কলকাতা: প্রয়াত প্রাক্তন ফুটবলার প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়। মোহনবাগানের হয়ে দীর্ঘদিন খেলেছিলেন তিনি। সবুজ-মেরুন শিবিরের অধিনায়কও হয়েছিলেন। হাওড়ার শিবপুরে বাড়ি। পায়ে জোরাল শট ছিল। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দূরপাল্লার শটে গোল করেছিলেন। যে গোলের কথা এখনও ময়দানে সকলের মুখে মুখে ফেরে। মোহনবাগান ক্লাব তাঁকে জীবনকৃতি সম্মান দিয়েছিল। প্রণবের বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।


ফুটবল ছাড়া হকিও খেলেছেন। চুনী গোস্বামী, জার্নেল সিংহদের সঙ্গে খেলেছেন প্রণব। পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বড়সড় কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না তাঁর। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।


টানা ১২ বছর মোহনবাগানের জার্সি পরে খেলেছেন প্রণব। গত বছর তাঁকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার দেয় মোহনবাগান। এক বছর দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। সুঠাম চেহারা। দেখতে ছিল অনেকটা ইউরোপীয় ফুটবলারদের মতো। মোহনবাগান ক্লাবের হয়ে হকিও খেলেছিলেন প্রণব। হাওড়ার শিবপুরে বাড়ি হলেও থাকতেন পার্কসার্কাসের বেনিয়াপুকুরে।


ক্যালকাটা ক্রিকেট অ্যান্ড ফুটবল ক্লাব (সিসিএফসি)-র সদস্যও ছিলেন প্রণব। ফুটবল মাঠে তাঁকে দেখা যেত লেফট আউট পোজিশনে। ফুটবল কেরিয়ারে বহু স্মরণীয় ম্যাচ খেলেছেন। দুই প্রধানের ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন বহুবার। ১৯৬৯ সালে আইএফএ শিল্ড ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মোহনবাগান। সেই ম্যাচে একটি গোল করেছিলেন প্রণব। ম্যাচের শেষ গোলটি ছিল তাঁর করা। সেই গোলই ইস্টবেঙ্গলের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা শেষ করে দিয়েছিল।


চুনী গোস্বামী, জার্নেল সিংহদের মতো কিংবদন্তিদের পাশাপাশি নঈমুদ্দিন, সুধীর কর্মকারদের সঙ্গে খেলেছেন প্রণব। প্রবাদপ্রতিম কোচ অমল দত্তের প্রশিক্ষণে খেলেছেন। অমল দত্তের ভীষণ প্রিয় ছাত্র ছিলেন প্রণব। তাঁকে নিয়ে একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষা করেছিলেন অমল দত্ত। বিভিন্ন পোজিশনে খেলিয়েছিলেন। সব ভূমিকাতেই সফল হন প্রণব।


খেলা ছাড়ার পর কোচিংয়ে আসেননি। তবে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত কোচ রবি রবসনের কাছে কোচিংয়ের কোর্স করেছিলেন প্রণব। পারিবারিক সূত্রে খবর, তাঁর পুত্র ও কন্যা দুজনই লন্ডন নিবাসী। তাঁরা শেষকৃত্যে আসতে পারবেন কি না নিশ্চিত নয়। প্রণবের মৃত্যুতে ময়দানে গভীর শোকের ছায়া।