বুয়েনস এয়ার্স: বিশ্ব ফুটবলের মহাতারকা মারাদোনার মৃত্যুর পর তাঁর এক আইনজীবী জানিয়েছিলেন  শেষদিকটায় নিঃসঙ্গ অবস্থায় ছিলেন তিনি। এমনকি মৃত্যুর আগের দিন রাতেও তাঁর পাশে কেউ ছিলেন না। কিন্তু মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তির ভাগ চেয়ে জড়ো হয়েছেন একাধিক দাবিদার। রীতিমতো টানাপড়েন শুরু হয়েছে তাঁদের মধ্যে।


ইতালির এক সংবাদপত্র জানাচ্ছে, গাড়ি, বাড়ি, ফুটবল স্কুল এসব থাকলেও তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তেমন টাকা নেই। ফুটবলের মহাতারকা সারাজীবনে যে পরিমাণ রোজগার করেছেন তার তুলনায় সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ নেহাৎই কম। পুমা-র মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গে তাঁর চুক্তি ছিল। বেলারুশে ডায়নামো ব্রেস্ট-এ সাম্মানিক প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন, মধ্য প্রাচ্যে ফুটবলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। কেরিয়ারে নানান ক্ষেত্র থেকে যথেষ্ট রোজগার করেছেন দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। কিন্তু যে পরিমাণ অর্থ তাঁর কাছে এসেছে সে তুলনায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় কিছুই নেই। অনেকেই মনে করেন, ভালো মানুষ হওয়ার ফলে মারাদোনাকে অনেকেই ঠকিয়েছেন। টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী মারাদোনার নগদ অর্থের পরিমাণ ৫৫ লক্ষ টাকার কিছু বেশি।

মারাদোনার আইনজীবী অ্যাঞ্জেলো পিসানিও জানিয়েছেন, মারাদোনার ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ খুব কম। তাঁর কথায়, ’’তিনি খুব উদার মনের মানুষ ছিলেন। যদি আপনি জানতে চান তাঁর টাকা কোথায় গেল, তাহলে তাঁকে ঘিরে থাকা এবং তাঁকে যারা নানানভাবে ব্যবহার করেছেন সেই সব লোকেদের সঙ্গে  কথা বলুন। তাঁর পকেটে কখনও ১০০ ডলারের বেশি থাকত না।‘‘

বেশ কিছু কর বাকি রেখেই মারাদোনা চলে গিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমে খবর। এমনকি কর মেটাতে গিয়ে একবার একটি আংটি দিয়ে দিতে হয়েছিলো ফুটবলের মহাতারকাকে। মারাদোনার নগদ অর্থ যত কমই হোক না কেন, তাঁর মোট সম্পত্তির বহর নেহাৎ কম নয়। বুয়েনোস আইরেসের মতো অভিজাত অঞ্চলে তাঁর একাধিক অ্যাপার্টমেন্ট, বিএমডাবলু, অডি, রোলস রয়েসের মতো বিলাসবহুল ছয়টি গাড়ি, চিনে ফুটবল স্কুল ছাড়াও ইতালি ও কিউবায় তাঁর কিছু বিনিয়োগ রয়েছে। সূত্রের খবর এ সব কিছুর মূল্য নির্ধারণ হলে সম্পত্তির অঙ্ক গিয়ে দাঁড়াবে এগারোশো নয় কোটির বেশি। ফলে মারাদোনার মৃত্যুর আসল কারণ কী, সঠিক চিকিৎসা হয়েছিল কিনা, এসব নানান বিষয়ের মতো আলোচনা-তর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে তাঁর সম্পত্তি।