৭৫ মিনিট। গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল মোহনবাগান। কামিংসের থেকে বল কেড়ে নিলেন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডাররা। তারপর প্রতি আক্রমণে পার্ডোর শট রুখে দিলেন বিশাল কায়েথ।
East Bengal vs Mohun Bagan: পেত্রাতসের গোলে মুখরক্ষা মোহনবাগানের, ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ম্যাচ শেষ ২-২ ব্যবধানে
ISL Derby: ইন্ডিয়ান সুপার লিগে ইস্টবেঙ্গলের কাছে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট।
ইনজুরি টাইমে আর কোনও গোল হল না। ম্যাচ শেষ হল ২-২ ব্যবধানে। দুবার এগিয়ে গিয়েও শেষরক্ষা করতে পারল না ইস্টবেঙ্গল। এদিন একটি নজির গড়ার সুযোগ ছিল লাল-হলুদ বাহিনির সামনে। আইএসএলে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে কখনও হারাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল এফসি। এদিন ৮৬ মিনিট পর্যন্ত যখন ২-১ গোলে এগিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল, মনে করা হয়েছিল আইএসএলে প্রথমবার মোহনবাগানকে হারানোর নজির গড়বে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ৮৭ মিনিটে দিমিত্রি পেত্রাতসের গোলে সেই সুযোগ নষ্ট হল।
৮৭ মিনিট। দিমিত্রি পেত্রাতসের গোলে সমতা ফেরাল মোহনবাগান। ম্যাচের ফল ২-২।
৮৭ মিনিট। দিমিত্রি পেত্রাতসের গোলে সমতা ফেরাল মোহনবাগান। ম্যাচের ফল ২-২।
৬১ মিনিট। সায়ানকে ধাক্কা দিমিত্রি পেত্রাতসের। ফ্রি কিক পেল মোহনবাগান। ধাক্কাধাক্কিতে জড়ালেন দুই দলের ফুটবলাররা। ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে ২-১।
৫৫ মিনিট। বক্সের মধ্যে মহেশকে ধাক্কা টাংরির। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত রেফারির। পেনাল্টি থেকে গোল করলেন ক্লেটন সিলভা। ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে গেল ২-১।
৪৪ মিনিট। প্রায় গোল করে ফেলেছিল ইস্টবেঙ্গল। বাঁদিক থেকে নিশুর ক্রস। নন্দ বল ধরার আগেই এগিয়ে এসে বল বিপন্মুক্ত করলেন বিশাল কায়েথ। প্রথমার্ধ শেষ হল ১-১ গোলেই।
৪০ মিনিট। এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ মোহনবাগানের সামনে। বক্স লক্ষ্য করে বল ভাসিয়েছিলেন কিয়ান নাসিরি। সাদিকুর শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট।
৩৩ মিনিট। নন্দকে ধাক্কা দেওয়ার অপরাধে হলুদ কার্ড দেখলেন শুভাশিস।
২১ মিনিট। হলুদ কার্ড দেখলেন কিয়ান নাসিরি। ম্যাচের ফল ১-১।
১৭ মিনিট। সাদিকুর গোলে সমতা ফেরাল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট।
৮ মিনিট। ফের আক্রমণ ইস্টবেঙ্গলের। পার্ডোর দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট। তারপর কর্নার থেকে ক্লেটনের শট ক্লিয়ার করলেন কিয়ান নাসিরি।
৩ মিনিট। অজয় ছেত্রীর গোলে এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল।
১ মিনিট। মহেশকে ধাক্কা ব্রেন্ডনের। ফ্রি কিক পেল ইস্টবেঙ্গল। তবে গোলমুখ খুলতে ব্যর্থ।
ওড়িশা এফসি-কে হারিয়ে কলিঙ্গ সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইস্টবেঙ্গল। ১২ বছরের খরা কাটিয়ে জাতীয় স্তরে কোনও ট্রফি জিতেছে ইস্টবেঙ্গল।
প্রেক্ষাপট
কলকাতা: এসে গেল কলকাতা ডার্বি। শনিবার ভারতীয় ফুটবলের সেই মহারণ দেখতে চলেছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। এ বারের ইন্ডিয়ান সুপার লিগে এই প্রথম মুখোমুখি হতে চলেছে কলকাতার দুই প্রধান মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ও ইস্টবেঙ্গল এফসি। শতাধিক বছরের এই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতা এ বার হয়তো চরমে উঠবে, যেমন হয়ে এসেছে বরাবর। কারণ, দুই দলই এ বার প্রায় সমানে সমানে লড়াই করার সংকল্প নিয়ে মাঠে নামবে। সম্প্রতি একে অপরকে এক ইঞ্চিও জমি না ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে দুই দলই।
আইএসএল ১০-এর লিগ টেবল দেখলে অবশ্য তা বোঝার উপায় নেই। কারণ, ডিসেম্বরের শেষে যখন আন্তর্জাতিক ফুটবলের জন্য লিগে প্রায় মাস খানেকের অবকাশ শুরু হয়, তখন পর্যন্ত দুই দলই দশটি করে ম্যাচ খেলেছে এবং ছ’টি জয়, একটি ড্র ও তিনটি হার-সহ মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ছিল পাঁচ নম্বরে ও দু’টি জয়, পাঁচটি ড্র ও তিনটি হার-সহ ইস্টবেঙ্গল এফসি ছিল লিগ টেবলের আট নম্বরে।
তবে গত এক মাসে দুই দলই একাধিকবার মাঠে নেমেছে এবং ইস্টবেঙ্গলের খেলায় যেখানে অসাধারণ উন্নতি দেখা গিয়েছে, কলিঙ্গ সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা, সেখানে মোহনবাগানের প্রথম দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই জাতীয় দলের শিবিরে থাকায় ও কয়েকজন খেলোয়াড়ের চোট থাকায় চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি তাদের। ইস্টবেঙ্গলের কাছে হেরে সুপার কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যেতে হয় তাদের।
তবে এখন ছবিটা অন্যরকম। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা ফিরে এসেছেন সবুজ-মেরুন শিবিরে। চোট পাওয়া খেলোয়াড়রাও ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন। সবচেয়ে বড় কথা কোচ হিসেবে আন্তোনিও লোপেজ হাবাসকে পাচ্ছে তারা। হাবাস আইএসএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল কোচেদের একজন। কার্লস কুয়াদ্রাতের কৌশলের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। কারণ, অতীতে তিনিও তাঁর ধারালো কৌশলের প্রমাণ দিয়েছেন একাধিকবার। ফলে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে তাদের ডার্বি-দ্বৈরথ জমে ওঠার সম্ভাবনা যথেষ্ট।
এই মরশুমে ইতিমধ্যেই তিনটি ডার্বি হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে একটিতে জিতেছে মোহনবাগান এসজি ও দুটিতে জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। তবে এ বার জয়ে ফেরার চেষ্টা অবশ্যই করবে সবুজ-মেরিন বাহিনী, যা হতে দিতে চাইবে না লাল-হলুদ ব্রিগেড।
ভারতীয় ফুটবলের মহারণের আগে দেখে নেওয়া যাক ইন্ডিয়ান সুপার লিগের পরিসংখ্যান ডেস্ক এই ম্যাচ নিয়ে বিভিন্ন গবেষণায় কী কী তথ্য তুলে আনল।
দশ ম্যাচে হাল-হকিকত
এই নিয়ে আইএসএলের চতুর্থ মরশুম কলকাতার দুই প্রধানের। চলতি মরশুমে এ পর্যন্ত দুই দলই দশটি করে ম্যাচ খেলেছে। এই দশ ম্যাচে মোহনবাগান ১৯ পয়েন্ট পেয়েছে। গত মরশুমে দশটি ম্যাচে তারা অর্জন করে ২০ পয়েন্ট। ২০২১-২২ মরশুমে দশটি ম্যাচের পর তাদের সংগৃহিত পয়েন্ট ছিল ১৬ ও প্রথম মরশুমে দশ ম্যাচে তারা পেয়েছিল ২০। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে অন্যান্যবারের মতোই এগিয়ে চলেছে সবুজ-মেরুন শিবির।
কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ছবিটা গত তিন মরশুমের তুলনায় অনেক পাল্টে গিয়েছে। ২০২০-২১ মরশুমে তাদের দশ ম্যাচে প্রাপ্ত পয়েন্ট ছিল ১০। ২১-২২ মরশুমে ছিল সবচেয়ে খারাপ, দশ ম্যাচে ছয়। গত মরশুমে দশটি ম্যাচ খেলার পর তাদের সংগ্রহে ছিল ন’পয়েন্ট এবং এই মরশুমে এগারো। গত তিনবারই দশ ম্যাচের পর তাদের গোল পার্থক্য ছিল নেতিবাচক। অর্থাৎ, যা গোল তারা দিয়েছিল, তার চেয়ে বেশি গোল খেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এ বার এই প্রথম ইতিবাচক গোলপার্থক্য দেখা গিয়েছে তাদের নামের পাশে।
ক্লিন শিটের সংখ্যাও আগের চেয়ে বেশি। গত তিনবার দশটি করে ম্যাচ খেলার পর যতগুলি ম্যাচে তাদের ক্লিন শিট ছিল, এ বার এক মরশুমে ক্লিন শিটের সংখ্যা সেটাই, পাঁচ।
এ বার এ পর্যন্ত আটটি গোল খেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলের ইতিহাসে দশ ম্যাচে এ বারই সবচেয়ে কম গোল হজম করেছে তারা। দশ ম্যাচে এগারো পয়েন্টও আইএসএলে তাদের সবচেয়ে ভাল পারফরম্যান্সের সূচক। তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -