সৌমিত্র কুমার রায়, কলকাতা: কলকাতা ময়দানেই তো ফুটবলে হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর। সবুজ মেরুন ক্লাবে সুব্রত ভট্টাচার্যের কোচিংয়ে খেলা শুরু করেছিলেন প্রথম। খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলেও। এরপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। ক্লাবের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের জার্সিতে খেলে ফেলেছেন ১৯টা বছর। ২০০৫ সালে যার শুরু হয়েছিল, আর আজ সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি হতে চলেছে। ছোট্ট পাহাড়ি ছেলেটা হয়ে উঠেছেন দেশের কিংবদন্তি ফুটবলার। নীল জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ম্য়াচ খেলেছেন। শুরুটা করেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, শেষটা করছেন কুয়েতের বিরুদ্ধে। আর শেষ ম্য়াচটা যখন এই তিলোত্তমাতেই, তখন এই শহর তাঁকে রাজকীয়ভাবে বিদায় জানাবে না, তা আবার হয় না কি!


যুবভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনেই আজ সন্ধেয় নামতে চলেছে ভারত-কুয়েত। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন ম্য়াচের গুরুত্ব আরও বাড়িয়েছে সুনীল সমাপ্তির আবহ। দেশের সেরা ফুটবলারের বিদায়বেলাকেও স্মরণীয় করে রাখতে কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছে না আইএফএ। সচিব অনির্বান দত্ত জানিয়েছেন, মোহনবাগান, মহমেডান তিন বড় ক্লাবের কর্তারা চাইছেন সুনীল ছেত্রীকে সংবর্ধনা দিতে। আইএফএ এই বিষয়ে জানিয়েছে এআইএফএফকে। মনে করা হচ্ছে অনুমতি মিলে যাবে। সুনীল ছেত্রীর একটি পোট্রেট দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হবে। এছাড়া আইএফএর তরফে জানানো হয়েছে যে স্টেডিয়ামের ঢোকার মুখে সুনীলের মুখোশ দেওয়া হবে প্রত্যেককে। আজ সন্ধেয় গোটা গ্যালারিতে হাজার হাজার সুনীল থাকবেন। 


বুধবার ভারতীয় দল অনুশীলন করতে এসেছিল যখন তখনই অসংখ্য সমর্থক যুবভারতী  স্টেডিয়ামের বাইরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন একবার তাঁদের প্রিয় নায়ককে দেখার জন্য। তিন ও চার নম্বর গেটের বাইরে দেখা গেল অসংখ্য টি শার্ট সুনীলের ছবি দেওয়া। যার বিশাল চাহিদা চোখে পড়েছে। আইএফএর তরফে জানানো হয়েছে যে বৃহস্পতিবার ম্য়াচের শুরুতে ও শেষে ড্রোনের মাধ্যমে পুষ্পবৃষ্টি করা হবে। এছাড়াও ম্য়াচের পর গোটা স্টেডিয়ামে হেঁটে প্রদক্ষিণ করবেন ভারতীয় ফুটবলের পোস্টার বয়। 


বাঙালি নন সুনীল। কিন্তু এই বাংলার কিংবদন্তি সুব্রত ভট্টাচার্যই সুনীলের প্রথম গুরু। বাঙালি সোনম ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেছিলেন ভালবেসে। কুয়েতের বিরুদ্ধে শেষ ম্য়াচে যখন খেলতে নামবেন সুনীল, তখন গ্যালারিতে উপস্থিত থাকবেন তাঁর বাড়ি ও শ্বশুর বাড়ির সদস্যরাও। আবেগ প্রবণ হবেন সুনীল? পেশাদার তিনি। হয়ত শেষ মুহূর্তে একটু ভেঙে পড়বেন। হয়ত বা তরুণদের কানে কানে একটা কথাই বলে যাবেন


আমার হল সাড়া....