লাহৌর: দলের মধ্যে দানিশ কানেরিয়ার প্রতি ধর্মীয় বৈষম্যের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। পিসিবি-র দাবি, গত দশকে পাক দলে খেলা ক্রিকেটারদের উচিত এই নিয়ে কথা বলা। বোর্ডের মুখপাত্র জানান, এই বিতর্কে পিসিবি বা পাক ক্রিকেট ব্যবস্থার জড়িয়ে পড়া উচিত নয়। তবে, কোনও ক্রিকেটার যদি কানেরিয়ার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে থাকেন, তাহলে তাদের নাম প্রকাশ হওয়া উচিত।
সম্প্রতি, পাকিস্তান ক্রিকেট দলে ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদের চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন প্রাক্তন ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার। রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস বলেছিলেন যে, দলের একমাত্র হিন্দু ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন। এই বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরার জন্য আখতারের সাহসী অবস্থানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন কানেরিয়া। তিনি জানিয়েছেন, আখতার যা বলেছেন তা সর্বৈব সত্য। সঙ্গে যোগ করেন, বৈষম্যমূলক আচরণ করা ক্রিকেটারদের নাম তিনি জানাবেন।
পিসিবি ওই কর্তা বলেন, শোয়েব আখতার ও দানিশ কানেরিয়া-- দুজনই অবসরপ্রাপ্ত। বোর্ডের সঙ্গে কোনওভাবে চুক্তিবদ্ধ নয়। ফলে, তাঁরা যা খুশি তা বলতেই পারেন। এটা তাঁদের মতামত। তাঁরা কয়েকজন ক্রিকেটারের ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। কখনই পিসিবি বা পাক ক্রিকেট-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নয়।
ওই কর্তা বলেন, ইনজামাম-উল-হক, রশিদ লতিফ, ইউনিস খান, মহম্মদ ইউসুফ-- সকলেই ভিন্ন সময়ে পাক দলের অধিনায়ক ছিলেন, যে সময় কানেরিয়া জাতীয় দলের সদস্য ছিলেন। এই প্রাক্তনীদের উচিত এই প্রসঙ্গে মুখ খোলা। তাঁদের জবাব দেওয়া উচিত। বোর্ড কেন অহেতুক জড়াতে যাবে?
শোয়েব আখতার ও কানেরিয়াকে সমর্থন করেছেন দুই প্রাক্তন পাক টেস্ট ক্রিকেটার -- ইকবাল কাসিম ও মহসিন খান। কাসিম বলেন, যদি ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কোনও ক্রিকেটার কানেরিয়ার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে থাকেন, তাহলে তাদের নাম প্রকাশ করা দরকার। মহসিন খান বলেন, একজন ক্রিকেটারকে কখনই তাঁর ধর্ম নয় কেবলমাত্র তাঁর ক্রিকেটীয় দক্ষতা ও দলের প্রতি দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে বিচার করা উচিত।
প্রসঙ্গত, ২০০০ থেকে ২০১০ সাল পাক জাতীয় দলে খেলেছন কানেরিয়া। তিনি পাকিস্তানের দ্বিতীয় হিন্দু ক্রিকেটার। প্রথম ছিলেন অনিল দলপত-- যিনি আবার সম্পর্কে কানেরিয়ার মামা। ৬২ টেস্টে ২৬১ উইকেট নিয়েছেন কানেরিয়া। ২০১২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ম্যাচ-ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠে। যে কারণে, তাঁকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়।