থিম্পু: জয়ে না এলেও, অবশেষে হারের ধারা থামল। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে (AFC Challenge League) ভূটানের দল পারে এফসির বিরুদ্ধে ড্র করল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও ২-২ স্কোরলাইনে ড্র করতে সক্ষম হলেন লাল হলুদ ফুটবলাররা। মাদি তালালের (Madih Talal) গোলে লিড নিলেও, পিছিয়ে পড়তে হয়ে কলকাতার দলকে। ১-২ গোলে পিছিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করে লাল হলুদ। তবে ম্যাচ শেষের আগে দিমিত্রি দিয়ামান্তাকোসের (Dimitri Diamantakos) গোলে ২-২ স্কোরে ম্যাচ শেষ করে ইস্টবেঙ্গল। গ্রিক তারকার নাগাড়ে দুই ম্য়াচে গোল কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের জন্য বেশ ইতিবাচক একটি ইঙ্গিত।

  


পাঁচ মিনিটের মাথায় ফরাসি মিডফিল্ডার তালালের গোলে এগিয়ে গেলেও, সেই ব্যবধান লাল হলুদ মিনিট তিনেকের বেশি ধরে রাখতে পারেনি। আট মিনিটের মাথায় উইলিয়াম ওপোকু পোনাল্টি থেকে গোল শোধ করে ফের লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন পারো এফসি-কে। বিরতির ঠিক আগে ইভান্স আসান্তের গোলে এগিয়ে যায় ভুটানের দল। অনেক চেষ্টা ও ব্যর্থতার পর দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস সেই গোল শোধ করেন ৬৯ মিনিটের মাথায়।


এ দিন আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলা শুরুর ফল দ্রুত পায় ইস্টবেঙ্গল, যখন ডানদিক দিয়ে ওঠা সল ক্রেসপো মাদি তালালের উদ্দেশে নিখুঁত এক কাট ব্যাক করেন এবং তেমনই এক নিখুঁত শটে জালে বল জড়িয়ে দেন তালাল।


এক গোলে পিছিয়ে থাকা পারো এফসি এর জবাব দিতে বেশি সময় নেয়নি। সেই সুযোগ তাদের করে দেয় ইস্টবেঙ্গলই। আসান্তেকে নিজেদের বক্সের মধ্যে ফাউল করেন আনোয়ার আলি। রেফারি পেনাল্টি দেন পারোকে। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করেন ওপোকু।


সমতা আনার পর হোম টিম বাড়তি আত্মবিশ্বাস পেয়ে যায় এবং কলকাতার দলকে চাপে ফেলে দেয়। কোকি নারিতার দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়। এরপর কর্নার থেকে তোমোয়োকি উনোর পায়ে লেগে গোলের দিকে যাওয়া বল কোনও রকমে আটকান গোলকিপার গিল।


ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া ইস্টবেঙ্গলের অতিরিক্ত হাইলাইন ফুটবলই তাদের সমস্যায় ফেলে। বিরতির ঠিক আগে স্টপেজ টাইমের তৃতীয় মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের এক কর্নারের পরই এক দ্রুত গতির কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন আসান্তে। সেন্টার লাইন থেকে দৌড়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে গিলকে পরাস্ত করে গোল করে আসেন তিনি।


দ্বিতীয়ার্ধেও প্রতিপক্ষকে বেশ চাপে রাখে পারো। তবে প্রায়ই পাল্টা আক্রমণে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। একদিকে যেমন পারোর কাজুও হোমা গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হন, তেমনই বক্সের বাইরে থেকে দিয়ামান্তাকসের জোরালো শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।


এই সুযোগ হাতছাড়া হলেও পরবর্তী সুযোগটি তিনি নষ্ট করেননি। ডানদিক দিয়ে ওঠা নন্দকুমার শেকরের ক্রসে গোলের সামনে থেকে গোলে বল ঠেলে দেন গ্রিক ফরোয়ার্ড। তবে এর পরে আর তারা প্রতিপক্ষের গোলের মুখ খুলতে পারেনি।


এ দিন শৌভিক চক্রবর্তী, ক্লেটন সিলভাদের রিজার্ভ বেঞ্চে রেখেই দল নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোন। দিয়ামান্তাকসকে সামনে রেখে ও তাঁর পিছনে তালাল, নন্দকুমার, নাওরেম মহেশ সিং, সল ক্রেসপোকে রেখে দল সাজান তিনি। চার ডিফেন্ডারের রক্ষণে দুই বিদেশী হিজাজি মাহের, হেক্টর ইউস্তে ছাড়াও ছিলেন আনোয়ার আলি ও প্রভাত লাকরা। পরিবর্ত হিসেবে দ্বিতীয়ার্ধে নামেন লালচুঙনুঙ্গা, ক্লেটন সিলভা ও পিভি বিষ্ণু।


আগামী মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গল খেলতে নামবে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে, আগে যাদের কোচ ছিলেন ব্রুজোন। ওই দিনই পারো খেলবে লেবাননের নেজমে এসসি-র বিরুদ্ধে।


এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ ১৮ দলের টুর্নামেন্ট, যেখানে ১২টি ক্লাব পশ্চিম এশিয়া থেকে এবং ছ’টি পূর্ব এশিয়া থেকে অংশগ্রহণ করছে। পশ্চিম এশিয়ার ১২টি দলকে চারদলীয় তিনটি গ্রুপে (গ্রুপ এ থেকে সি) ভাগ করা হয়েছে এবং পূর্ব এশিয়ার ছ’টি দলকে দু’টি তিনদলীয় গ্রুপে (গ্রুপ ডি থেকে ই) ভাগ করা হয়েছে।


রাউন্ড-রবিন গ্রুপ পর্যায়ের পর আটটি দল কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছবে। গ্রুপ এ থেকে সি-র বিজয়ী এবং পশ্চিম এশিয়ার এই তিন গ্রুপের মধ্যে সেরা রানার্স-আপ দল শেষ আটে প্রবেশ করবে। এছাড়া গ্রুপ ডি এবং ই-র বিজয়ী ও রানার্স-আপও কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মঙ্গলবারের ম্যাচে জিততে পারলে তাদের শেষ আটে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে।


(তথ্য: আইএসএল মিডিয়া)


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: হারের হ্যাটট্রিক এড়াতে বদ্ধপরিকর মহামেডানের সামনে প্রথম জয়ের খোঁজে থাকা হায়দরাবাদ