বার্মিংহ্যাম: বিহার থেকে বাংলা হয়ে বার্মিংহ্যাম। প্রথমবার এজবাস্টনে টেস্ট জয়ের যে ইতিহাস গড়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল, তার অন্যতম কারিগর আকাশ দীপ। গত বছর জাতীয় দলের জার্সিতে টেস্টে অভিষেক। কিন্তু ধারাবাহিক সুযোগ আসছিল না। নিজেও সেভাবে মেলে উঠতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডে দ্বিতীয় টেস্টে এবার সুযোগ চলে এলে বুমরা বিশ্রাম নেওয়ায়। আর সেই সুযোগ লুফে নিলেন বাংলার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা আকাশ দীপ। প্রথম ইনিংসে চার উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে তুলে নিলেন ছয় উইকেট। মোট ১০ উইকেট। চেতন শর্মার পর দ্বিতীয় ভারতীয় পেসার আকাশ দীপ, যিনি ইংল্য়ান্ডের মাটিতে এক ম্য়াচে ১০ উইকেট নেওয়ার নজির গড়লেন। 

ইংল্য়ান্ডের মাটিতে ভারতীয় বোলারদের সেরা পারফরম্য়ান্স

আকাশ দীপ: ১৮৭/১০ (বার্মিংহ্যাম, ২০২৫)

চেতন শর্মা: ১৮৮/১০ (বার্মিংহ্যাম, ১৯৮৬)

জসপ্রীত বুমরা: ১১০/৯ (নটিংহ্য়াম, ২০২১)

জাহির খান: ১৩৪/৯ (নটিংহ্যাম, ২০০৭)

ভগবত চন্দ্রশেখর: ১১৪/৮ (দ্য ওভাল, ১৯৭১)

এছাড়াও আরও একটি রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন ২৮ বছরের ডানহাতি পেসার। এমন এক রেকর্ড যা গত ৪৯ বছরে কেউ গড়তে পারেননি। হ্যারি ব্রুককে লেগবিফোর করার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ দীপ ১৯৭৬ সালের পর প্রথম বোলার হন যিনি ইংল্য়ান্ডে টপ অর্ডারের প্রথম চার ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখালেন। শেষবার ১৯৭৬ সালে মাইকেল হোল্ডিং এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। 

মাঠে যখন দাপট দেখাচ্ছেন আকাশ, তখন বিহারে বাড়িতে তাঁর দিদি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছেন। আকাশ এই জয় ও তাঁর পারফরম্য়ান্স দিদিকেই উৎসর্গ করছেন। ম্য়াচের পর চেতেশ্বর পূজারার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আকাশ বলেন, ''আমি এই মুহূর্তে বার্মিংহ্যাম ম্য়াচে জয়ের আনন্দই উদযাপন করতে চাই। আগামী নিয়ে বেশি ভাবতে চাই না। তবে আমার মাথায় ছিল দিদির কথা। আমি যতবার বল করছিলাম আমার দিদির মুখটা ভাসছিল। ও ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছে। দিদি আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে বরাবর। আমি জানি যে দিদি আমার পারফরম্যান্স দেখে খুব খুশি হবেন। আমি এটাই বলব যে দিদি তোমার সঙ্গে আমরা সবাই আছি। খুব দ্রুত তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে।''

বুমরা না খেলায় সুযোগ চলে এসেছিল। আগামী টেস্ট ১০ তারিখ থেকে লর্ডসে। আদৌ আকাশ জানেন না যে তিনি সেই টেস্টে সুযোগ পাবেন কি না, কারণ বুমরা ফিরছেন নিশ্চিত। তবে যা পারফর্ম করলেন বার্মিংহ্যামে, এরপর আকাশকে বসানোর সাহস দেখাবে না টিম ম্য়ানেজমেন্ট।