি আজ পাকা ছিল।' কোহলি মজার ছলে বলেন, 'টস জিতে গিয়েছি, নয়তো তোরও (বলে শতরান) পাকা ছিল আজ।'
কোহলি এবং অর্শদীপের এই মজাদার কথোপকথনের ভিডিওই সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলের মন জিতে নিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাত্র ৪০ বলে অর্ধশতরান করলেন তিনি, ৪৫ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত রইলেন তিনি। তিন ম্যাচে মোট ৩০২ রান করে সিরিজ় সেরা হলেন 'কিং'। এই নিয়ে ২০ নম্বর বার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সিরিজ় সেরা হলেন কোহলি। সচিনকে পিছনে ফেলে এই তালিকায় সর্বকালীন রেকর্ডের মালিক হয়ে গেলেন তিনি। বিশাখাপত্তনমে এই নিয়ে অষ্টম ইনিংসে তৃতীয় অর্ধশতরানও এল তাঁর ব্যাট থেকে। এই মাঠেই তিনটি শতরানসহ তিনি মোট ৬৫২ রান করেছেন, ১০৮-র অধিক গড় এবং ১০৩.৪৯ স্ট্রাইক রেটে। এত গড়ে কোনও মাঠে এর থেকে অধিক রান করার কৃতিত্ব আর কোনও ব্যাটারের নেই।
সব মিলিয়ে বলা চলা এই সিরিজ় কোহলির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিয়ে গেল। কিন্তু কোহলি নিজে কী বলছেন? ম্যাচ শেষে সিরিজ়সেরার পুরস্কার নিতে এসে বিরাটকে বলতে শোনা যায়, 'সত্যি বলতে এই সিরিজ়ে আমি যেভাবে ব্যাটিং করেছি, এটাই আমার জন্য সবথেকে বেশি সন্তুোষের। বিগত দুই, তিন বছরে এই ধরনের ক্রিকেট খেলেছি বলে আমার মনে হয় না। আমার খেলাটা একেবারে ঠিকঠাক হচ্ছে। এই ফর্মটা ধরে রাখারই তো সবসময় চেষ্টা করে এসেছি আমি। চেষ্টা করেছি যাতে নিজের তৈরি করা স্তরটা ধরে রাখি এবং দলের হয়ে ম্য়াচে প্রভাব ফেলতে পারি। আমি মাঠে এমন ব্যাট করতে পারলে তো তাতে দলেরই লাভ হয়। আমার এটুকু আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে মাঠে যেমনই পরিস্থিতি হোক না কেন, যতই চাপ থাকুক না কেন, আমি সেটা সামলে নিতে পারব।'
তবে কোহলি একথা খোলাখুলি মেনে নেন যে তিনি স্বয়ং অনেক সময়ই তাঁর আত্মবিশ্বাস টলেছে, তিনি নিজেকে প্রশ্নও করেছেন। 'ব্যাটারদের জন্য একটা ভুলই যথেষ্ট। তাই যখন নিজের দক্ষতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়, তখন চাপ বাড়ে। তবে বিশেষ করে ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের এই ভয়টাই তো জয় করতে হয়। এটা একটা লম্বা সফর যেখানে নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হয়। আমি জানি যে কোন সময় আমার নেতিবাচক চিন্তাভাবনা শুরু হয় যেখানে আমি নিজের ওপরেই আস্থা রাখতে পারি না। তবে এগুলি জানলে ধীরে ধীরে মানুষ হিসাবেও উন্নতি করা যায়। হ্যাঁ, আমি বহুবার আত্মবিশ্বাস হারিয়েছি আর সেটা স্বীকারও করেছি। কিন্তু এত লম্বা একটা সফরে এমন তো সব মানুষেরই হয়। দলের জয়ে অবদান রাখতে পারছি, এতেই আমি খুশি।' জানান কোহলি।