সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে মাঠের পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে ঘোষণা করা হল, দর্শকসংখ্যা ৫৮ হাজার ৯৩১। সঙ্গে পুলিশ, সাংবাদিক মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ৬০ হাজার। ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগানের মতো দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ নয়, ভারতীয় দলের খেলা দেখতে যুবভারতী স্টেডিয়ামে এত দর্শক, শেষ কবে দেখা গিয়েছে মনে করতে পারছেন না কেউই। কেউ কেউ বলছিলেন, অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপে হয়তো এত ভিড় দেখা গিয়েছিল।


উপলক্ষ্য, ভারত বনাম কুয়েত (India vs Kuwait Live) ম্যাচ। তবে সেটা ছাপিয়েও যেটা উঠে আসছিল, তা হল সুনীল ছেত্রীর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। অনেকে আশঙ্কা করছিলেন, সুনীলকে ঘিরে উন্মাদনার চোটে যেন ভারতের এই ম্যাচের গুরুত্ব চাপা না পড়ে যায়। বৃহস্পতিবার কুয়েতকে হারাতে পারলেই বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে ওঠার দিকে এগিয়ে যেত ভারত। বেঁচে থাকত ফুটবল বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হয়টে যেত সৌদি আরবে এএফসি এশিয়ান কাপের টিকিটও।


তবে সেই স্বপ্নপূরণ হল না ইগর স্তিমাচের ছেলেদের। ইতিহাস তৈরি করতে পারল না ভারতের জাতীয় ফুটবল দল। সল্ট লেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে ভারত বনাম কুয়েত ম্যাচ শেষ হল গোলশূন্যভাবে। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনকারী পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই কার্যত বিদায় ভারতের।


ম্যাচ শুরু হতে তখনও ঢের দেরি। ই এম বাইপাস কার্যত অবরূদ্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে, জাতীয় পতাকা হাতে মানুষের ঢল। সকলেরই গন্তব্য যুবভারতী স্টেডিয়াম। সেই ভিড়ে দেখা গেল অভিনেত্রী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-পুত্র তৃষাণজিৎকেও।


কিক অফের পর থেকেই গ্যালারি সম্মিলিত কণ্ঠে গান ধরল, 'বন্দে মাতরম...'। মাঠে উপস্থিত সকলের গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি। তবে ভারতের ফুটবলে সেই প্রাণ দেখা গেল না। বরং প্রথমার্ধে কিছুটা অগোছালই লাগল ভারতকে। বরং কুয়েতই বেশ কয়েকবার গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছিল।


ম্যাচের সেরা সুযোগ অবশ্য পেয়েছিল ভারতই। প্রথমার্ধের খেলা গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমণ করে ভারত। ম্যাচের বয়স তখন ৪৮ মিনিট। কুয়েতের গোলকিপারকে ওয়ান ওন ওয়ান পেয়ে গিয়েও গায়ে বল মারলেন রহিম আলি। হতাশ ভারতীয় সমর্থকেরা। ম্যাচের সেরা সুযোগ পেয়েছিলেন রহিমই। বাকি ম্য়াচে কোনও দলই গোল পায়নি।


এই ড্রয়ের ফলে ৫ ম্যাচে ভারতের পয়েন্ট হল ৫। ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কাতার। তাদের সঙ্গেই শেষ ম্যাচ ভারতের। সেই ম্যাচে ভারত জিতলে বা ড্র করলে অবশ্য খাতায়-কলমে পরের পর্বে যাওয়ার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকবে। সেক্ষেত্রে কুয়েত বনাম আফগানিস্তান শেষ ম্যাচ ড্র হতে হবে।


কাতারের বিরুদ্ধে কার্যত অসাধ্য সাধন করতে পারবে ভারত?


আরও পড়ুন: বাবা ব্যস্ত সিনেমার প্রচারে, মা অর্পিতাকে নিয়ে সুনীলের হয়ে গলা ফাটাতে মাঠে প্রসেনজিৎ-পুত্র


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।