গুয়াহাটি: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আট উইকেটে দাপুটে মেজাজে জয় পেয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল (Indian Cricket Team)। রোহিত শর্মাদের সামনে সুযোগ ছিল ভারতের ঘরের মাটিতে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করার। গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় ম্যাচ (Ind vs SA 2nd T20) জিতে ঠিক সেটাই করে দেখাল টিম ইন্ডিয়া। প্রথম ম্যাচে ভারতের জয়ের কারিগর যদি হন বোলাররা, তাহলে দ্বিতীয় ম্যাচে সেই কৃতিত্ব ব্যাটারদের।


মিলার-ডি ককের পার্টনারশিপ


দুই ওপেনার কেএল রাহুল, রোহিত শর্মা থেকে শুরু সূর্যকুমার যাদব, বিরাট কোহলি, দীনেশ কার্তিক, এইদিন ভারতের সকল ব্যাটারই ব্যাট হাতে সফল। ব্যাটারদের দাপটে ভারত ২৩৭ রান তোলার, দক্ষিণ আফ্রিকা সবসময়ই চাপে ছিল। তবে কুইন্টন ডি কক এবং ডেভিড মিলার (David Miller) অনবদ্য দুই ইনিংস খেলে রামধনুর দেশকে ম্যাচ জেতানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন বটে। ডি কক অর্ধশতরান করেন। ৪৬ বলে শতরান করেন মিলার। তবে তাতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি।  রানে ম্যাচ জেতে ভারতীয় দল।


ভারতের এদিন নতুন বলে আবারও প্রভাবিত করেন অর্শদীপ সিংহ। নিজের ইনিংসের প্রথম ওভারেই রাইলি রুসো ও তেম্বা বাভুমাকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরান তিনি। তবে ডি ককদের সুবাদেই শেষ পর্যন্ত ২২১ রানই তুলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষের দিকে চাপের মুখে একাধিক নো বল করেন অর্শদীপ, নিজের চার ওভারে ৬২ রানও খরচ করেন তিনি। তবে তা সত্ত্বেও প্রোটিয়ারা কিন্তু ম্যাচ জিততে পারল হল না। ১৬ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজও জিতে যায় ভারত। অর্শদীপ বাদে ভারতের হয়ে অন্য উইকেটটি পান অক্ষর পটেল। তিনি ৩৩ রানে মার্করামকে সাজঘরে ফেরান।


এদিনে ম্যাচে প্রথমে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা। তবে তাঁর বোলাররা তাঁকে কাঙ্খিত সাফল্য এনে দিতে পারেনি। দুই ভারতীয় ওপেনার রোহিত ও কেএল রাহুল ৯৬ রানের বড় পার্টনারশিপে ভারতের হয়ে মজবুত ভিত গড়ে দেন। সেই ভিতেই ইমারত গড়েন সূর্যকুমার যাদব ও বিরাট কোহলি। রোহিত এদিন ৪৩ রান (৩৭ বল) করে আউট হলেও, রাহুল কিন্তু নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন। তিনি ৫৭ রানের (২৮ বল) ইনিংস খেলেন। রাহুলের আগ্রাসী ব্যাটিং অপরদিকে রোহিতকে সামলে খেলার সুযোগ করে দেন।


কোহলি-সূর্যর দাপট


 


এই দুইয়ের দাপটেই চাপে পড়ে যায় প্রোটিয়ারা। তবে নিজের পর পর দুই ওভারে দুই ওপেনারকেই সাজঘরে ফেরান প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজ। কিন্তু এদিন সূর্যকুমার বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন। তিনি প্রমাণ করে দিলেন কেন তিনি আইসিসির ক্রমতালিকায় টি-টোয়েন্টিতে দুই নম্বর ব্যাটার। মাত্র ১৮ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন সূর্যকুমার যাদব। কাগিসো রাবাদা ১৫তম ওভারে তো ২২ রান তোলেন সূর্য। তার সুবাদেই হু হু করে স্কোরবোর্ডে ভারতের রান বাড়তে থাকে। সূর্য ঝড়ে বিরাট কোহলি অপরপক্ষে কিছুটা শান্তভাবেই নিজের ইনিংসটা গুছিয়ে নেন।


কোহলি শুরুটা দেখে শুনে করলেও, 'ডেথ ওভার'-এ তিনিও নিজের শট খেলা শুরু করেন। কোহলি ও সূর্য তৃতীয় উইকেটে শতাধিক রানের পার্টনারশিপও গড়েন। তবে দুর্ভাগ্যবশক ভুল বোঝাবুঝির জেরে মাত্র ২২ বলে ৬১ রান করেই রান আউট হতে হয় সূর্যকুমারকে। কোহলি অবশ্য ৪৯ রানেই অপরাজিত থেকে যান। ভারত তিন উইকেটের বিনিময়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৩৭ রান তোলে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এটিই টি-টোয়েন্টিতে ভারতের সর্বোচ্চ স্কোর। 


আরও পড়ুন: ভারতীয় হিসাবে টি-টোয়েন্টিতে অনন্য রেকর্ড গড়লেন বিরাট কোহলি