কোচি: প্রথম ম্যাচে হারের পর এটিকে মোহনবাগানের এখন ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ কেরালা ব্লাস্টার্স, তাও আবার তাদের ঘরের মাঠে। রবিবার সন্ধ্যায় কোচিতে হাজার ষাটেক ব্লাস্টার্স সমর্থকের গর্জন উপেক্ষা করে তাঁর দল কি জয়ের রাস্তায় ফিরতে পারবে? শনিবার এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দোকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়ে দেন, তিনি আশাবাদী। কারণ, দলের ছেলেদের ওপর তাঁর যথেষ্ট আস্থা রয়েছে এবং তাঁর বিশ্বাস, তাঁরা ঘুরে দাঁড়াবেন। 


কেরালা ব্লাস্টার্স প্রথম ম্যাচে হারিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। এ বার ওদের ঘরের মাঠে হারানোর পরীক্ষা আপনাদের। কী ভাবে দেখছেন এই ম্যাচকে?


দুই দলের কাছেই এই ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভাল লড়াই হবে। আমাদেরও যেমন তিন পয়েন্ট দরকার, তেমন ওরাও জেতার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে। কোচির আবহ অসাধারণ। সব মিলিয়ে একটা উপভোগ্য ম্যাচ হতে চলেছে।


গত ম্যাচে আপনারা বিরতিতে এক গোলে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও শেষে হেরেছেন। তাই এই কঠিন ম্যাচে আপনাদের পরিকল্পনা কী থাকবে?


দেখুন, সব ম্যাচই আমাদের কাছে কঠিন। সে কথা মাথায় রেখেই নিজেদের প্রস্তুত করি আমরা। এখানেও আমরা তিন পয়েন্ট পাওয়ার লক্ষ্যই এসেছি। নিজেদের সে ভাবেই প্রস্তুত করছি। অতীতে কী হয়েছে, সেটা আমাদের কাছে বড় কথা নয়। বর্তমানকেই আমরা বেশি গুরুত্ব দিই। আমাদের কাছে কাল একটা নতুন চ্যালেঞ্জ ও নতুন সুযোগ আসতে চলেছে বলেই মনে করি আমি।


রয় কৃষ্ণার অভাব বোধ করছেন এই মরসুমে?


না ঠিক সেরকম না। ফুটবলের মূল কথা হল জায়গা তৈরি করা ও তাকে কাজে লাগিয়ে সফল হওয়া। সুযোগ তো আমরা তৈরি করছিই। কে স্কোর করল বা না করল, তা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই। কত সুযোগ তৈরি করছি আর কত নষ্ট হচ্ছে, সেটা একটা ব্যাপার। আমার দলের ওপর পুরো আস্থা রয়েছে। আমার বিশ্বাস ধাপে ধাপে ওরা আরও উন্নত ফুটবল খেলবে এবং প্রতিপক্ষের গোলকিপারদের আরও ব্যস্ত করে তুলবে। এখন আমাদের নিজেদের দলে ফোকাস করাই ভাল।


চেন্নাইনের বিরুদ্ধে ম্যাচে সব রকম পরিসংখ্যানের দিক থেকেই আপনারা এগিয়ে ছিলেন। সেই হার নিয়ে কী বলবেন?  


আমি হতাশ ঠিকই। তবে এটাই ফুটবল এবং এটাই জীবন। যখন আমরা জিতি বা হারি, তখন স্টাফদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে হার-জিতের কারণ। আমরা হারি, কারণ, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কিছু ছোটখাটো ব্যাপারে আমরা ভুল করি। ফুটবলে কৌশল ও টেকনিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলেও খেলোয়াড়দের আবেগও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তারা মানসিক চাপে থাকলে বা ভয়ে ভয়ে খেললে দল হেরে যেতে পারে। তবে আবারও বলছি। এই দলের ওপর আমার যথেষ্ট আস্থা আছে। এরা ক্রমশ উন্নতি করবে। এদের যথেষ্ট প্রতিভা রয়েছে। প্রত্যেকেই খুব ভাল খেলোয়াড়। আমরা যদি মন দিয়ে নিজেদের কাজ করে যেতে পারি , তা হলে সাফল্য একশো শতাংশ আসবে। আমাদের জীবনও একই নিয়মে চলে।


ফ্লোরেন্তিন পোগবার কোনও চোট সংক্রান্ত সমস্যা হয়েছে?


আমাদের যেমন ছ’জন বিদেশি খেলোয়াড় রয়েছে, কেরালা ব্লাস্টার্সেরও সে রকমই ছ’জন বিদেশি রয়েছে। আমরা বিদেশি বাছাই করে প্রতিপক্ষ কী রকম, ম্যাচের পরিকল্পনা ও পরিস্থিতি, তারা অনুশীলনে কেমন পারফরম্যান্স করছে, এ সব বিচার করে। আমার দলের বিদেশিদের নিয়ে আমি যথেষ্ট খুশি। প্রত্যেকেই মাঠে নামার জন্য সব সময় তৈরি থাকে। ওদের ওপর আস্থা রাখা যায়। তবে যেহেতু চারজনের বেশি বিদেশিকে প্রথম এগারোয় রাখার নিয়ম নেই, তাই দুজনকে বাইরে রাখতেই হয়। পোগবা শুরুর দিকে কয়েকটা ম্যাচে নাও খেলতে পারে, পরের দিকে হয়তো সব ম্যাচে খেলতে পারে। সেটা নির্ভর করছে পরিকল্পনার ওপর। ছ’জন বিদেশির ওপরই যথেষ্ট আস্থা আছে আমার।