ডর্টমুন্ড: ক্যামেরার লেন্স বারবার তাঁর দিকেই তাক করছিল। বয়স বেড়ে যায়, সময় কেটে যায়। কিন্তু তিনি মাঠে নামলে এখনও সবার নজর তাঁর দিকেই থাকে। তিনি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তুরস্কের বিরুদ্ধে ইউরো কাপের ম্য়াচে ৯৫ মিনিট মাঠে থাকলেন। গোল না পেলেও গোল মুখ তৈরি করলেন বাকিদের জন্য। পর্তুগাল যদিও তুরস্ককে হেসেখেলে হারাল ৩-০ ব্যবধানে। নিজেদের গ্রুপে টানা দুটো ম্য়াচে জিতে গেলে রবার্তো মার্তিনেজের দল। এফ গ্রুপে শীর্ষে চলে এল পর্তুগাল। ২ ম্য়াচ শেষে তাদের ঝুলিতে এখন ৬ পয়েন্ট। 


খাতায় কলমে এগিয়ে থেকেই এদিন মাঠে নেমেছিল পর্তুগাল। তুরস্কের বিরুদ্ধে এর আগে ছয়বারের সাক্ষাতে ছয়বারই জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল তারা। ইউরো কাপের মঞ্চে এই ম্য়াচের আগে তিনটি সাক্ষাত ছিল। চতুর্থ সাক্ষাতেও অঘটন ঘটলেই একবার ফলাফল অন্য় কিছু হতে পারত। এদিন ম্য়াচের শুরু থেকেই বারবার তুরস্কের বক্সে আক্রমণে শান দিতে থাকে মার্তিনেজের ছেলেরা। রোনাল্ডো স্ট্রাইকার পজিশনে খেললেও গোটা মাঠ জুড়েই খেললেন। দুদিকের উইং ধরে কখনও দৌড়ে আসছেন বার্নার্ডো সিলভা তো কখনও চিতার মত দৌড় দিচ্ছেন রাফায়েল লিয়াও। পর্তুগাল মোটামুটি এই ফর্মেশনেই প্রতি ম্য়াচে খেলে থাকে। এদিনও দুই উইং ধরে এসে রোনাল্ডোকে বল সাজিয়ে দেওয়াই ছিল লক্ষ্য। যদিও তুরস্কের কোচ প্রথমে রোনাল্ডোকে আটকানোর জন্য সেলিক ও আকায়দিনকে রেখে দিয়েছিলেন। তাঁরা প্রতি মুহূর্তে রোনাল্ডোকে গতি আটকে দেওয়ার জন্য সজাগ ছিলেন। যদিও ম্য়াচের প্রথমার্ধে ২১ মিনিটের মাথাতে সেই উইং থেকেই গোল আসে। বল নিয়ে দৌড়ে এসে রোনাল্ডোকে পাস দিতে গিয়েছিলেন লিয়াও। সি আর সেভেন বল রিসিভ করতে না পারায় পেছনেই ছিলেন সিলভা। জোড়ালো শটে বল জালে জড়ান এই মিডিও। 


এরপর ২৮ মিনিটের মাথায় নিজেদের ভুলের মাশুল দিতে হল তুরস্ককে। আকায়দিনের ভুলেই দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যায় পর্তুগাল। নিজেদের গোলরক্ষককে ব্যাকপাস দিচ্ছিলেন তুরস্কের ডিফেন্ডার। এদিকে গোলরক্ষক একেবারেই বলের লাইনে ছিলেন না। পেছনে দৌড়ে বল ধরতে ধরতেই বল গোললাইন পেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধে আর কোনও দল গোল করতে পারেননি। 


দ্বিতীয়ার্ধে সুযোগ পান রোনাল্ডো। একটি হেড মিস করলেও দ্বিতীয়বার নিজের সহজ গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। সামনে শুধু ছিলেন তুরস্কের গোলরক্ষক। কিন্তু পাশেই থাকা ব্রুনোকে পাস দিয়ে দেন সি আর সেভেন। নিজের গোলসংখ্য়া বাড়ানো নয়। দলের গোল পাওয়ার জন্য নিজের স্বার্থত্যাগ করলেন তারকা স্ট্রাইকার। ৫৫ মিনিটের মাথায় ব্রুনো পর্তুগালের হয়ে তৃতীয় গোল করেন। এরপর আর তুরস্ক ম্য়াচে ফিরতে পারেনি। শেষের দিকে বেশ কয়েকবার আক্রমণ করলেও পর্তুগালের শক্তিশালী ডিফেন্স ভেদ করতে পারেননি তুরস্কের স্ট্রাইকিং লাইন।