নয়াদিল্লি: কুস্তি সংস্থার নির্বাচনে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ শরন সিংহ ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিংহের জয়ের পরই ক্ষোভে অবসর গ্রহণ করেছিলেন সাক্ষী মালিক। এরপর নিজের পদ্মশ্রী ফিরিয়েছিলেন বজরঙ্গ পুনিয়া। বীরেন্দ্র সিংহ যাদবও পদ্মশ্রী ফিরিয়েছিলেন। এবার অর্জুন পুরস্কার ও খেলরত্ন সম্মান ফিরিয়ে দিলেন বিনেশ ফোগত। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া এক্স ও কু হ্যান্ডেলে এই বিষয়ে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোলা চিঠিও লিখেছেন বিনেশ।


 






তাঁদের লড়াইটা ছিল ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের (Brij Bhusan Saran Singh) বিরুদ্ধে। গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল, দেশের মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থা করেছেন ব্রিজভূষণ। প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন দেশের পদকজয়ী পালোয়ানরা।


এরপরও অবশ্য দেশের প্রথম সারির কুস্তিগীরদের মন ভাল ছিল না। কারণ, নির্বাচনে ৪০-৭ ভোটে জিতে জাতীয় কুস্তি সংস্থার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন সঞ্জয় সিংহ। যাঁর আরেক পরিচয়, তিনি ব্রিজভূষণের বিজনেস পার্টনার। খুবই ঘনিষ্ঠতা রয়েছে দুজনের। তাহলে কি বকলমে ব্রিজভূষণই চালাবেন জাতীয় হকি সংস্থা? পালোয়ানদের অন্তত সেরকমই আশঙ্কা।


ক্ষোভে ফুঁসছেন বজরঙ্গ পুনিয়া। বলেছেন, 'আমরা সত্যের জন্য লড়াই করছিলাম। মহিলাদের সম্মানের জন্য লড়াই করছিলাম। তা নাহলে আমরা সক্রিয় অ্যাথলিট। দেশের জন্য পদক জয়ই আমাদের কাছে প্রাধান্য পায়। আমি মনে করি না মেয়েরা সুবিচার পাবে কারণ সিস্টেমই সেরকম নয়। মহিলাদের ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়। বিচারব্যবস্থায় আমাদের এখনও আস্থা রয়েছে। তবে সরকার কথা রাখেনি।'


উল্লেখ্য, এই বিষয়ে পরে হস্তক্ষেপ করেছে সরাসরি ক্রীড়ামন্ত্রক। বরখাস্ত করেছে জাতীয় কুস্তি সংস্থাকেই (WFI)। জানিয়ে দিয়েছে, নবনির্বাচিত প্যানেল নির্বাসিত। ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থাকে বলা হয়েছে, কুস্তির তদারকি করার জন্য অ্যাড হক কমিটি তৈরি করার। 


যদিও নির্বাসন তোলার ব্যাপারে আবেদন করা হবে বলে জানালেন সঞ্জয় সিংহ (Sanjay Singh)। যিনি যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত জাতীয় কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ সিংহ শরনের ঘনিষ্ঠ। এবং ২১ ডিসেম্বর ৪০-৭ ভোটে জিতে জাতীয় কুস্তি সংস্থার নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। 


ক্রীড়া মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত জানার পর সঞ্জয় সিংহ বলেছেন, 'আমরা ক্রীড়ামন্ত্রককে নির্বাসন তুলে নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছি। আমরা সময় চেয়ে নিচ্ছি। কথাবার্তায় কাজ না হলে আইনি পদক্ষেপের দিক তো খোলা রইলই।'


কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সঞ্জয় সিংহের কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর তড়িঘড়ি অনূর্ধ্ব ১৫ ও অনূর্ধ্ব ২০ প্রতিযোগিতা ঘোষণা করেছিল। এই ঘোষণা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে করা হয় বলে জানিয়েছে সরকার। কোনও প্রতিযোগিতার আগে অন্তত ১৫ দিনের নোটিশ দিতে হয় বলে জানিয়েছে সরকার। কুস্তিগীরদের প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হয়। কিন্তু কোনও নিয়মই মানা হয়নি।