কলকাতা: রবিবার, ১৮ অগাস্ট ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান (East Bengal vs Mohun Bagan) ডুরান্ড কাপের ডার্বিতে (Durand Cup Derby) বেনজির ছবি দেখার অপেক্ষায় ছিল গোটা রাজ্য, সারা দেশ। কারণ, রবিবার শতাব্দীপ্রাচীন ডার্বি মানে শুধু ফুটবল মাঠের দ্বৈরথ নয়, শোনা যেতে পারত প্রতিবাদের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর। RG কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে গোটা রাজ্য, রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশ, বিদেশ। সর্বস্তরে চলছে সমালোচনা, সঙ্গে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি।
আর এই পরিস্থিতিতে লাল-হলুদ ও সবুজ-মেরুন - দুই শিবিরের সমর্থকেরাই জোট বেঁধেছিলেন। 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস', 'বিচার চাই' প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, টিফো, পোস্টারে যুবভারতী ঢেকে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের সমর্থকদের। প্রস্তুতিও সারা হয়ে গিয়েছিল। একদিন সব ভেদাভেদ ভুলে মানবিক হতে চেয়েছিলেন দুই ক্লাবের লক্ষ লক্ষ সমর্থক। অথচ ডার্বির আগের দিন ডুরান্ড কাপের আয়োজক কমিটি জানিয়ে দিল, ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান ম্যাচ পরিত্যক্ত। দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে।
আর এতেই ক্ষোভে ঘৃতাহুতি হয়েছে যেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড়। ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান - দুই ক্লাবের সমর্থকেরাই সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়াল ভরিয়ে তুলেছেন প্রতিবাদে। রাজ্যের শাসক দল ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে স্লোগান তোলা হয়েছে, 'জোট বেঁধেছে বাঙাল-ঘটি, ভয় পেয়েছে হাওয়াই চটি'। অনেকেই লিখেছেন, প্রতিবাদের ভাষা আগাম পড়ে নিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল। আর সেই কারণেই বিরোধী কণ্ঠস্বর থামাতে চাওয়ার জন্য ডার্বি বন্ধের বেনজির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ডুরান্ড কাপের আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, ডার্বি ম্যাচের নিরাপত্তা দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই কারণেই ম্য়াচ বাতিল করা হল। দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে।
যদিও তাতে ক্ষুব্ধ ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান - দুই দলেরই সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিকভাবে মহিলা চিকিৎসকের নৃশংস হত্যার বিচার চেয়ে যে বার্তা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা থামিয়ে দিয়ে আদপে সমর্থকদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তোলা হল। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলতে থাকবে বলেও জানিয়েছে লাল-হলুদ ও সবুজ-মেরুন জনতা। যাঁরা বেনজিরভাবে এক হয়ে মাঠে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
আরও পড়ুন: 'এই রাক্ষসদের জন্য আইন বদলানো উচিত', RG কর কাণ্ড নিয়ে সরব ঋদ্ধিমান সাহা