১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর। ৬০ বছরের বর্ণময় জীবন শেষ হয়ে গেল আজ। আর্জেন্তিনার সবচেয়ে বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সিধারী এভাবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন, এটা কেউ দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। কিন্তু আজ সেটাই হল।
১৯৭৬ সালের ২০ অক্টোবর আর্জেন্তিনোস জুনিয়র্সের হয়ে পেশাদার ফুটবল খেলা শুরু করেন মারাদোনা। তখনও তাঁর ১৬ বছর পূর্ণ হয়নি। তখন তিনি ১৬ নম্বর জার্সি পরতেন। আর্জেন্তিনার প্রিমিয়ার ডিভিশনের ইতিহাসে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে অভিষেক ম্যাচ খেলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত আর্জেন্তিনোস জুনিয়র্সের হয়ে খেলেন তিনি। ১৬৭ ম্যাচে তিনি ১১৫ গোল করেন। এরপর ১৯৮১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বোকা জুনিয়র্সে সই করেন মারাদোনা। প্রথম বছরেই তিনি দলকে লিগ জেতান।
১৯৮২ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলেন তরুণ মারাদোনা। সেবার অবশ্য তিনি সাফল্য পাননি। এরপর তিনি বার্সেলোনায় সই করেন। সেখানে তিনি দুর্দান্ত সাফল্য পান। ১৯৮৩ সালে বার্সেলোনা কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপার কাপ জেতে। পরের মরসুমে চোট পান তিনি। তাছাড়া ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বনিবনা হচ্ছিল। ফলে বার্সেলোনায় তাঁর কেরিয়ার দীর্ঘায়িত হয়নি। দুই মরসুমে ৫৮ ম্যাচে ৩৮ গোল করেই তিনি স্পেন ছাড়েন।
৫ জুলাই, ১৯৮৪ নেপলসে পৌঁছন মারাদোনা। শুরু হয় তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৮৬-৮৭ মরসুমে প্রথমবার সিরি আ চ্যাম্পিয়ন হয় নাপোলি। ইতালির এই ক্লাব আরও বহু সাফল্য পায়। ১৯৮৯-৯০ মরসুমে দ্বিতীয়বার সিরি আ চ্যাম্পিয়ন হয় নাপোলি। দু’বার লিগ রানার্সও হয় মারাদোনার ক্লাব। ১৯৮৭ সালে কোপা ইতালিয়া, ১৯৮৯ সালে উয়েফা কাপ, ১৯৯০ সালে ইতালিয়ান সুপারকাপ জেতে নাপোলি।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে মারাদোনার পারফরম্যান্স বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম আলোচিত বিষয়। এই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর দু’টি গোল নিয়েই বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলে। প্রথম গোলটি ‘হ্যান্ড অফ গড’ এবং দ্বিতীয় গোলটি গত শতাব্দীর সেরা। ফাইনালে মারাদোনা গোল না পেলেও, তাঁর বাড়ানো পাস থেকেই জার্মানির বিরুদ্ধে জয়সূচক গোল করেন বুরুচাগা।
১৯৯০ বিশ্বকাপেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান মারাদোনা। এবার অবশ্য চ্যাম্পিয়ন হয়নি আর্জেন্তিনা। ফাইনালে জার্মানির কাছে ০-১ গোলে হেরে যায় আর্জেন্তিনা। ১৯৯৪ বিশ্বকাপেই ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে শেষবার দেখা যায় মারাদোনাকে। বিতর্কের মধ্যেই শেষ হয় তাঁর কেরিয়ার।