নয়াদিল্লি: এএফসি এশিয়ান কাপের (AFC Asian Cup) প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে ভারতীয় দলের কোচ ইগর স্তিমাচ তাঁর দলের খেলোয়াড়দের ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়ে রাখলেন! 


শনিবার আল রায়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে ভারত তাদের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেই যে নামতে চলেছে, তা স্বীকার করে নিয়েই স্তিমাচ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “খুব কঠিন একটা ম্যাচ খেলতে চলেছি আমরা। অস্ট্রেলিয়া কতটা শক্তিশালী আমরা জানি। অতীতে ওরা কতটা সফল হয়েছে, তাও কারও অজানা নয়। ওদের প্রায় সব খেলোয়াড়ই ইউরোপের বিভিন্ন লিগে খেলে এবং প্রতি সপ্তাহে যথেষ্ট কঠিন প্রতিদ্বন্দিতামূলক ম্যাচ খেলে। এসবই আমরা জানি। তবে আমরাও এখানে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতেই এসেছি”। 


ক্রোয়েশীয় কোচের এই কথা বলার কারণ, ফিফার আন্তর্জাতিক ক্রমতালিকা হিসেবে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের ২৫ নম্বর ও এশিয়ার চার নম্বর। সেখানে বিশ্বের ১০২ নম্বর ভারতের পক্ষে তাদের আটকানো কঠিন হবে, এটাই স্বাভাবিক। বরং স্তিমাচ তাঁর দলের ছেলেদের সাবধান করে দিচ্ছেন, অস্ট্রেলিয়ার রূপ ধরে যে ঝড় আসছে, তাকে সামলাতে হবে। 


এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়া ওদের শক্তি অনুযায়ী খুবই কার্যকরী ফুটবল খেলে। মাঠের দুই দিক দিয়ে উঠে বারবার বক্সে বল পাঠায় এবং ওদের সর্বশক্তি নিয়ে আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মনে হচ্ছে আমাদের দিকে একটা ঝড় ধেয়ে আসছে। আমাদের তা রুখতে হবে এবং সে জন্য সঙ্ঘবদ্ধ থাকতে হবে”।


চার বছর আগে এশিয়ান কাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেও হেরে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া এবং গত বছর বিশ্বকাপে তারা শেষ ১৬-র রাউন্ডে আর্জেন্টিনার কাছে হেরে ছিটকে যায়। কাতারে এশিয়ান কাপের আসরে আসার আগে অস্ট্রেলিয়া তাদের শেষ পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই জিতেছে। অবশ্য ভারতও পাঁচটির মধ্যে তিনটিতে জিতে কাতারের মাটিতে পা রেখেছে।


কী ভাবে অস্ট্রেলিয়াকে রোখা সম্ভব, তা জানতে চাইলে ভারতীয় দলের কোচ ও প্রাক্তন ক্রোয়েশীয় বিশ্বকাপার বলেন, “অবশ্যই, সেট পিসের সুযোগ হাতছাড়া করা চলবে না। যখনই সম্ভব হবে, মাঠের দুই প্রান্তে ওদের বল সরবরাহ রুখতে হবে। যদি তা সম্ভব নাও হয়, তা হলে আমাদের বক্সের মধ্যে ওদের ক্রস পাঠানো বন্ধ করতে হবে”। 


তাই বলে পুরোপুরি রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলবে ভারত, এমন সম্ভাবনাও কম বলে জানিয়ে দিলেন সুনীল ছেত্রীদের কোচ। বলেন, “আমরা এখানে বক্সের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে বল আটকাতে আসিনি। আমরা ফুটবলকে উপভোগ করতে নামব, গত চার বছর ধরে যেমন করে এসেছি। সে জন্য যদি হারতে হয়, তা হলেও আমার কোনও আপত্তি নেই। আমি জানি আমাদের দলের ছেলেরা মাঠে নেমে নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার জন্য তৈরি”।  


আইএসএল ডিজিটালকে দেওয়া একান্ত ও সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে এ দিন স্তিমাচ বলেন, “কোচ হিসেবে আমি চাই আমার দলের ছেলেরা মাঠে নেমে ভয়ডরহীন ফুটবল খেলুক। এই সুযোগটাকে ভরপুর কাজে লাগাক এবং ফুটবলবিশ্বে ভারতের নাম উজ্জ্বল করে তুলুক।” 


প্রথম ম্যাচের আগে প্রস্তুতির জন্য ১২ দিন সময় পেয়েছে ভারতীয় দল। এই কয়েক দিনে তাঁর দলের খেলোয়াড়রা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন বলে জানান ১৯৯৮-এর বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থানাধিকারী দলের সদস্য। বলেন, “প্রথম ম্যাচে নামার জন্য আমরা খুবই উত্তেজিত। ১২ দিন ধরে যে প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি, তাতে অনেক পরিশ্রম করেছে ছেলেরা। আইএসএলে খেলার মধ্যে যতটা তীব্রতা থাকে, তার চেয়ে এখানে অনেক বেশি তীব্রতা থাকবে। সেই কথা মাথায় রেখে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে কাজ করেছি আমরা। 


খেলোয়াড়দের যতটা পেরেছি শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা করেছি। প্রথম ম্যাচে নামার অপেক্ষায় রয়েছি আমরা এবং আশা করি, দারুণ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চলেছি আমরা। বিশেষ করে দলের ২৬ জনের মধ্যে ১৭ জনই প্রথম এশিয়ান কাপে নামবে। ওরা এই অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখবে। আশা করি, এই সুযোগটা ওরা পুরোপুরি কাজে লাগাবে এবং আসন্ন বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের খেলাগুলিতে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভারতীয় দলকে তৃতীয় রাউন্ডে উঠতে সাহায্য করবে”।    


এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে কোচের পাশে ছিলেন দলের তারকা উইঙ্গার সহাল আব্দুল সামাদ। তিনি বলেন, “আমরা সবাই তৈরি। সবাই খুবই উত্তেজিত। আমাদের দলে এমন অনেক খেলোয়াড় আছে, যাদের এই টুর্নামেন্টে এর আগেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমরা সেরা ম্যাচটার দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছি”। 


সহাল অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামতে পারবেন না। এ দিন আইএসএল ডিজিটালকে দেওয়া একান্ত ও সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে তা জানিয়েও দেন ভারতীয় দলের কোচ। বলেন, “সহাল ছাড়া দলের সবাই ফিট আছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে সহালকে অন্তত তৃতীয় ম্যাচে খেলানো যেতে পারে”।


(তথ্যসূত্র - ISL Media)


আরও পড়ুন: গ্রিন পার্কে পেসারদের শাসন, উত্তর প্রদেশ শেষ ৬০ রানে, ভুবির ধাক্কায় বাংলাও অস্বস্তিতে



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে