ওভাল: তিনি একজন পেস বোলার। টানা পাঁচ টেস্টে খেলেছেন। কোনও ওয়ার্কলোডের অজুহাত নেই। উল্টো ওভালে শেষ টেস্টের শেষ দিনেও ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগে বল করেছিলেন। গোটা সিরিজে সবচেয়ে বেশি ওভার বল করেছিলেন ডানহাতি ভারতীয় পেসার। বিশেষ করে ওয়ার্কলোডের জন্য বুমরাকে ২ ম্য়াচ বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিরাজ কিন্তু কোনও বিশ্রাম নেননি। এবার কিংবদন্তি সুনীল গাওস্কর ভারতীয় দলের ওয়ার্কলোড ম্য়ানেজমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ওভালে ভারতের ঐতিহাসিক জয়ের পর গাওস্কর বলছেন, ''মহম্মদ সিরাজ ওয়ার্কলোড ইস্যুটাকে পাত্তাই দেয়নি একেবারে। আমি আশা করি যে ভারতীয় ক্রিকেটের ডিকশনারি থেকে ওয়ার্কলোড শব্দটি বাদ পড়ে যাবে। ৫টি টেস্ট ম্য়াচেও সিরাজ প্রত্যেক ম্য়াচেই ৭-৮ ওভারের স্পেল করে গিয়েছে। কারণ ক্যাপ্টেন তাঁর বোলারের থেকে এমনই দায়বদ্ধতা আশা রাখে।''
গাওস্কর আরও বলেন, ''ওয়ার্কলোড বিষয়টা পুরোটাই মানসিক। এটা কোনওভাবেই শারীরিক নয়। তুমি যদি মনে করো যে প্রতিপক্ষের কাছে নতি স্বীকার করে নেবে, তখনই কিন্তু ওয়ার্কলোডের চাপ অনুভব হবে আরও।''
সিরিজ শুরুর আগেই বলে দেওয়া হয়েছিল যে জসপ্রীত বুমরাকে গোটা সিরিজের সব ম্য়াচে খেলানো সম্ভব হবে না। তাঁকে গত সিরিজে তিনটি ম্য়াচে খেলানো হয়েছিল। তার মধ্য়ে দুটো টেস্ট হেরেছে ভারত। একটি ম্য়াচ ড্র করেছে। এজবাস্টন ও ওভালে ভারত জিতেছে। আর এই দুটো টেস্টে বুমরা খেলেননি। ইংল্য়ান্ডের জোফ্রা আর্চারকেও ওয়ার্কলোড ইস্যুর জন্য সিরিজের সব ম্য়াচে খেলানো হয়নি।
মহম্মদ সিরাজ ওভাল টেস্টের দুই ইনিংসে যথাক্রমে চার ও পাঁচটি উইকেট নেন। তিনিই প্রথম এশিয়ান বোলার হিসাবে ইংল্যান্ডে সাত দফায় ইনিংসে চার বা তার বেশি উইকেট নিলেন। গোটা টেস্ট সিরিজে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন মহম্মদ সিরাজ। ভারতীয় বোলারদের মধ্য়ে ইংল্যান্ড সফরে যা সর্বাধিক এক সিরিজে। জসপ্রীত বুমরাও এর আগে ২০২১ মরশুমে ইংল্যান্ডে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন টেস্ট সিরিজে। ১৯৯৪ সালে বানজারা হিলসে নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় মহম্মদ সিরাজের। তাঁর বাবা ছিলেন একজন অটো রিক্স ড্রাইভার। তারকা পেসারের মা একটা সময়ে লোকের বাড়িতে কাজ করতেন। অভাবের সংসারে বড় হয়েও কখনও ক্রিকেট খেলার, দেশের হয়ে মাঠে নামার স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেননি সিরাজ। চার্মিনার ক্রিকেট ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন সিরাজ। কিন্তু সেখানে কিটস কেনার সামর্থ্য ছিল না সেই সময়ে। তবুও লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে হায়দরাবাদের অনূর্ধ্ব ২৩ দলের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন। ২০১৭ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার নামেন।