সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তিনি ২০১৪ সালে সিএবি যুগ্মসচিব হিসাবে ক্রিকেট প্রশাসনে পা রেখেছিলেন। তারপর সিএবি ও পরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডেরও (BCCI) প্রেসিডেন্ট হন। যদিও টানা ছ'বছর ক্রিকেট প্রশাসনে থাকার পর ২০২২ সালের অক্টোবরে তাঁকে বাধ্যতামূলক কুলিং অফে যেতে হয়েছিল। লোঢা কমিটির সুপারিশ মেনে।

ক্রিকেট প্রশাসনে নিজের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে চলেছেন সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। বঙ্গ ক্রিকেটের মসনদে প্রত্যাবর্তন ঘটতে চলেছে মহারাজের। ২২ সেপ্টেম্বর সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভা। রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেল পাঁচটায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ও সময়। সিএবি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিতে চলেছেন সৌরভ। সম্ভবত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিএবি-র মসনদে ফিরতে চলেছেন সৌরভ। কারণ, সিএবি-তে সৌরভ বিরোধী গোষ্ঠী বলে যাঁদের মনে করা হচ্ছিল, তাঁরা প্রার্থী দেওয়া থেকে সম্ভবত বিরত থাকছেন।

ময়দানে অবশ্য প্রবল জল্পনা শুরু হয়েছে, প্রেসিডেন্ট সৌরভের সারথী কারা হবেন, তা নিয়ে। লোঢা কমিটির সুপারিশ মেনে প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি দেশের প্রত্যেকটি ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থায় ভাইস প্রেসিডেন্ট, সচিব, যুগ্ম সচিব, কোষাধ্যক্ষ ও ১৪ জনের অ্যাপেক্স কাউন্সিল গঠন করার নিয়ম রয়েছে। সৌরভ প্রেসিডেন্ট হলে সিএবি-র বাকি চার পদে কারা বসবেন, তা নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে।

বাংলা ক্রিকেট ও সিএবি-র হাল হকিকত জানেন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সিএবি সচিব পদে ফিরতে পারেন ডেফ অ্যান্ড ডাম্ব ক্লাবের প্রতিনিধি বাবলু কোলে। প্রায় দু'দশকেরও বেশি সময় পরে সিএবি-র গুরুত্বপূর্ণ পদে ফিরতে পারেন তিনি। আগেও সিএবি সচিব হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন বাবলু। লোঢা কমিটির সুপারিশ মেনে আরও অন্তত এক বছরের জন্য দায়িত্ব সামলাতে সমস্যা হওয়ার কথা নয় বছর ঊনসত্তরের এই ক্রিকেট কর্তার। এ-ও শোনা গেল যে, বাবলু কোলেকে সচিব করার উদ্যোগ নিয়েছেন সিএবি-র প্রাক্তন দুই কর্তা - বিশ্বরূপ দে ও সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়ও। কেউ কেউ বলছিলেন, জাতীয় ক্রীড়া প্রশাসন আইন কার্যকর হলে অদূর ভবিষ্যতে সিএবি প্রশাসনে ফিরতে পারেন বিশ্বরূপ নিজেও। আপাতত তাই বাবলু কোলেকে সচিব পদে দেখা যেতে পারে।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে স্যর গুরুদাস ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধি নীতীশরঞ্জন দত্ত। ময়দানে যিনি অনু দত্ত নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সৌরভ অনুগামী। যুগ্মসচিব হতে পারেন প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা হোয়াইট বর্ডার ক্লাবের প্রতিনিধি মদন মোহন ঘোষ। প্রাক্তন ক্রিকেটার এর আগে নির্বাচক ছিলেন, সিএবি-র গ্রাউন্ডস কমিটিতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।

কৌতূহল রয়েছে কোষাধ্যক্ষ কে হতে পারেন, তা নিয়েও। দৌড়ে এগিয়ে সঞ্জয় দাস। প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা সৌরভের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সঞ্জয়। সৌরভের বায়োপিকের অন্যতম উদ্যোক্তাও তিনি। সিএবি-র ট্যুর, ফিক্সচার ও টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সঞ্জয়। কোষাধ্যক্ষ হওয়ার প্রধান দাবিদার তিনি। কেউ কেউ সুব্রত সাহা (বাবলু)-র নাম ভাসিয়ে দিলেও এখনই তাঁকে পদে নাও দেখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অ্যাপেক্স কাউন্সিলে রাখা হতে পারে তাঁকে।

শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই প্যানেলই ঠিক হয়েছে বলে খবর। তবে ময়দানের খোঁজ রাখেন, এমন সকলেই জানেন যে, বাংলার ক্রিকেট প্রশাসনে শেষ মুহূর্তেও অনেক সমীকরণ বদলায়। শনিবারও সিএবি-তে দফায় দফায় বৈঠক চলছে। শেষ মুহূর্তে নতুন কেউ প্রার্থী তালিকায় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে ঢুকে পড়বেন না, এমন কথা হলফ করে বলা যায় না।