কলকাতা: হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে জিতে মাঠ ছেড়ে বেরনোর পরেই কি কলকাতা ডার্বির গ্রহে ঢুকে পড়ল মোহনবাগান শিবির (Mohun Bagan Super Giants)? সম্ভবত তাই। হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে জয়ের ফলে অর্জন করা আত্মবিশ্বাস যে আসন্ন কলকাতা ডার্বিতেও তাদের শক্তি জোগাবে, এই ব্যাপারে একমত মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের কোচ হোসে মোলিনা (Jose Molina) ও তাঁর দলের সেরা উইঙ্গার লিস্টন কোলাসো।


আগামী ১১ জানুয়ারি চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দ্বিতীয় বড় ম্যাচের আগে বৃহস্পতিবারের জয় মোহনবাগানকে বাড়তি অক্সিজেন জোগালেও ইস্টবেঙ্গল যে ভাবে ক্রমশ ছন্দে ফিরছে, তাতে ডার্বিতে তাদের লড়াই কঠিন হবে বলে মনে করেন লিস্টন।


বৃহস্পতিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হায়দরাবাদ এফসি-কে তিন গোলে হারানোর পরে ম্যাচের সেরা তারকা লিস্টন কোলাসো সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রতিটি জয়ই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি জয়ই ভাল খেলার প্রেরণা জোগায়। ডার্বি একটা অন্য ধরনের ম্যাচ। ফুটবলার, সমর্থক সবার কাছেই অন্য রকমের। ইস্টবেঙ্গল যে ভাবে খেলছে, তাতে আমাদের কাছে ম্যাচটা বেশ কঠিন হবে। কিন্তু আজকের মতো আমরা কোচের নির্দেশ মেনে খেলতে পারলে ওই ম্যাচেও পয়েন্ট পেতে পারি। এই ম্যাচে সাফল্য-ব্যর্থতা আমাদের ওপরই নির্ভর করছে। আপাতত আজকের জয়টা উপভোগ করতে চাই আমরা'।


লিস্টনদের স্প্যানিশ কোচ হোসে মোলিনার মাতাতেও ঢুকে পড়েছে ডার্বির ভাবনা। তিনিও বলেন, 'এর পর আমাদের সামনে বড় ম্যাচ। তার আগে বেশ কয়েক দিন ছুটি আছে। সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে। সব বিভাগেই উন্নতি করতে হবে। আমরা ভাল দল ঠিকই। কিন্তু নিখুঁত নই। সব জায়গাতেই এখনও উন্নতির অবকাশ আছে। সেরা দল হয়ে উঠতে গেলে সব দিক দিয়েই ক্রমশ উন্নতি করে যেতে হবে'।


ডার্বি নিয়ে তিনি আরও বলেন, 'আশা করি, ৯-১০ দিনের ছুটিতে আমাদের চোট পাওয়া খেলোয়াড়রা সেরে উঠবে। তবে ইস্টবেঙ্গলেরও চোটের তালিকায় অনেকেই আছে। আমাদের খেলোয়াড়দের প্রত্যেককেই সুস্থ করে তুলতে হবে। আশা করি, ডার্বিতে সবাইকেই দলে পাব। কারণ, ডার্বি জিতে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই আমরা'।


বৃহস্পতিবারের জয় নিয়ে মোলিনা বলেন, 'অনেক সুযোগ পেয়েছি আমরা। হাদরাবাদও পেয়েছে। তবে আমাদের ছেলেরা দুর্দান্ত খেলেছে। আরও গোল করতে পারতাম আমরা। তবে তিন গোলে জেতা মোটেই খারাপ নয়। এ ভাবেই ক্রমশ আমরা চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে এগোব'।


লিস্টনের ব্যাখ্যা, 'আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেছি আজ। আমাদের যে ভূমিকা পালন করতে বলা হয়েছিল, আমরা প্রত্যেকেই তা যথাযথ ভাবে পালন করেছি। দলের প্রত্যেকেই নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে। কারণ,আমাদের দলে সব পজিশনেই সুস্থ প্রতিযোগিতা আছে। আমার পজিশনেও খেলার জন্য অনেকে অপেক্ষায় রয়েছে। আমি খারাপ খেললে তারা আমার জায়গায় চলে আসবে। তাই প্রতি ম্যাচেই আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। কোচও আমাদের উজ্জীবিত করেন ভাল খেলার জন্য'।


এ দিন দলের লক্ষ্যে থাকা আটটি শটের মধ্যে পাঁচটিই ছিল লিস্টন কোলাসোর। কিন্তু তাঁর সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান হায়দরাবাদের গোলকিপার অর্শদীপ সিং, যিনি ছ’টি প্রায় অবধারিত গোল সেভ করে দলকে বড় হারের হাত থেকে বাঁচান। গোল করতে না পারলেও টম অলড্রেডের গোলে অ্যাাসিস্ট করতে পেরে খুশি লিস্টন। বলেন, 'গোল করতে পারিনি তো কী হয়েছে, একটা গোলে অ্যাসিস্ট করে, দলকে তিন পয়েন্ট এনে দিতে পেরেই আমি খুশি। গোলের সুযোগ হাতছাড়া হলে তো হতাশা আসেই। তবে যা হয়ে গিয়েছে, তা ভুলে গিয়েছি। এখন পরের ম্যাচের কথা ভাবা শুরু করে দিয়েছি। ওই ম্যাচেও ভাল খেলতে হবে'।


দলের মোট ২৯টি গোলের মধ্যে দশটিই করেছেন ডিফেন্ডাররা। এই প্রসঙ্গে লিস্টন বলেন, 'আসলে আমাদের অনুশীলনে সেটপিসকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়। তারই প্রতিফলন দেখা যায় ম্যাচে। আমরাই একমাত্র দল যারা গোলের জন্য শুধু স্ট্রাইকারদের ওপর নির্ভর করি না। খেলাটা তো এগারোজনের। গোলকিপার ছাড়া যে কেউ গোল করতে পারলে তো সেটা দলের পক্ষেই ভাল'।


(তথ্য: আইএসএল মিডিয়া)


আরও পড়ুন: আবেদনপত্র পাঠাতে দেরি! বিসিসিআই-এর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না সিএবি