নয়াদিল্লি: মায়ানমারের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে হিরো ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট শুরু করল আয়োজক ভারত। ১-০ ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিল সুনীল ছেত্রীর দল। দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন অনিরুদ্ধ থাপা। 


বুধবার ইম্ফলের খুমান লম্পক স্টেডিয়ামে প্রায় ৩০ হাজার সমর্থকের সামনে ভারত দাপুটে ফুটবল খেললেও মায়ানমারও প্রায়ই পাল্টা আক্রমণে উঠে ভারতীয় গোলকিপার অমরিন্দর সিং ও ডিফেন্ডারদের কড়া পরীক্ষার মুখে ফেলে। সারা ম্যাচে ভারত যেখানে ছ’টি গোলমুখী শট নেয়, সেখানে মায়ানমারের দু’টি শট ছিল গোলে। অমরিন্দর সিং দুর্দান্ত দক্ষতায় অবধারিত একাধিক গোল বাঁচাতে না পারলে ‘ক্লিন শিট’ রেখে মাঠ ছাড়া হত না ভারতের।


এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল শুরু করে ভারত। ১০ মিনিটের মাথাতেই থাপার কাছ থেকে বল পেয়ে সুনীল গোলের সামনে থেকে হেড করেন, কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হন। ১৮ মিনিটের মাথায় মায়ানমারের বক্সের মধ্যে সুনীলকে পিছন থেকে লাথি মারা হলেও রেফারি তাতে পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি। ভারতীয়রা জোরালো আবেদন করলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। অবশ্য রিপ্লে-তে দেখা যায় তাঁকে আঘাত করার সময় সুনীলের পায়ে বল ছিল না।


২৩ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত সেভ করেন অমরিন্দর। না হলে ম্যাচের প্রথম গোলটা তারাই পেয়ে যেত। ডানদিক থেকে ফিও উইন-এর বিপজ্জনক ক্রস ভারতের গোলে ঢোকার মুখে তা বিপদসীমার বাইরে বের করে অমরিন্দর। ৩৬ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে ফের এক জোরালো গোলমুখী শট মারেন অউঙ থু। বারের নীচ দিয়ে সেই বল গোলে ঢোকার ঠিক আগের মুহূর্তে তালু দিয়ে বল গোলের ছাদে পাঠিয়ে দেন অমরিন্দর।


৩২ মিনিটের মাথায় ফের একটি সুবর্ণ সুযোগ পান সুনীল। লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে তাঁর মার্কারকে ধোঁকা দিয়ে বক্সের মধ্যে বল বাড়ান সুনীলের উদ্দেশ্যে। কিন্তু তিনি গোলের সামনে থেকে যে শট নেন, তা ছিল খুবই দুর্বল এবং মায়ানমার গোলকিপার নাইঙ তা অনায়াসে দখলে নিয়ে নেন। ৪২ মিনিটের মাথায় ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলের দিকেই হেড করে ফেলেছিলেন সুনীল। কিন্তু অমরিন্দর ফের একবার তাঁর অনবদ্য ক্ষিপ্রতা দিয়ে দলকে বাঁচান।


অবশেষে ম্যাচের একমাত্র গোলটি পান চেন্নাইন এফসি-র মিডফিল্ডার অনিরূদ্ধ থাপা। প্রথমার্ধের এক মিনিটের স্টপেজ টাইমে ডানদিক দিয়ে ওঠা রাহুল ভেকের ক্রস মায়ানমারের এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করতে গিয়ে গোলের দিকে বল ঠেলে দেন। গোলের সামনে ছিলেন থাপা। তিনি সেই বল গোলে ঠেলে দিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি (১-০)। এই নিয়ে ভারতের হয়ে চতুর্থ গোল করলেন ২৫ বছর বয়সি থাপা।


দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল শোধের সুযোগ পেয়ে যায় মায়ানমার। কিন্তু গোলমুখ খুলতে পারেনি তারা। এদিন সুনীল ছেত্রীকে কড়া পাহাড়ায় রাখেন মায়ানমারের ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে মায়নমারের খেলোয়াড়দের বেশ ক্লান্ত দেখায়। ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে ডানদিক থেকে হাওয়ায় ভাসানো মাপা ক্রস পাঠিয়ে ঋত্বিককে গোলের সুযোগও তৈরি করে দেন মনবীর। কিন্তু ঠিকমতো বল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেননি তিনি। ভারতকে এক গোলে জয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।