সন্দীপ সরকার, কল্যাণী: কলকাতার সীমানা ছাড়িয়ে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়ক ধরে যত নদিয়ায় দিকে এগনো যায়, সবুজের সমারোহ চোখে পড়ে। বিধাননগরের পর রাজ্যের আরও এক পরিকল্পিত শহরায়ন চোখে পড়ে কল্যাণীতে। নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে বেশ শীতের আমেজ।
আর গঙ্গাপাড়ের সেই শহর থেকেই রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে চাইছে বাংলা শিবির। ইডেনে ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট ম্যাচ চলছিল বলে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলা বনাম অসম ম্যাচ ফেলা হয়েছে কল্যাণীতে বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে। যে মাঠের পিচ বরাবরই জোরে বোলিং সহায়ক হিসাবে পরিচিত। তার ওপরে অসমের বিরুদ্ধে মহম্মদ শামিকে পেয়েছে বাংলা। তাই চার পেসারে অসম বধের পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল।
কল্যাণীর বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে বল হাতে জ্বলে উঠলেন মহম্মদ শামি। নিলেন তিন উইকেট। সেই সঙ্গে তিনটি উইকেট সূরয সিন্ধু জয়সওয়ালের। দুটি উইকেট নিয়েছেন মহম্মদ কাইফ। এক শিকার ঈশান পোড়েলের। বাংলার পেস আক্রমণের সামনে প্রথম ব্যাট করে ২০০ রানে অল আউট হয়ে গেল অসম। ১০টি উইকেটই নিলেন পেসাররা। জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষে বাংলার স্কোর ২৬৭/৪। ৬৭ রানের লিড নিয়েছে বাংলা। হাফসেঞ্চুরি করেছেন অধিনায়ক হিসাবে দলে ফেরা অভিমন্যু ঈশ্বরণ (৬৬), শাকির হাবিব গাঁধী (৫৮)। হাফসেঞ্চুরি করে এখনও ক্রিজে রয়েছেন শাহবাজ আমেদ (৬১ ব্যাটিং)। সঙ্গী সুমন্ত গুপ্ত ২৫ রানে অপরাজিত। ম্যাচের এখনও দুদিন বাকি। এখন থেকেই সরাসরি জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলা শিবির।
ভারতীয় দলে ব্রাত্য। শামি যেন নিজেকে প্রমাণ করার জন্য প্রত্যেক ম্যাচেই মরিয়া। একটা সময় শোনা যাচ্ছিল, ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টের মাঝেই একবার শামির বোলিং দেখার জন্য কল্যাণীতে আসার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর। যদিও, ভারতের টেস্ট ম্যাচ আড়াই দিনে শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি মুম্বইয়ে ফিরে গিয়েছেন বলেই খবর। তবু শামি দুরন্ত বোলিং করলেন। রবিবার, ম্যাচের প্রথম দিনই নিয়েছিলেন দু'উইকেট। সোমবার নিলেন আরও একটি। আগের দিনের ১৯৪/৮ স্কোরের সঙ্গে আর মাত্র ৬ রান যোগ করে সোমবার অল আউট হয়ে গেল অসম।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিনের শেষে ৬৭ ওভারে বাংলার স্কোর ২৬৭/৪। সুদীপ ঘরামি মাত্র ২ রান করে রান আউট হলেও, বাকিরা সকলেই রান পেয়েছেন। অনুষ্টুপ মজুমদার ৪৩ রানে ফেরেন। তাঁর এলবিডব্লিউ নিয়ে বাংলা শিবিরে কারও কারও মনে প্রশ্ন রয়েছে। তবে যে আউট নিয়ে দলের সকলেই ভীষণ বিরক্ত, ক্ষুব্ধ, তিনি হলেন শাকির হাবিব গাঁধী। আকাশ সেনগুপ্তর বলে তাঁর ক্যাচ নেন উইকেটকিপার সুমিত ঘাদিগাওঙ্কর। তবে বাংলা শিবির থেকে বলা হল, বল তাঁর থাইপ্যাডেরও ওপরে লেগেছে। অথচ আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন। অভিমন্যু ঈশ্বরণের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১২২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তখন ক্রিজে জাঁকিয়ে বসেছিলেন শাকির। আউট হয়ে মাঠেই তিনি ইঙ্গিত করে আম্পায়ারকে দেখান যে, বল তাঁর থাইয়ে লেগেছে। যদিও তাতে সিদ্ধান্ত বদলায়নি।
বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন সরাসরি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। বলছেন, 'কাল আমাদের ভাল ব্যাট করতে হবে। কত রানের লিড চাই, এরকম কোনও লক্ষ্য সামনে রাখছি না।'