আবীর দত্ত, কলকাতা : জার্সি বদল নিয়ে বারবার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় দেখা গেছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। এবার খেলার মাঠের দুই জার্সিধারীকে নিয়ে রাজনৈতিক মতপার্থক্য। কেউ কাউকে জমি ছাড়ছেন না। তার কারণ, যে দু'জনকে নিয়ে লড়াই তাঁদের মধ্যে একজন আগে ১৭ নম্বর জার্সি পরতেন, আরেকজন পড়তেন ১৯। এখন একজন ৭ নম্বর জার্সি পরেন, আরেকজন ১০। একজন ব্যালন ডি'ওর পেয়েছেন ৭টা, আরেকজন পেয়েছেন ৫টা। জার্সির নম্বর বদল হলেও, জার্সি বদল হয়নি তাঁদের। সম্ভাবনাও নেই। লিও মেসি (Lio Messi) আর ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো (Cristiano Ronaldo)। বিশ্বকাপের মঞ্চে এবারই হয়তো শেষ দেখা যাচ্ছে তাঁদের। 


কিন্তু বিশ্বমঞ্চে কে সের ? সেই নিয়ে লড়াই চলে সারাবছর ধরে। আগামী দিনেও হয়তো চলবে। যে আলোচনায় কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গ কার্যত সামনের সারিতে। অলিতে গলিতে মেসি, রোনাল্ডোদের ফ্যানে ছড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ঘটনায় যাঁরা নিজেদের মধ্যে বাকযুদ্ধে জড়ান বা যাঁরা রাজ্য-রাজনীতির গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন, তাঁরাও রাত জাগছেন। বিশ্বকাপের দিকে নজর রাখেছেন। মেসি-রোনাল্ডো লড়াই সেখানেও। এবার যেন লিও মেসি ও সি আর ৭ -এর ওপর আলাদাই নজর তাঁদেরও। 


ওয়ান লাস্ট ডান্স, বিশ্ব দরবারে শেষ বারের মতো আলোচনা সমালোচনা। লিও মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। সম্ভবত আর দেশের জার্সিতে দেখা যাবে না দু'জনকেই। ৫ বিশ্বকাপ খেলার নজির দু'জনেরই। রোনাল্ডো ৫টি বিশ্বকাপেই গোল করেছেন, আর মেসি ৫টি বিশ্বকাপে গোল করিয়েছেন। সেরার মুকুট কার ? সেই লড়াই ২০ বছর ধরে চলছে। আগামীদিনে ক্লাবের খেলায় হয়তো দেখা যাবে। কিন্তু দেশের জার্সিতে এবারই শেষ। তাই বিভিন্ন মাধ্যমে ট্রেন্ড চলছে, "ওয়ান লাস্ট ডান্স" কথাটি। কলকাতা সেই আলোচনার প্রথম সারিতে। বাংলার রাজনৈতিক জগতের ব্যক্তিত্বরা কাকে এগিয়ে রাখলেন, আর কেন ? দেখুন... 


প্রশ্ন ছিল, মেসি না রোনাল্ডো ? 


রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস : আমি  ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর ৫১ শতাংশ, আর মেসির ৪৯ শতাংশ ফ্যান। ব্রাজিলের সমর্থক। মেসি-রোনাল্ডো কিন্তু সেই পারফরম্যান্স দিতে পারেননি বিশ্বকাপে। তাই একটু হতাশ। মারাদোনার মতো খেলা এঁদের থেকে পেলাম না। ম্যাচ একা জেতাতে পারেননি। তবে অবশ্যই এঁরা সেরার সেরা। 


তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ : মেসি। কারণ সৌন্দর্যের সঙ্গে মিষ্টিভাব আছে। ঠিক যেন নীল গোলাপ।


তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন : মেসি। ছোটবেলা থেকে মারাদোনা প্রীতি থেকে আর্জেন্তিনার প্রতি ভালবাসা। মারাদোনা থেকেই হয়তো মেসিকে ভাললাগা। কিন্তু, ব্রাজিল আর আর্জেন্তিনার মাঝেমাঝি আমি। সম্পূর্ণভাবে ভাল ফুটবলের ফ্যান।


সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য : রোনাল্ডো। স্পট জাম্প, স্কিল- অসম্ভব আকর্ষণীয়। তবে এঁরা সবাই গ্রেট প্লেয়ার। 


বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা : আমার দেশের কেউ খেলছে না। খেললে ফ্যান হতাম। কিন্তু বিশ্বকাপ দেখি। ভাল খেলা দেখার জন্য তাই যে ভাল খেলবে তাঁর ফ্যান আমি। 


বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ : মেসি। মারাদোনার সূত্র ধরে মেসির প্রতি ভালবাসা। আর্জেন্তিনার সমর্থক আমি। বড় প্লেয়ার হিসেবে মেসি বিশ্বকে মাতিয়ে রেখেছেন। 


তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র : মৃত্যুর পর বা ঘুমন্ত অবস্থায় জিজ্ঞাসা করলেও একটাই উত্তর, মেসি। আমি ৫ রাত শুয়েছি এক হোটেলে মেসির সঙ্গে। বাংলাদেশ যাওয়ার কথা থাকলেও, কলকাতাতেই প্র্যাক্টিস করেছেন মেসি। এই বিশ্বকাপে দেখা করলেও হয়তো চিনে নিতেন। ওঁর সন্তান-স্ত্রী গেছিল মাঠে। ভাল লাগল দেখে। এটা বিশ্বকাপের সেরা গোল। গোল করার আগে চোখ মুখ কুঁচকে যায়। আমি চিনি তো তাই দেখেছি। ভিড়ের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে দেন। যে শট মেরেছে, গোলকিপার যদি আঙুল টাচ করত, তাহলে অর্থোপেডিক হাসপাতালে নিয়ে যেতে হত। 


সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় : আমার রোনাল্ডো পছন্দের। মেসি পায়ের জাদুকর ঠিকই, কিন্তু রোনাল্ডোর স্পিড ভীষণ আকর্ষণীয়। 


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী : নক্ষত্রদের মধ্যে কে বড় মাপা খুব কঠিন। কিন্তু কোনও না কোনওভাবে মনে হয় রোনাল্ডো একটু বেশি তীক্ষ্ণ, বোল্ড, বেশি উজ্জ্বল। তবে মেসিও বড় খেলোয়াড়। 


বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ : ছোট থেকে আর্জেন্তিনার সাপোর্টার আমি। মারাদোনার ভক্ত ছিলাম, আছি । তাই মেসিরও ভক্ত।


আরও পড়ুন ; দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে রোনাল্ডোর মাঠে নামা নিয়ে সংশয়, অধিনায়কের আপডেট দিলেন পর্তুগিজ কোচ