দোহা : চাপের মুখে কি ভাষা-বদল প্রতিবাদের ? বিশ্বকাপের মঞ্চে তাঁদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জাতীয় সংগীত না গেয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ইরান ফুটবলাররা। যার পরই সেদেশের তথা বিশ্বের জনগণের অধিকাংশেরই সমর্থন পেলেও দেশের মধ্যে প্রবল চাপে পড়েছিলেন তাঁরা।


ইরান সরকারের তরফে প্রকাশ্যে বা অন্তরালে রীতিমতো চাপের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল ইরানের ফুটবলারদের জন্য। ভেসে বেড়াতে শুরু করেছিল আশঙ্কা, যে দেশে ফিরলেই গ্রেফতার হতে পারেন ইরানের ফুটবলাররা। শেষমেশ অবশ্য চাপের মুখে পড়ে বিতর্ক থেকে দূরে থাকতে জাতীয় সংগীত গাইলেন ইরানের ফুটবলাররা। না বলা ভাল, জাতীয় সংগীত চলার সময় সামান্য ঠোঁট নেড়ে তাতে সামিল হলেন।


ওয়েলশে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে স্বপ্নের জয় পেয়েছে ইরান। গ্যারেথ বেলদের বিরুদ্ধে তাদের জয় নিয়ে যেমন চলছে আলোচনা, তেমনই কার্যত একইরকম তর্ক-বিতর্ক ইরানের ফুটবলারদের জাতীয় সংগীত গাওয়াতে সামিল হওয়া ঘিরেও। এদিন ওয়েলশ ম্যাচের প্রাক্কালে যখন জাতীয় সংগীত চলছে, তখন গ্যালারিতে দেখা যায় এক অদ্ভূত মিশ্র পরিবেশ।


একদিকে একদল ইরান সমর্থক নিজেদের জাতীয় সংগীত চলার সময় ব্যঙ্গের সুর তুলে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছেন দেশের সরকারের প্রতি। অন্যদিকে একদল কার্যত অঝোর নয়নে কেঁদে চলেছেন। হাতে জাতীয় পতাকা নাড়াতে নাড়াতে চোখের জলে ভেসে জাতীয় সংগীত গেয়ে শামিল হয়েছেন তাঁদের মতো করে প্রতিবাদে। প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাস ধরেই উত্তাল  ইরান।


গত সেপ্টেম্বরে ২২ বছরের মাশা আমিনির পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর পর থেকে প্রতিবাদে উত্তাল ইরান। হিজাব না পরার জেরে তাঁকে ইরানের নীতি পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে জেলে রেখেছিল বলেই অভিযোগ। মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই সেদেশের মহিলারা পোশাক-বিধি ও জোর করে চাপিয়ে দেওয়া একাধিক নিয়মনীতি নিয়ে সরব। যে প্রতিবাদ ইরানের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে বিশ্বের দরবারে। সাম্যের দাবিতে যে প্রতিবাদ শুধু মহিলাদেরই নয়, হয়ে ওঠে গোটা ইরানের জনগণের। যার পর বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রতিবাদের প্রতি সহমর্মিতার বার্তা দিতে ফুটবলারদের জাতীয় সংগীত না গাওয়া ঘিরে তৈরি হয় প্রবল তর্ক-বিতর্ক। যার সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা তৈরি হতে শুরু করে চাপের আবহ।


আরও পড়ুন- মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে খুনের হুমকি দিয়েছিল ড্রাগ পাচারকারীরা, আইসক্রিম বেচে জীবন কেটেছে ব্রাজিলের গোলদাতা রিচার্লিসনের