নয়াদিল্লি: মহেন্দ্র সিংহ ধোনি কি কোনওভাবে মনে করছিলেন যে, তাঁকে সরিয়ে বিরাট কোহলির হাতেই সীমিত ওভারের ক্রিকেট দলের নেতৃত্বভার তুলে দেওয়া হতে পারে? এমনটা আঁচ করেই কি আচমকা নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? প্রাথমিকভাবে হয়ত এই প্রশ্ন অবাস্তবই মনে হতে পারে। কারণ, ধোনির ভারতীয় ক্রিকেটে যে স্ট্যাচার তাতে তাঁকে আচমকা সরিয়ে দেওয়াটা খুবই কঠিন ব্যাপার। কিন্তু অধিনায়ক পদ থেকে ধোনির সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান এমএসকে প্রসাদ যে কথা বলেছেন, তা খুবই তাত্পর্য্যপূর্ণ। প্রসাদ বলেছেন, মাস ছয়েক আগেও ধোনি এই সিদ্ধান্ত নিলে খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তাম। কিন্তু ওর সময়জ্ঞানের আমি প্রশংসা করছি। এখন কোহলি তো নিজেকে প্রমাণ করেছেন এবং টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব খুবই দক্ষতার সঙ্গে সামলাচ্ছেন। তাই একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ধোনি।

আরও তাত্পর্য্যপূর্ণ ঘটনা হল, যে দিন ধোনি তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন, সেই দিনই নাগপুরে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনাল ম্যাচ চলাকালে তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলেন প্রসাদ।

নির্বাচক কমিটির প্রধানের এই মন্তব্য সম্পর্কে সুনীল গাওস্কর একটি টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, এই মন্তব্য থেকে জলের মতো স্পষ্ট যে, নির্বাচকরা কোহলিকে অধিনায়ক করতে চাইছিলেন।

টেস্ট দলে অধিনায়ক কোহলির পারফরম্যান্স রীতিমতো চোখধাঁধানো। এখনও পর্যন্ত তাঁর নেতৃত্বে ১৮ টেস্টে অপরাজিত ভারত।

অন্যদিকে, গত বিশ্বকাপের পর থেকে ২১ টি একদিনের ম্যাচের মধ্যে ১১ টিতেই হারের মুখ দেখতে হয়েছে ধোনির ভারতকে। এরমধ্যে তিনটি সিরিজে হারও রয়েছে।

আগামী বিশ্বকাপ আর দুই বছর পরই অনুষ্ঠিত হবে। তাই নিজের মতো করে দল গড়তে কোহলি পর্যাপ্ত সময় পাবেন।

ধোনির আচমকা সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে বোর্ড বা ধোনি-উভয় পক্ষের কাছ থেকেই খোলাখুলিভাবে কিছু জানানো হয়নি। এর ফলে এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে জল্পনা চলছেই।

এ ব্যাপারে প্রকৃত সত্যটা জানতে হয়ত বর্তমান নির্বাচকদের অবসর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, সচিন তেন্ডুলকরের অবসর সম্পর্কেও তথ্য অনেক পরে জানা গিয়েছিল। প্রথমে তো মনে করা হয়েছিল, সচিন নিজে থেকেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে নির্বাচক কমিটির প্রাক্তন প্রধান সন্দীপ পাতিল জানিয়েছিলেন, কীভাবে নির্বাচকরা লিটল মাস্টারকে অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে বুঝিয়েছিলেন।