দোহা : ৩৭টি ক্লাব ট্রফি, ৭ বার ব্যালন ডি'ওর, ছ'বার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট, একবার কোপা আমেরিকা জয়, অলিম্পিকে সোনার পদক, এছাড়াও একাধিক রেকর্ড ও পরিসংখ্যান...যে সব মাইলফলক স্পর্শ করা কার্যত দুঃসাধ্য। ১৮ বছরের কেরিয়ারে অধরা বলতে সে অর্থে কিছু নেই। একটা জিনিস ছাড়া। কেরিয়ারের বিদায়লগ্নে এসে সেই মাইলফলক স্পর্শ করার শেষ সুযোগ যে তিনি হাতছাড়া করবেন না, সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বকাপ জয় (World Cup Win)। ফাইনালে জিতলেই কার্যত দীর্ঘদিনের এক বিতর্কের অবসান হবে...কেন কোনও বিশ্বকাপ নেই কিংবদন্তি মেসির (Lionel Messi) কেরিয়ারে ?
এ পর্যন্ত মেসি যে সব সাফল্য অর্জন করেছেন, তা ইতিমধ্যেই তাঁকে পেলে, মারাদোনা, স্টিফানো-দের সঙ্গে এক তালিকায় বসিয়ে দিয়েছে। কিন্তু, একটা বিশ্বকাপ জয়-ই কি এইসব কিংবদন্তির থেকে তাঁকে আরও কিছুটা এগিয়ে দেবে ? কেউ কেউ মনে করছেন, হ্যাঁ তা-ই। আবার কেউ কেউ বলছেন, তিনি ইতিমধ্যেই সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন।
বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে সবথেকে দরাজ শংসাপত্রটা সম্ভবত এল নিজের দলের কোচ লিওনেল স্কালোনির কাছ থেকে। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে আর্জেন্তিনা ৩-০ ব্যবধানে জয়ের পর তিনি সরাসরি বলেই দিলেন, আমার মনে এনিয়ে কোনও দ্বিধা নেই যে, ও (মেসি) -ই ইতিহাসে সর্বকালীন সেরা।
ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক অ্যালান শিয়েরার বলছেন, মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ১৯৮৬-র বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স দেখে তিনি এতদিন মারাদোনাকেই সর্বকালীন সেরা ভাবতেন। কিন্তু, এখন তিনি বলছেন, "মেসি এখানে যদি জিতে যান, আমার মত পাল্টে যাবে।" বিবিসি-কে এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তিনি।
১৯৮৬-র বিশ্বকাপ ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির বিরুদ্ধে মারাদোনার তৈরি করে দেওয়া পাসে গোল করেন আর্জেন্তিনার স্ট্রাইকার জর্জ বুরুচাগা। এককথায় উইনিং গোল করা বুরুচাগা বলছেন, একটা যুগের সেরা খেলোয়াড় মেসি। যেখানে তাঁর সাফল্যের পাশাপাশি থাকতে পারেন রোনাল্ডো। কিন্তু, মারাদোনার সঙ্গে মেসির তুলনা বৃথা। গত ৭০ বছরে সেরা পাঁচ খেলোয়াড় হলেন- স্টিফানো, ক্রুফি, পেলে, মারাদোনা ও মেসি। মেসিও তালিকায় রয়েছেন। তাতে তিনি বিশ্বকাপ জিতুন বা না জিতুন।
তবে, তিনি সেরা নাকি অন্য কেউ, সে নিয়ে যতই আলোচনা চলুক। বরাবরের মতো এবারও ম্যাচের আগে তিনি নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে ব্যস্ত। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।