বার্লিন: রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে গোটা মরশুমটাই স্বপ্নের মতো কেটেছে জুড বেলিংহ্যামের। গোল করেছেন, করিয়েছেন, লিগ জিতেছেন, জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগও। রিয়ালের সাদা জার্সিতে খুলে রেখে দেশের হয়ে ইউরোপ সেরার (UEFA Euro 2024) লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের সাদা জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন জুড বেলিংহ্যাম (Jude Bellingham)। দেশের জার্সিতেও সেই একই ছন্দে দেখা গেল তারকা ফুটবলারকে। গোটা ম্যাচে দাপট দেখালেন, গোলও করলেন ইংল্য়ান্ড তারকা। তাঁর গোলে ভর করেই সার্বিয়াকে হারাল থ্রি লায়ান্সরা।
ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট দেখায় ইংল্যান্ড। বল দখলের লড়াইয়ে তারা অনেকটাই এগিয়ে ছিল। সার্বিয়া শুরু থেকেই রক্ষণাত্মরক পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে। তবে তা সত্ত্বেও ১২ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে তারা। ডানদিক থেকে বুকায়ো সাকার ক্রস পাভলোভিচের গায়ে লেগে বেলিংহ্যামের জন্য একেবারে গোলের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দেয়। জোরাল হেডারে বেলিংহ্যাম সার্বিয়ার জালে বল জড়িয়ে দেন। পিছিয়ে পড়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দলকে ম্যাচে সমতায় ফেরানোর বড় সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন অধিনায়ক মিত্রোভিচ। তবে অল্পের জন্য তাঁর শট গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ভ্লাহোভিচের শট রুখে দেওয়া হয়।
গোটা প্রথমার্ধ জুড়েই সাকা দুরন্ত ছন্দে ছিলেন। তিনি একাধিক সুযোগ তৈরির চেষ্টাও করেন। তবে গোল হয়নি আর। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ভ্লাহোভিচের ক্রস থেকে ফিলিপ ম্লাডেনোভিচ গোল করার খুব কাছে চলে এসেছিলেন। তবে গোল আসেনি। সার্বিয়া একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও, তা প্রতিহত করতে সক্ষম হয় ইংল্যান্ড রক্ষণ। দুই দলই দ্বিতীয়ার্ধে গোলের একাধিক সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে সক্ষম হননি। শেষমেশ ম্যাচ ১-০ স্কোরলাইনেই ম্যাচ জিতে নেয় থ্রি লায়ান্সরা।
তবে বেলিংহ্যাম পারলেও, দলকে জেতাতে পারলেন না ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন (Christian Eriksen)। স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে গোল করেও, ৯০ মিনিটের লড়াই শেষে ১ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে হল ডেনমার্ককে। ২৪ বছর পর ইউরোর মূলপর্বে মাঠে নেমে ইয়ান ওব্ল্যাকদের এই ড্র কিন্তু বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এবারের ইউরোয় অংশগ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে জনসংখ্যার নিরিখে ক্ষুদ্রতম দেশ এখনও স্লোভেনিয়াই। টুর্নামেন্টের মূলপর্বে আজ অবধি পর্যন্ত একটিও ম্যাচ জেতেনি তারা। তবে ওব্ল্যাক, সেসকোরা নিশ্চয়ই সেই পরিসংখ্যান বদলে ফেলতে মরিয়া হবেন। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে তাদের এই পারফরম্যান্সে কিন্তু অনেককেই প্রভাবিত করেছে। ওব্ল্যাকরা সার্বিয়া এবং এরিকসন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে মাঠে নামবে।
ড্যানিশদের বিরুদ্ধে স্লোভোনিয়াই প্রথম বড় সুযোগটি পায়। তবে বেঞ্জামিন সেস্কো সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি। তাঁর দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঠিক তার মিনিট খানেক পরেই ক্রিশ্চিয়ান এরিকসন ডেনমার্ককে ম্যাচে এগিয়ে দেন। থ্রো থেকে জোনাস উইন্ডের সুন্দর ফ্লিক চেস্ট ডাউন করেন এরিকসন। বছর তিনেক আগে ইউরোতেই ম্যাচ চলাকালীন মাঠে লুটিয়ে পড়েছিলেন এরিকসন। তারপর কালকের ম্যাচে প্রত্যাবর্তন ঘটান তিনি। সেই ম্যাচে গোল পাওয়াটা নিঃসন্দেহে ড্যানিশ ফুটবলারের কাছে বিশেষ অনুভূতির ছিল।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে খেলা খুলে যায়। দুই দলই গোলের বড় সুযোগ পায়। তবে পিটার স্টোজ্যানোভিচ স্লোভিনিয়ার হয়ে নিজের হেডার তেকাঠির মধ্যে রাখতে পারেননি। সেস্কো নিজের শট পোস্টে মারেন। অপরদিকে, ডেনমার্ক ফরোয়ার্ড ব়্যাসমাস হয়ল্যান্ড শট রুখে দেন ওব্ল্যাক। তবে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া ডেনমার্ক শেষমেশ এরিক জ্যানসার গোলে সমতায় ফেরে। আর কোনও গোল না হওয়ায় ম্যাচ ড্রয়েই শেষ হয়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: পিছিয়ে পড়েও ওয়েঘর্স্টের গোলে পোল্যান্ডকে হারিয়ে উয়েফা ইউরো অভিযান শুরু নেদারল্যান্ডসের