কলকাতা: লিওনেল মেসির কলকাতা সফর। বিশ্বকাপজয়ীকে বরণ করে নিতে তৈরি ছিল কলকাতা। তাঁর দ্বিতীয় কলকাতা সফরকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সবরকম প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল।

Continues below advertisement

তবু ছন্দপতন। যুবভারতী স্টেডিয়ামে মেসিকে ভালভাবে দেখতে না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন দর্শকরা। ছোড়া হল জলের বোতল। ভাঙা হল চেয়ার। মেসিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই মাঠ থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাঙচুর চলে স্টেডিয়ামে। গ্রেফতার করা হয়েছে উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে। কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও। অভিযোগ, তিনি মাঠে মেসির সঙ্গে এমনভাবে ছিলেন এবং এমন ভিড় জমিয়েছিলেন যে, মেসিকে ভালভাবে দেখা থেকে বঞ্চিত হন দর্শকেরা।

এবার কি নাম না করে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক, ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে বিঁধলেন দলেরই রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ? সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন কুণাল। সেখানে তিনি বলেছেন, 'এরকম একটা লজ্জাজনক পরিস্থিতি কলকাতাতেই হল। মেসির তো খেলার কথা ছিল না। এত মানুষ মাঠে গিয়েছিলেন মেসিকে এক ঝলক দেখবেন বলে। মেসি যখন মাঠে ঘুরছেন, কেন এত মানুষ ঢুকে পড়ল? মেসি আসছেন কলকাতায়। স্বপ্নের নায়ক। মেসিকে দেখতে মাঠে এত লোক এসেছেন। মেসি যখন মাঠে ঘুরছেন, তখন কেন তাঁকে একটু সামলে রাখা হল না? কেন তাঁর নিজস্ব দেহরক্ষী দিয়ে একটু ফাঁকা জায়গা দেওয়া হল না? মানুষের দিকে তাকিয়ে তিনি হাত নাড়তেন। যাঁরা এত দামি টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে এসেছেন তাঁরা দু’চোখ ভরে দেখতেন। সেটা করা গেল না? এটুকু পরিকল্পনা করা গেল না? মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছনোর আগেই মেসিকে বেরিয়ে যেতে হচ্ছে?'

Continues below advertisement

এরপরই কুণাল বলেছেন, 'কিছু অতি হ্যাংলা লোক এমনভাবে সল্ট লেক স্টেডিয়ামে মেসিকে ঘিরে রাখলেন, যে অনেক দূর দূর থেকে পকেটের পয়সা দিয়ে দামি টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে আসা লোকেরা তাঁকেই দেখতে পেলেন না। আমরা নিন্দে করছি। এই হ্যাংলাগুলো যা করল, গোটা কলকাতার বদনাম করে ছাড়ল। মেসি খেলা দেখতেন, মেসিকে হয়তো পায়ে ফুটবল নিয়ে স্কিল দেখানোর কথা বলা হতো। মেসি পায়ে ফুটবল ছোঁয়াতে পারলেন না। আপনাদের ক্ষোভ ন্যায্য। তবে একটু সংযম দেখান। অন্য লোকে এর সুযোগ নিচ্ছে। আপনাদের ক্রীড়াপ্রেম লঘু হয়ে গিয়ে ব্যাপারটা আইনশৃঙ্খলায় চলে যাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ তো ক্রীড়াপ্রেমীদের ওপর লাঠিচার্জ করতে পারে না। রাজনৈতিক লোক ঢুকে গিয়ে চারটে ভাঙচুর করে দিলে সেই দায়টা পড়বে ফুটবলপ্রেমীদের ওপর। আপনাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করুন। এশিয়ার সেরা, ভারতের সেরা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি তো আমরা চাই না। আবেগকে সংযত করুন। কোনও ধরনের ভাঙচুর বা প্ররোচনায় পা দেবেন না।'

যোগ করেছেন, 'জল ছুড়েছেন কিছু দর্শক। জল ছোড়াটা হয়তো অন্যায়, উচিত নয়। আলাদা। কিন্তু তাদের ক্ষোভটা কী করে অস্বীকার করব?'