কলকাতা: চূড়ান্ত ক্ষিদে নিয়ে ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সাতবার ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup) সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যে কারণে বিশ্ব ক্রিকেটে চোকার্স তকমা সেঁটে গিয়েছে তাদের সঙ্গে। এই প্রথম কোনও বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলবে ওরা। দক্ষিণ আফ্রিকার (IND vs SA) এই দলটার অবশ্য খুব ভারসাম্য রয়েছে। বিশ্বকাপ জিততে মরিয়া থাকবে।
তবে বার্বাডোজ়ের এই পিচ ওদের খুব একটা সাহায্য করবে না। কারণ, এই পিচ ভারতীয় উইকেটের মতো। বল পড়ে মন্থর গতিতে ব্যাট আসবে। ঘুরবে, নীচু হবে। বলতে পারেন, দক্ষিণ আফ্রিকারও তো দারুণ দুজন স্পিনার আছে। তাবারেজ শামসি ও কেশব মহারাজ। আমার পর্যবেক্ষণ, মানের দিক থেকে ভারতীয় স্পিনাররা অনেক এগিয়ে। পাশাপাশি ভারতীয় ব্যাটাররা স্পিন বোলিং অনেক ভাল খেলবে। শামসিকে ওরা সামলে নেবে।
বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ছন্দে নেই। তবে এই ভারতীয় দলকে যে কারণে ফাইনালে এগিয়ে রাখছি, সেটা হল দলের বাকি দশজনই কিছু না কিছু অবদান রাখছে। রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) দুরন্ত ব্যাটিং করছে। মিডল অর্ডারে যখনই দরকার পড়েছে, কখনও হার্দিক পাণ্ড্য, কখনও শিবম দুবে, বা ঋষভ পন্থ, সূর্যকুমার যাদব – কেউ না কেউ পারফর্ম করে দিয়েছে। সঙ্গে বোলাররাও ছন্দে রয়েছে।
আমেরিকা থেকে টুর্নামেন্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে চলে আসার পর স্পিনাররা স্বর্গরাজ্য পেয়ে গিয়েছে। কুলদীপ যাদব, অক্ষর পটেলরা দুরন্ত বল করছে। তবে ভারতীয় দলের বোলিংয়ের এক্স ফ্যাক্টর যশপ্রীত বুমরা। ওর ২৪টা বল ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। পিচ পেসারদের সাহায্য করুক বা স্পিনারদের, বুমরা সব উইকেটেই ভয়ঙ্কর। টার্নিং পিচেও বুমরা গেমচেঞ্জার।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংটা অবশ্য বেশ ভাল। কুইন্টন ডি’কক ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলে। ডেভিড মিলারকে বলা হয় কিলার মিলার। নিজের দিনে ম্যাচ শেষ করে দিতে পারে। হেনরিখ ক্লাসেনও বিপজ্জনক ব্যাটার। আইপিএলে দারুণ কিছু ইনিংস খেলেছে। সঙ্গে থাকবে এইডেন মারক্রাম। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংয়ে যদি অনরিক নখিয়া, কাগিসো রাবাডা, তাবারেজ শামসিরা থেকে থাকে, ব্যাটিংয়েও রয়েছে বড় নাম।
বিরাট কোহলি একেবারেই ছন্দে নেই। ৭ ম্যাচে ৭৫ রান করেছে। তবে ও বড় প্লেয়ার। আমি সব সময় বিশ্বাস করি, ফর্ম ইজ় টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ় পার্মানেন্ট। ঘরানা কখনও মরে না। কোহলি ফাইনালেই সেরা ইনিংসটা খেলবে না, কে বলতে পারে! আজই হয়তো ৩২ বলে ৫৮ করে দিল। আমেরিকার উইকেটে কোহলির ব্যাটিংকে মাপলে হবে না।
পাওয়ার প্লে-তে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলছে ভারত। রোহিতের স্ট্র্যাটেজি হল, এমন শুরু করব যাতে মিডল অর্ডারের ওপর চাপ না পড়ে। রোহিত নিঃস্বার্থ ক্রিকেট খেলে বরাবরই। অনেকে বলছে, কেন যশস্বী জয়সওয়ালকে খেলানো হচ্ছে না। কিন্তু টিম কম্বিনেশন অনুযায়ী অনেক সময় অনেককে বাইরে বসতে হয়।
২০০৭ সালে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজেই অধিনায়ক হিসাবে রাহুল দ্রাবিড়ের ভরাডুবি হয়েছিল। কোচ হিসাবে সেই মাটিতেই বিশ্বকাপ জিতলে শাপমুক্তি হবে দ্রাবিড়ের। ভারতীয় ক্রিকেটারদের উচিত ওর জন্য নিজেদের তিনশো শতাংশ দেওয়া।
সাতমাস আগে ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরেছে ভারত। ১১ বছর কোনও আইসিসি ট্রফি পায়নি ভারত। তবে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা আলাদা দল। বার্বাডোজ়ের পিচ, পরিবেশ-পরিস্থিতি, সব ভারতের পক্ষে। টি-২০ ক্রিকেটে আগাম পূর্বাভাস করা কঠিন। তবু ভারতই হয়তো শেষ হাসি হাসবে।
(সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুলিখন: সন্দীপ সরকার)
আরও পড়ুন: ৬ মাস আগে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নেতৃত্ব হারিয়েছিলেন, ভারতকে তুললেন ফাইনালে, রোহিতে মুগ্ধ দাদা
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।