বার্বাডোজ: ঠিক ১৭ বছর আগের কথা। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে এক বিশ্বকাপে তিনিই ছিলেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক। তারকাখচিত দল বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হেরে বিশ্বকাপের গ্রুপ স্টেজ থেকেই বিদায় নিয়েছিল। দেশে প্রবল জনরোষের সামনে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। বাড়িতে কালি লেপে দেওয়া, ঢিল ছোড়া, কুশপুতল পোড়ানো, কতকিছুই না সইতে হয়েছিল। সেই ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জেই যেন শাপমুক্তি ঘটল রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid)। ১৭ বছর পর হাতে এল বিশ্বকাপ ট্রফি।
টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup 2024) মাঝেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন এটাই ভারতীয় কোচ হিসাবে তাঁর শেষ টুর্নামেন্ট হতে চলেছে। তিনি আর কোচের পদের জন্য আবেদন করবেন না। টিম ইন্ডিয়ার কোচ হিসাবে নিজের শেষটা স্বপ্নের মতোই করলেন দ্রাবিড়। জিতলেন বিশ্বকাপ। সাধারনত শান্ত স্বভাবের রাহুল কোনওদিনই বেশি আবেগ প্রকাশ করেন না। কিন্তু তিনিও এবার আর নিজেকে চেপে রাখতে পারলেন না। সকলকে সরিয়ে বিরাট কোহলি কোচ দ্রাবিড়ের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি তুলে দিতেই শূন্যে প্রবল উচ্ছ্বাসের সঙ্গে সেটা তুলে ধরলেন দ্রাবিড়। অনেকটা যেন অভিশপ্তভূমে শাপমোচনের আত্মতুষ্টির উচ্ছ্বাস।
বিগত ১৩ মাসে দুই দুইবার আইসিসি ট্রফি জয়ের কাছে এসেও ম্যাচশেষে খালি হাতেই মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। তবে যে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে চরম হতাশায় অধিনায়ক দ্রাবিড়কে ফিরে যেতে হয়েছিল। সেই দ্বীপপুঞ্জেই পেলেন বিশ্বজয়ের স্বাদ। 'পোয়েটিক জাস্টিস' হয়তো এটাকেই বলে। ট্রফি জয়ের পর গোটা ভারতীয় দল বিশেষ করে রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি, কোচ দ্রাবিড়কে কাঁধে তুলে নেন। তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বাসে ভাসে গোটা টিম ইন্ডিয়া।
রোহিত তো বিশ্বজয়ের পরেই রাহুল দ্রাবিড়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। 'ওঁ বিগত ২০-২৫ বছর ধরে ভারতীয় দলের হয়ে যা করেছে, তারপর বাকি বলতে শুধু এই জয়টাই ছিল। গোটার দলের তরফে আমি বলছি যে ওঁকে এভাবে বিদায় জানাতে পেরে, আমি খুবই খুশি। ওঁর জন্য এটা করতে পারাটা বিশাল আনন্দদায়ক।' বলেন বিশ্বজয়ী ভারতীয় অধিনায়ক। খেলোয়াড় দ্রাবিড় বহুকাল আগেই লিখিয়েছিলেন। বিশ্বজয়ের পর যে এবার কোচ দ্রাবিড়ও ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায় বিশেষ জায়গা করে নিলেন, তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন: ফাইনালের শাপমুক্তি ভারতের, রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে দক্ষিণ