Mohun Bagan vs Mumbai City: মোহনবাগানের হয়ে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগেই প্রাক্তন দলকে হুঁশিয়ারি আপুইয়ার

ABP Ananda Updated at: 28 Feb 2025 07:16 PM (IST)
Edited By: Rishav Roy

Lalengmawia Ralte: গত মরশুম পর্যন্ত মুম্বই সিটি এফসি-র হয়ে খেলতেন মিজো মিডফিল্ডার লালেংমাউইয়া রালতে ওরফে আপুইয়া। কিন্তু এ মরশুমের আগে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টে যোগ দেন তিনি।

Mohun Bagan vs Mumbai City: মোহনবাগানের হয়ে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগেই প্রাক্তন দলকে হুঁশিয়ারি আপুইয়ার

প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে এক চুলও জমি ছাড়তে নারাজ তারকা মিডফিল্ডার (ছবি: আইএসএল এক্স)

NEXT PREV

মুম্বই: গত মরশুম পর্যন্ত তিনি ছিলেন যে ক্লাবে, শনিবার সেই মুম্বই সিটি এফসি-র ঘরের মাঠে তাদের প্রতিপক্ষ মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের (Mohun Bagan Super Giant vs Mumbai City FC) জার্সি গায়ে নামবেন লালেংমাউইয়া রালতে ওরফে আপুইয়া (Lalengmawia Ralte)।











গত মরশুম পর্যন্ত মুম্বই সিটি এফসি-র হয়ে খেলতেন ভারতীয় দলের এই নির্ভরযোগ্য মিজো মিডফিল্ডার। কিন্তু এ মরশুমের আগে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টে যোগ দেন তিনি। সবুজ-মেরুন বাহিনীর মাঝমাঠের নির্ভরযোগ্য প্রহরী হয়ে উঠেছেন তিনি।

আপুইয়ার প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, যখন মুম্বই সিটি এফসি বেশ চাপের মুখে এবং তাঁর বর্তমান দল মোহনবাগানের লিগশিল্ডজয়ের লক্ষ্য পূরণ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নামা নিয়ে মিজো মিডফিল্ডার বলেন, “পুরনো ক্লাবের বিপক্ষে খেলাটা সব সময়ই বিশেষ অনুভূতির হয়, কারণ আমি সেখানে দুই বছর কাটিয়েছি। তাই আমার জন্য তাদের বিরুদ্ধে খেলা সত্যিই বিশেষ ব্যাপার। মুম্বই ছিল আইএসএলে আমার দ্বিতীয় দল এবং তারা আমাকে একজন ভাল খেলোয়াড় হয়ে উঠতে অনেক সাহায্য করেছে, যার ফলে আমি এখন মোহনবাগানকে সাহায্য করতে পারছি। তারা আমার ফুটবলজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ”।

তবে প্রাক্তন ক্লাব বলে তাদের ছেড়ে দিতে চান না আপুইয়া। বলেন, “যদিও তারা এখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তার মানে এই নয় যে আমরা এই ম্যাচকে হালকাভাবে নেব বা তাদের জিততে দেব। সেটা কখনওই হবে না। অন্য যে কোনও প্রতিপক্ষের মতো আমরা তাদের মুখোমুখি হব। আমাদের লক্ষ্য সব সময়ই জয় এবং সেই চেষ্টাই করব”।

শিল্ডজয়ের লক্ষ্য পূরণ হয়ে গেলেও এখানেই থেমে যেতে রাজি নন আপুইয়া। বাকি দুই ম্যাচেও জিততে মরিয়া তিনি ও তাঁর দল। বলেন, “জয় ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমরা ইতিমধ্যেই শিল্ড জিতে নিয়েছি, কিন্তু চ্যাম্পিয়নশিপ এখনও বাকি। তাই আমরা ছন্দ ধরে রাখতে চাই। এখন যদি আমরা কোনও ম্যাচ হেরে যাই, তা হলে সেমিফাইনালে দলের মনোবল কমে যেতে পারে। এ জন্য জয় অব্যহত রাখা খুবই জরুরি। এছাড়াও, যেহেতু আমরা একাধিক নজির গড়ছি—সবচেয়ে বেশি জয়, সবচেয়ে বেশি ক্লিন শিট—আমরা সেই ধারাবাহিকতাও বজায় রাখতে চাই। এটাই আমাদের এবং প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য প্রধান অনুপ্রেরণা। তাই প্রতিটি ম্যাচ জেতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য”।

এর আগে মুম্বই সিটি এফসি-র জার্সি গায়েও লিগশিল্ড জিতেছেন তিনি। এ বার জিতলেন সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে। তবে মুম্বইয়ের সঙ্গে শিল্ড জয়কেই এগিয়ে রাখছেন আপুইয়া। কেন, তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “সত্যি কথা বলতে, যখন মুম্বইয়ের সঙ্গে শিল্ড জিতেছিলাম, তখন আমরা এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলাম। আর এখন খেলব চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এ। স্বীকার করতেই হবে, সেই সময়টা আরও বিশেষ ছিল, যখন নেইমারের বিপক্ষে খেলার সুযোগ ছিল, একই টুর্নামেন্টে রোনাল্ডোর মতো খেলোয়াড়রা ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-ও অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে নেইমারের বিপক্ষে খেলা এবং এমন বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে একই প্রতিযোগিতায় থাকা আরও বিশেষ অনুভূতি দেয়”।

গত রবিবার ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচটিকেই চলতি লিগে সেরা আখ্যা দেন তিনি। বলেন, “আমি মনে করি শেষ ম্যাচটাই সবচেয়ে ভাল, যেখানে আমরা শিল্ড জিতেছি। কারণ, আমি শুধু আক্রমণে নয়, রক্ষণেও দলকে অনেক সাহায্য করেছি। আমি অনেক আক্রমণ থামিয়েছি। সবাই মোহনবাগানের দুর্দান্ত রক্ষণের কথা বলছে, কিন্তু যদি আপনি পরিসংখ্যান দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন আমাদের ডিফেন্ডারদের বিশ্বমানের পরিসংখ্যান রয়েছে”।

নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত ও খুশি আপুইয়া বলেন, “আমার ট্যাকলের সংখ্যা আমাদের বেশিরভাগ ডিফেন্ডারের চেয়েও দ্বিগুণ। যদি আপনি সত্যিই পরিসংখ্যান দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, এটাই আমার দলের জন্য বড় অবদান। আমি অনেক কাউন্টার-অ্যাটাক থামিয়েছি, গোল বাঁচিয়েছি এবং খুব কম ভুল করেছি। আমার কাছে এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, শুধু আক্রমণে নয়, রক্ষণেও দলকে অনেক সহায়তা করেছি”।

তাঁর ও দলের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য পরিবার ও সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞ আপুইয়া। বলেন, “শিল্ডজয়ের পর আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, আর পরিবারের কয়েকজন সদস্য এখানে আমার সঙ্গেও আছেন। তারা বিশেষভাবে এই ম্যাচ দেখতে এসেছেন। আমি মনে করি, তারা আমার সাফল্যের সবচেয়ে বড় কারণ। কারণ তাদের ছাড়া, আমি কখনওই এমন একটি জায়গায় আসতে পারতাম না। তাই, তারা-ই আমার প্রেরণা এবং আমার সাফল্যের মূল কারণ”।

সমর্থকদের নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “ওরা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ৯০ মিনিট ধরে গ্যালারি থেকে সমর্থকদের চিৎকার ও উচ্ছ্বাস আমাদের জন্য এক অতিরিক্ত প্রেরণা। প্রতিটি ফুটবলারই চায় যে যত বেশি সম্ভব দর্শক তাকে সমর্থন করুক। আমাদের জন্য সমর্থকরা শুধু অনুপ্রেরণা নয়, বরং আমাদের সাফল্যের অন্যতম বড় কারণ। বিশেষ করে ঘরের মাঠে আমরা দারুণ ফলাফল করেছি, আর তার পিছনে সমর্থকদের বিশাল অবদান রয়েছে। এটাই আমাদের জয়ের মূল কারণগুলোর একটি। তাই আমি তাদের আমন্ত্রণ জানাই, যেন তারা শেষ ম্যাচেও একইভাবে আমাদের পাশে থাকে। আমি চাই তারা আমাদের সমর্থন করুক। আমরা যেন একসঙ্গে আবার ট্রফি জিততে পারি”।

দলের প্রায় সব পজিশনের ফুটবলাররাই গোল করলেও এখনও তাঁর পা থেকে একটিও গোল আসেনি। এই প্রসঙ্গে আপুইয়া বলেন, “আমি মনে করি, গোল করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে গোল না খাওয়াটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, গোল অক্ষত রাখা গোল করার মতোই জরুরি। আমার দলের জন্য যে ভূমিকাটি আমি পালন করেছি, সেটি মূলত রক্ষণ সামলানোর। আমি মনে করি, সেই দায়িত্ব আমি ভালভাবেই পালন করেছি”।

গোল না করা নিয়ে তিনি যোগ করেন, “যদি কেউ আশা করে যে আমি গোল করব এবং সেই কারণে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে প্রতিপক্ষকে গোল করার সুযোগ দেব, আমি তা করতে পারি। কিন্তু আমার মতে, গোল না খাওয়াটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দলে উইঙ্গার এবং স্ট্রাইকাররা আছেন, যাদের কাজ গোল করা—এটা একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের কাজ নয়। তবে যদি সত্যিই দরকার পড়ে, আমি সেই ঝুঁকিও নিতে রাজি আছি”।

লিগ পর্ব শেষ করেই তাঁদের অনেককেই যেতে হবে জাতীয় প্রস্তুতি শিবিরে আসন্ন একজোড়া আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য। একই সঙ্গে ক্লাব ও দেশের হয়ে খেলা কতটা কঠিন, তা জানতে চাইলে আপুইয়া বলেন, “কখনও কখনও আমাদের পক্ষ্যে এটা সত্যিই কঠিন হয়ে যায়। আমরা ক্লাবের হয়ে খেলছি, এবং ক্লাবের দায়িত্ব শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় দলে যোগ দিতে হয়। তাই আমাদের খুব বেশি ছুটি পাওয়ার সুযোগ থাকে না”।

তবে এর ভাল দিকও আছে বলে মনে করেন তিনি। বলেন, “আমি মনে করি, এটা আমাদের জন্য একটা সুবিধা। কারণ এতে আমাদের শরীর ভাল অবস্থায় থাকে এবং ম্যাচ ফিটনেস বজায় থাকে। যদিও আমরা পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর সুযোগ পাই না, তবে আমরা আরও বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা অর্জন করি। ইউরোপীয় খেলোয়াড়দের যে সুবিধা থাকে, সেটাই আমরা বেশি ম্যাচ খেলে অর্জন করছি, যা আমাদের জন্য একটা বড় ইতিবাচক দিক”।











(তথ্য: আইএসএল মিডিয়া)


আরও পড়ুন: মুম্বই সিটির ঘরের মাঠে প্রথম জয়ের খোঁজে লিগশিল্ডজয়ী মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট 

Published at: 28 Feb 2025 07:16 PM (IST)

- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -

© Copyright@2025.ABP Network Private Limited. All rights reserved.