মুম্বই: ইডেনে সেদিন খেলতে নেমেছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (MS Dhoni)। সেই ধোনি, যিনি অবসরের সময় কখনও সময়ের পরোয়া করেননি, কাউকে কোনও বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়ার সুযোগ দেননি। ৭ মে ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম চেন্নাই সুপার কিংস ম্যাচের দিনই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর কথা ঘোষণা করেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকটা ধোনির কায়দাতেই।
আর তার পাঁচদিনের মাথায় টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন বিরাট কোহলিও (Virat Kohli)। ধোনি-রোহিতদের আদলে তিনিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে অবসর ঘোষণা করলেন। কোনও বিদায়ী ম্যাচ খেলার দিকে যাননি। গোটা ক্রিকেটবিশ্ব কোহলির সিদ্ধান্তে হতবাক। সামনেই ইংল্যান্ড সফর। ইংরেজদের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্ট ম্যাচের সিরিজ খেলবে ভারত। সকলেই ভেবেছিলেন, বরাবর চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসা কোহলি হয়তো ইংল্যান্ডে গিয়ে রান করার পরীক্ষায় বসবেন। স্যুইংয়ের বিরুদ্ধে তাঁর দুর্বলতার প্রশ্নকে চাবুক শটে (বিখ্যাত হুইপ শট) গ্যালারিতে ফেলবেন।
কিন্তু সেই রাস্তায় হাঁটলেন না কোহলি। ইংল্যান্ড সফরের আগেই অবসর নিলেন। শোনা গিয়েছে, বোর্ড থেকে তাঁকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করা হয়েছিল। তাতে চিড়ে ভেজেনি। কী কারণে এই পথে হাঁটলেন বিরাট? খতিয়ে দেখা যাক
১। ইংল্যান্ড সফরের দল নির্বাচনের অনেক আগেই অবসর ঘোষণা করলেন কোহলি। যাতে টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকেরা বিকল্প ক্রিকেটার খুঁজে নেওয়ার যথেষ্ট সময় পায়। শুভমন গিল, যশস্বী জয়সওয়ালদের পাশাপাশি শ্রেয়স আইয়ার, সাই সুদর্শনরা ভারতের টপ অর্ডারে সুযোগ পেতে পারেন। এমনকী, বিরাটের অনুপস্থিতিতে তিন নম্বরে চেতেশ্বর পূজারাকে ফেরানো হবে কি না, তা নিয়েও চর্চা চলছে।
২। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে কোহলির ব্যাট হাতে ছন্দ হাতড়ে বেড়ানোও অবসরের সিদ্ধান্তকে ত্বরাণ্বিত করতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পারথ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন। তারপর থেকে আর রান পাননি। সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচে মাত্র ১৯০ রান। অফস্টাম্পের বাইরের বলে ফের হোঁচট খান বারবার।
৩। ভারতের পরের সিরিজ ইংল্যান্ডে। যেখানে স্যুইংয়ের সামনে বারবার বিপদে পড়েছেন বিরাট। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বৃত্তে এই সিরিজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণে কোহলি ঝুঁকি নিতে চাননি, মত অনেকের।
১২৩ টেস্টে ৯২৩০ রান করে অবসর নিলেন কোহলি। ৩০ সেঞ্চুরি করেছেন। টেস্টে ভারতের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। সব মিলিয়ে বিশ্বের চতুর্থ সফল টেস্ট অধিনায়ক। ৬৮ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ৪০টি ম্যাচ জিতেছেন। গ্রেম স্মিথ (৫৩ জয়), রিকি পন্টিং (৪৮ জয়) ও স্টিভ ওয়র (৪১ জয়) পরই কোহলির রেকর্ড।