সন্দীপ সরকার, কলকাতা: মঙ্গলবার ঘড়ির কাঁটায় তখন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। সবেমাত্র নেট প্র্যাক্টিস শেষ হয়েছে ভারতীয় দলের (India vs England)। সূর্যকুমার যাদব-হার্দিক পাণ্ড্যরা ড্রেসিংরুমে সেরে নিচ্ছেন জরুরি টিম মিটিং।
ঠিক তখনই ইডেন গার্ডেন্সের মাঠকর্মীদের দেখা গেল সাদা কভার টেনে মাঠ ঢেকে দিচ্ছেন। শুধু পিচ বা বোলারদের রান আপের জায়গা নয়, পুরো মাঠ। মিনিট বিশেকের মধ্যে পুরো ইডেন চলে গেল প্লাস্টিকের কভারের নীচে।
এই দৃশ্য সাধারণত দেখা যায় আইপিএলের সময়। যখন যে কোনও মুহূর্তে কালবৈশাখী নেমে ম্যাচ লণ্ডভণ্ড করে দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ম্যাচের আগে পুরো মাঠ ঢেকে রাখা হয়। বৃষ্টি থামলেই যাতে খেলা শুরু করে দেওয়া যায়।
অনেক সময় আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগেও এই ছবি দেখা যায়। যখন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকে। কিউরেটর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে মাঠ ঢেকে রাখেন।
কিন্তু তাই বলে শেষ জানুয়ারিতে গোটা ইডেন ঢেকে দেওয়া হচ্ছে প্লাস্টিকের চাদরে? তাও বৃষ্টি বা কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস না থাকা সত্ত্বেও? বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা এই দৃশ্য কোনও দিন দেখেছেন কি না, মনে করতে পারছেন না।
কেন এই অভিনব কাণ্ডকারখানা? খোলসা করলেন ইডেনের কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়। যিনি বোর্ডের পিট কমিটির সদস্যও। এবিপি আনন্দকে সুজন বললেন, 'প্রচণ্ড শিশির পড়ছে। মাঠ ভিজে যাচ্ছে। সেই কারণেই সতর্কতা হিসাবে এই পরিকল্পনা। তবে ওয়ান ডে বিশ্বকাপের সময়ও এটা করেছি।'
জানুয়ারি মাসে গোটা ভারত জুড়েই সন্ধ্যার পর আকাশ থেকে নেমে আসে শিশির বিন্দু। পূর্ব ভারতে যার প্রভাব আরও বেশি। মঙ্গলবার মাঠ ঢেকে দেওয়ার পর কভারের ওপরই জমে গেল শিশিরভেজা জল। যা দেখে উদ্বিগ্ন সুজন। বললেন, 'আজ ভীষণ শিশির পড়ছে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি কাল যেন এত শিশির না পড়ে। কারণ এত শিশির পড়লে দ্বিতীয়ার্ধে খুব সমস্যায় পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে টস ফ্যাক্টর হবে। পরে বোলিং করা দলের সমস্যা হতে পারে।'
শিশিরের সঙ্গে মোকাবিলার রাস্তাও ভেবে রেখেছেন সুজন। বলছিলেন, 'বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় ম্যাচ শুরু। তার তিন ঘণ্টা আগে, বিকেল চারটেও শিশির নিরোধক কেমিক্যাল স্প্রে করা হবে। গোটা ম্যাচেই তার কার্যকারিতা থাকবে। পাশাপাশি আম্পায়ারদের বলে রেখেছি, আমাদের ৩০ জন মাঠকর্মী প্রস্তুত থাকবে। ম্যাচ চলাকালীন যতবার খুশি আম্পায়ার ডাকলেই দড়ি নিয়ে দৌড়ে মাঠ মুছে ফেলা হবে।' যোগ করলেন, 'উইকেট দেখে দু'দলই খুশি। ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম তো আমার সঙ্গে একটা ব্যাপারে সহমত। এই পিচে টি-২০ ম্যাচে আড়াইশো রান উঠতে পারে।'
আরও পড়ুন: ইডেনে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আগে কালীঘাটে পুজো দিয়ে এলেনে গুরু গম্ভীর