আবীর দত্ত, কলকাতা: বুকায়ো সাকা আর মার্কাস ব়্যাশফোর্ড নয়। এটা মানুষের গল্প। হার থেকে জেতার গল্প। আর না পারলে হাল ছেড়ে দেওয়া নয়। জবাব দেওয়ার অপেক্ষা। আর বড় মঞ্চে জবাব দেওয়া মানে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া। প্রমাণ করল বিশ্বকাপের ইরান বনাম ইংল্যান্ডের (Iran vs England) ম্যাচ। মনোবিদরা মনে করছেন, এটাই শিক্ষা। ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনি।


ইংল্যান্ডের হয়ে তাবড় তাবড় খেলোয়াড় বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করলেন। ভালো খেলেও গোল পেলেন না হ্যারি কেন, মেসন মাউন্টরা। কিন্তু জোড়া গোল করে মন জয় করে নিলেন বুকায়ো সাকা। দ্বিতীয়ার্ধে নেমে মাত্র ২৬ সেকেন্ডে গোল করে তাক লাগিয়ে দিলেন মার্কাস ব়্যাশফোর্ড। এই দুজনই আবার ২০২০ সালের ইউরো কাপে পেনাল্টি মিস করেছিলেন। হেরে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ইতালির কাছে শুধু হার নয়। দুই ফুটবলারকে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভয়ঙ্কর আক্রমণের শিকারও হতে হয়েছিল। কিন্তু ব়্যাশফোর্ড বলেছিলেন, "পেনাল্টিটা আমার ভাল হতে পারত।" কিন্তু ক্লাব ফুটবলে আর্সেনালের স্ট্রাইকার সাকা আর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার ব়্যাশফোর্ড ভাল ফল করলেও ইউরো কাপের সেই ক্ষত হয়তো থেকেই গিয়েছিল। সমালোচনার জবাব যেন ইরানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ম্যাচে দিলেন দুই ব্রিটিশ ফুটবলার।                                                                               


মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সব্যসাচী মিত্রর মতে, "এই ধরনের ফুটবলাররা সাইকোলোজিক্যাল ইমিউন অবস্থায় থাকে। রবার্ট ব্রুসের গল্পের যেন নায়ক এঁরা। হাল না ছাড়ার গল্প। এঁরা প্রত্যেকদিন খেলার সঙ্গে সঙ্গে স্নায়ুর যুদ্ধে উত্তীর্ণ হওয়ার লড়াইয়ের প্রশিক্ষনের মধ্যে থাকছেন। তাই ভেঙে পড়ার বা হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতেই পারেন না এঁরা। যেটা প্রত্যেকের শিক্ষণীয়। সাকারা জানেন যে, তাঁর একটা পেনাল্টি মিস আর একটা গোল একইরকমভাবে বিপুল জনপ্রিয় বা আলোচিত হবে।"


আবার মনোবিদ ও পি সিংহ বলছেন, "নতুন প্রজন্ম অনেক বেশি বাস্তব নিয়ে ভাবেন। চাপ নেওয়ার এই ক্ষমতাই প্রমাণ করে কে ভাল আর কে ভীষণ ভাল খেলোয়াড়। এটা জীবন যুদ্ধেও জরুরি। যতই খারাপ হোক বিশ্বাস থাকতেই হবে যে ঘুরে দাঁড়ানো যায়। শুধুমাত্র অধ্যায়ন সাহায্য করবে।"


সাকা ও ব়্যাশফোর্ড শুধুই বিশ্বকাপের প্রথম গোল পেলেন না। সমালোচনার জবাব ছিল একই সঙ্গে। সেই সঙ্গে ফিরে পেলেন আত্মবিশ্বাসও।


আরও পড়ুন: ঝাঁ চকচকে রুম, কাতারে মেসির অন্দরমহলে উঁকি মারবেন?