কলকাতা: শুক্রবার ঘরের মাঠে জামশেদপুর এফসি-র কাছে ১-২-এ হারার পর অবশেষে ইস্টবেঙ্গল এফসি-র ব্রিটিশ কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন কার্যত স্বীকার করে নিলেন যে, এই দল নিয়ে এ মরশুমে সেরা ছয়ে থাকা আর হয়ে উঠবে না তাদের পক্ষে।
শুক্রবার ঘরের মাঠে শুরুর দিকে ভাল খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে রীতিমতো ধুঁকতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল এবং তাদের রক্ষণের বিশাল ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে অবশেষে ২৫ মিনিটের ব্যবধানে দুটে গোল করে জয় ছিনিয়ে নেয় জামশেদপুর এফসি। এই হারের ফলে লাল-হলুদ বাহিনীর প্রথম ছয়ে থাকার সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে গেল।
এই হারের ফলে কোচ কনস্টান্টাইন বলেন, “সেরা ছয়ে যাওয়া এখন খুবই কঠিন মনে হচ্ছে। পরের ম্যাচে আমাদের হায়দরাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। এই ম্যাচটা আমাদের পক্ষে মোটেই সোজা ছিল না। সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইছি। কারণ, ওঁদের আরও ভাল কিছু প্রাপ্য ছিল। ব্যক্তিগত ভুলের জন্য আরও একটা ম্যাচে আমাদের হার মানতে হল। কেউ বলতে পারবে না যে, আমরা সুযোগ তৈরি করতে পারিনি। গোলকিপারও একাধিক সেভ করেছে। কিন্তু প্রতিপক্ষের গোলের সামনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি আমাদের ছেলেরা। তারই মাশুল দিতে হয়েছে”।
গত দুই মরশুমের চেয়ে বেশি সংখ্যক ম্যাচ জিতেও লিগ টেবলের দশ নম্বরে ইস্টবেঙ্গল এফসি। এই প্রসঙ্গে কোচের যুক্তি, “খুবই হতাশাজনক এই পারফরম্যান্স। মরশুমের শুরুতেই বলেছিলাম, এমনটাই হতে পারে। তাও চারটি ম্যাচে জিতেছি আমরা। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। এখন আমাদের কিছু নতুন খেলোয়াড় দরকার। আমরা অনেক দেরিতে সবকিছু শুরু করেছি। তবে এখন এগুলোকে অজুহাত বলে মনে হতে পারে। তবে কাউকে দোষারোপ করব না”।
এ দিন ১২ মিনিটের মাথায় ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ক্লেটন সিলভার গোলে এগিয়ে যায় লাল-হলুদ বাহিনী। এই নিয়ে লিগে নবম গোল করলেন ক্লেটন। কিন্তু এই গোলের সুফল পাননি ট্র্যাজিক হিরো ক্লেটন। দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড হ্যারি সয়্যার ও বঙ্গ ফরোয়ার্ড ঋত্বিক দাসের গোলে লিগের দ্বিতীয় জয় ছিনিয়ে নেয় জামশেদপুর এফসি। এই নিয়ে জেতার জায়গায় থেকেও নবম পয়েন্ট খোয়াল ইস্টবেঙ্গল এফসি।
ক্লেটনকে নিয়ে বলতে গিয়ে ক্লাবের প্রতি অভিমানের সুর শোনা যায় কোচের গলায়। যখন বলেন, “ক্লেটন সিলভার ওপর আমরা অনেকটা নির্ভর করি ঠিকই, তবে আমাদের দলটা ওয়ান ম্যান আর্মি, এ কথা মানতে রাজি নই। ক্লেটনকে তো গোলের পাসটা বাড়াতে হবে কাউকে। আমাদের সে রকম খেলোয়াড় হাতে আছে। সে আজকের ম্যাচে খেলার জন্য তৈরিও ছিল। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতায় তাকে সরকারি ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকজন ভারতীয় খেলোয়াড়কেও বাছা হয়েছিল। কিন্তু তাদের বাছাই করা আর দলে নেওয়ার মধ্যে অনেক দূরত্ব রয়েছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি হয়ে গেল, আমরা একজনকেও আনতে পারলাম না। কিন্তু জামশেদপুর তিনজন নতুন খেলোয়াড় নিয়ে চলে এসেছে”।
যতদিন না নতুন খেলোয়াড়রা দলে যোগ দিচ্ছেন, তত দিন উন্নতি হওয়া সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন কোচ। এই প্রসঙ্গে তিনি বলে, “এটাই এখন আমাদের কঠিন বাস্তব। আমাদের এখন তরতাজা খেলোয়াড় খুবই দরকার। এখনও সপ্তাহ দুয়েক সময় হাতে রয়েছে। পরের মরসুমের জন্য নিজেদের তৈরি করতে গেলে নতুন কয়েকজনকে লাগবে” তবে শোনা যাচ্ছে ক্লাবের আইনি জটিলতায় তাদের নিয়োগ আপাতত স্থগিত হয়ে রয়েছে। হয়তো পরের ম্যাচে তাদের দেখা যেতে পারে। ------ আইএসএল মিডিয়া তথ্য সংগ্রহ