কলম্বো: একটা ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র। যেখানে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের সংখ্যাটাই বেশি। যে দেশে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করা মানুষগুলো দু বেলা দু মুঠো ঠিক করে খেতেও হয়ত পান না। সেখানেও ক্রিকেট নিয়ে রয়েছে উন্মদনা। দেশটার নাম শ্রীলঙ্কা। এশিয়ার ক্রিকেটীয় দেশগুলোর মধ্যে অন্য়তম গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। শুধুমাত্র মাঠে নেমে লড়াই করাই নয়, এই দেশ জন্ম দিয়েছে অর্জুনা রণতুঙ্গা, সনৎ জয়সূর্য, চামিন্ডা ভাস, মুত্থাইয়া মুরলিথরন, কুমার সাঙ্গাকার, মাহেলা জয়বর্ধনের মত বিশ্ব বিখ্যাত ক্রিকেট তারকাদের। রণতুঙ্গার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে বিশ্বজয়ও করেছিল শ্রীলঙ্কা। ২০১১ সালের রানার্স আপ দল। অথচ এবারের বিশ্বকাপের আগে যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ খেলে মূলপর্বের টিকিট আদায় করতে হয়েছে তাদের। এশিয়া কাপের ফাইনালে ৫০ ওভারের ম্য়াচে গোটা দল মাত্র ৫০ রানে অল আউট। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে অন্য়তম লজ্জার একটি ছিল সেটি। তবে সবকিছু ভুলে বিশ্বকাপের লড়াইয়ে নামতে চলেছে এই দ্বীপরাষ্ট্র। দাসুন শনাকার নেতৃত্বে এবারের টুর্নামেন্টে খেলতে নামবে শ্রীলঙ্কা। ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ইতিহাসে শ্রীলঙ্কা মোট ৮৩টি ম্যাচ খেলেছে। ৩৮টি ম্যাচে জয় ও ৩৯টি ম্যাচে হারতে হয়েছে তাদের। ১টি ম্যাচ টাই ও ৫টি ম্যাচের কোনও ফল নির্ধারিত হয়নি।
সাম্প্রতিক ফর্ম
এশিয়ান কাপের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে লজ্জার হার সাম্প্রতিক কালে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স। বিশ্বকাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক পর্বের ম্যাচ দুর্দান্ত পারফর্ম করেছিল লঙ্কা ব্রিগেড। কিন্তু এরপর থেকে ওয়ান ডে ফর্ম্য়াটে সাফল্য নেই বললেই চলে। বিশ্বকাপের দুটো ওয়ার্ম আপ ম্যাচে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল লঙ্কা বাহিনী। কিন্তু দুটোতেই হারতে হয়েছে তাঁদের।
শক্তি
শ্রীলঙ্কার স্পিন বোলিং বিকল্প রয়েছে প্রচুর। উপমহাদেশের পিচে যা ভীষণ কার্যকরী হতে পারে। মাহিস থিকসানার মত স্পিনার যিনি সিএসকের হয়ে আইপিএল জিতেছেন। এছাড়া ধনঞ্জয় ডি সিলভা রয়েছেন যিনি স্পিনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট হাতেও দলের জন্য অবদান রাখতে পারেন। তবে আলাদা করে উল্লেখ করতে হবে দুনিথ ওয়ালালাগের কথা। এশিয়া কাপের মঞ্চে ভারতের বিরুদ্ধে দুরন্ত পারফরম্যান্সই মূলত তাঁর জন্য বিশ্বকাপের দরজা খুলে দিয়েছিল। লোয়ার অর্ডারে চাপের মুখে ব্যাট হাতেও অনবদ্য লড়াই করেছিলেন ওয়ালালাগে। অলরাউন্ডার বিসেবে অধিনাক দাসুন শনাকা ও চারিথ আসালাঙ্কা রয়েছেন দলে। ব্যাটিং বিভাগে অবশ্য় কুশল মেন্ডিসের ফর্ম দলকে ভরসা জোগাবে।
দুর্বলতা
ভারতে, যেখানে স্পিন সহায়ক পিচ, সেখান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার অনুপস্থিতি অবশ্যই অনুভব করবে শ্রীলঙ্কা শিবির। চোটের জন্য গোটা টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছেন হাসারাঙ্গা। ব্য়াটিং, বোলিং ২ বিভাগেই ধারাবাহিকতার অভাব। ২-৩ জন প্লেয়ারের ওপরই দল বেশি করে নির্ভরশীল। তরুণ প্লেয়াররা কতটা বিশ্বমঞ্চে জ্বলে উঠতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
বিশ্বকাপের দল: দাসুন শনাকা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, পাথুম নিশাঙ্কা, দিমুথ করুণারত্নে, সাদিরা সমরাউইক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, ধনঞ্জয় ডি সিলভা, দুশন হেমন্থ, মাহিস থিকসানা, দুনিথ ওয়ালালাগে, কসুন রজিথা, মাথিসা পাথিরানা, লাহিরু কুমারা, দিলশাল মাধুশনাকা