ইনদওর: শুরুতেই ধাক্কা দিয়েছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। তাঁর স্পিনের ফাঁদে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ট্রাভিস হেড। ভারতের প্রথম ইনিংসের ১০৯ রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন মাত্র ১২। ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকেরা ভেবেছিলেন, অজি ব্যাটিংকে এবার পাল্টা চাপে ফেলে দেবেন জাডেজা-আর অশ্বিনরা।


কিন্তু সেখান থেকে পাল্টা লড়াই শুরু করেছেন মার্নাশ লাবুশান ও উসমান খাওয়াজা। চা পানের বিরতিতে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৭১/১। ভারতের চেয়ে আর মাত্র ৩৮ রানে পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। 


কুনেমানের ভেল্কি


প্রথমে ব্যাট করে ভারতের ইনিংস স্থায়ী হল মাত্র ৩৩.২ ওভার। অস্ট্রেলীয় স্পিনারদের সামনে রীতিমতো কেঁপে গেল ভারত। ১০৯ রানে শেষ হয়ে গেল ভারতের প্রথম ইনিংস। ৫ উইকেট নিলেন ম্যাথু কুনেমান। তিন উইকেট নাথান লায়নের। একটি উইকেট পেয়েছেন টড মার্ফি। শেষে মহম্মদ সিরাজ রান আউট হয়ে যান। সব মিলিয়ে ৯ উইকেট অস্ট্রেলিয়ার স্পিনারদের।


ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে পিচ রিপোর্টে বলা হয়েছিল, উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পাবেন স্পিনাররা। ঘাসের সামান্য আভা শুধু বাইশ গজের মাঝের অংশে। যে জায়গায় বল পড়বে, পিচের দুই প্রান্তেই সেই জায়গা কার্যত ন্যাড়া। শুকনো।  সামান্য যেটুকু ঘাস ছিল, তাও ম্যাচের আগের দিন ছেঁটে ফেলা হয়েছে।


কিন্তু তাই বলে প্রথম সেশনেই যে বল এরকম ভেল্কি দেখাতে শুরু করবে, তা বোধ হয় কেউ ভাবতে পারেননি। ভারতীয় ব্যাটাররাও নয়। অস্ট্রেলিয়া এই ম্যাচে প্যাট কামিন্স ও ম্যাট রেনশর পরিবর্তে মিচেল স্টার্ক ও ক্যামেরন গ্রিনেকে খেলাচ্ছে। মায়ের অসুস্থতার জন্য কামিন্স দেশে ফিরে যাওয়ায় এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্টিভ স্মিথ। 


ভারতীয় দলেও পরিবর্তন হয়েছে। বহু বিতর্কের পর ছন্দে না থাকা কে এল রাহুলের পরিবর্তে খেলানো হয়েছে শুভমন গিলকে। পেস বিভাগে মহম্মদ শামির পরিবর্তে খেলানো হয়েছে উমেশ যাদবকে। টস জিতে ব্য়াটিং নেওয়ার পর রোহিত বলেছিলেন, 'উইকেট ওপর ওপর দেখে শুকনো মনে হচ্ছে। তবে আমরা এখনও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছইনি এবং নাগপুর ও দিল্লির পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করতে চাই।'


বাস্তবে দেখা গেল, গোটা সিরিজের সবচেয়ে বড় ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ল ভারত। ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারেই ম্যাথু কুনেমানকে আক্রমণে আনেন স্মিথ। আর বাঁহাতি স্পিনের ভেল্কি দেখাতে শুরু করেন। প্রথম ওভারেই তিনি ফিরিয়ে দেন রোহিতকে। তাঁর বলে মাত্র ১২ রান করে স্টাম্পড হয়ে যান রোহিত। অন্য প্রান্তে আগ্রাসী ব্যাটিং করছিলেন গিল। কিন্তু ১৮ বলে ২১ রান করে তিনিও কুনেমানের শিকার। তার পরের ওভারে লায়ন ফিরিয়ে দেন চেতেশ্বর পূজারাকে (১ রান)। রবীন্দ্র জাডেজা ৪ রান করে লায়নের শিকার। শ্রেয়স আইয়ার কোনও রান করার আগেই কুনেমানের শিকার। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৪৫/৫ হয়ে যায় ভারত।


এরপর বিরাট কোহলি ও কে এস ভরত প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। ষষ্ঠ উইকেটে ২৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন দুজনে। কিন্তু টড মার্ফির বলে ২২ রান করে ফেরেন কোহলি। ভরত ১৭ রান করে লায়নের শিকার। উমেশ যাদব ১৭ রান করে কুনেমানের বলে ফেরেন। অক্ষর পটেল ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন। মাত্র ১০৯ রানে শেষ হয় ভারতের প্রথম ইনিংস।


আরও পড়ুন: কবে ফিরছেন মাঠে? কীভাবে চলছে ফেরার প্রস্তুতি? নিজমুখেই জানালেন ঋষভ পন্থ