কলকাতা: কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby) জিতে লিগ টেবলের শীর্ষে উঠেও মোহনবাগান )Mohun Bagan Super Giant) কোচের কপালে দুশ্চিন্তার রেখা দেখা যাচ্ছে কেন? চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে ৩-১ গোলে হারানোর পরে যখন তাদের শিবিরে চলছিল আনন্দোল্লাস, তখন সাংবাদিক বৈঠকে এসে তাঁর দুশ্চিন্তার কারণ জানিয়ে গেলেন সবুজ-মেরুন কোচ আন্তোনিও হাবাস (Antonio Habas)।
রবিবাসরীয় যুবভারতীতে ম্যাচের প্রথমার্ধের পুরোটাই রীতিমতো দাপুটে ফুটবল খেলে মোহনবাগান যেখানে চারটি শট গোলে রাখে, সেখানে ইস্টবেঙ্গল একটির বেশি শট তেকাঠির মধ্যে রাখতে পারেনি। এই সময়ে সবুজ-মেরুন বাহিনী ছ’টি কর্নার আদায় করে নিলেও ইস্টবেঙ্গল একটিও পারেনি। এই দুই পরিসংখ্যানেই ম্যাচে মোহনবাগানের আধিপত্য প্রমাণ করে দেয়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ছবিটা পাল্টে যায়।
দুই অর্ধের পারফরম্যান্সে এত ফারাক কেন, এই প্রশ্নই ভাবিয়ে তুলছে হাবাসকে। রবিবার ম্যাচের পরে তিনি বলেন, 'প্রথমার্ধের খেলা যদি বিশ্লেষণ করেন, তা হলে দেখবেন, আমরা তখন আরও গোল পেতে পারতাম। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ছবিটা পুরো বদলে গেল। আমরা তখন শুধু ডিফেন্স করতে ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু তখনও আমাদের আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা উচিত ছিল। প্রতিপক্ষকে তখনও চাপে রাখা প্রয়োজন ছিল। জানি না কেন এমন হল। বিরতিতে কিন্তু ছেলেদের বলেছিলাম দ্বিতীয়ার্ধেও প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে হবে। কিন্তু জানি না, কেন ওরা তা পারল না। তবে আমাদের এই নিয়ে আরও পরিশ্রম করতে হবে ও উন্নতি করতে হবে।'
এক সময়ে হাবাসের গায়ে রক্ষণাত্মক কোচের তকমা সেঁটে দিতে চেয়েছিলেন কিছু মানুষ। কিন্তু তখনও হাবাস বলেছিলেন, তিনি তা নন। রবিবার প্রথমার্ধে মোহনবাগানের আক্রমণে ঝড় তোলার প্রসঙ্গ উঠতেই হাবাস পুরনো দিনের কথা টেনে এনে বলেন, '২০১৯-২০-তে আমার দলকে সবাই রক্ষণাত্মক দলের তকমা দিয়ে দিয়েছিল। আমি নাকি শুধু রক্ষণাত্মক ফুটবলই খেলাই। এখন আমার দল যখন আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছে, তখনও কেন প্রশ্ন উঠছে জানি না। ২০১৫-য় এর চেয়েও বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছিল আমার দল। যখন আক্রমণাত্মক খেলার দরকার পড়ে তখন তো সে রকম খেলতেই হবে। আবার যে ম্যাচে রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলা প্রয়োজন, তখন ডিফেন্স করতেই হবে।'
সারা ম্যাচে টানা আক্রমণাত্মক খেলে যাওয়াও যে সম্ভব নয়, তা জানিয়ে হাবাস বলেন, “শুধুই আক্রমণাত্মক বা শুধুই রক্ষণাত্মক তো কোনও ফুটবল ম্যাচে খেলা সম্ভব নয়। সে জন্যই ট্রানজিশন দরকার। ডিফেন্স ও অ্যাটাক সমানভাবে করে যেতে হয়। তা ছাড়া মাত্র তিনজন সেন্টার ব্যাককে দিয়ে কখনও রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলা যায় না। অন্তত চার-পাঁচজন লাগে সেখানে। খেলা শুরুর সময় আমরা একটা ছকে দলকে সাজাই ঠিকই। কিন্তু রেফারি কিক অফের বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই তা বদলে যায়। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রকমের ফরমেশন তৈরি হয়ে যায়। ৪-৩-৩-এ শুরু করলে কোনও দল সারা ম্যাচে তা বজায় রাখতে পারে না। রক্ষণাত্মক ফুটবল খেললে তা কখনও ৪-৫-১-এ এসেও দাঁড়ায়। প্রয়োজন মতো ছক ও সিস্টেমে বদল করে খেলতে হয়। আমি সেটাই করাই।'
এ দিন মোহনবাগান গোলরক্ষক বিশাল কাইথ অসাধারণ কিপিং করেন। ক্লেটন সিলভার পেনাল্টি কিক ছাড়াও ক্লেটনেরই একটি অবধারিত হেডে গোলে ঢোকার আগে আটকেও দলকে বাঁচান তিনি। তাঁর প্রশংসা করে এ দিন সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, 'আমাদের দলের গোলকিপার অসাধারণ। ও আজ অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। প্রথম ৪৫ মিনিটে আমরাই ভাল খেলেছি। পরের ৪৫ মিনিটও সেই খেলাটা ধরে রাখা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা পারিনি। এই জায়গাটাতে আরও উন্নতি করতে হবে আমাদের।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে
আরও পড়ুন: