কলকাতা: মোহালির বাইশ গজ শাসন করেছেন তিনি। প্রথমে ব্যাট হাতে। রেকর্ড সেঞ্চুরি করেছেন। পরে বল হাতেও দাপট। তাঁর স্পিনের ভেল্কি নাকানিচোবানি খাইয়েছে শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের। ম্যাচের সেরা হিসাবেও তাঁকে বাদ দিয়ে আর কিছু ভাবা সম্ভব ছিল না।
রবীন্দ্র জাডেজার (Ravindra Jadeja) সাফল্যে উচ্ছ্বসিত দিদি নয়না জাডেজা (Naina Jadeja)। বিশেষ করে চোট সারিয়ে মাঠে ফিরেই যেরকম দাপট দেখিয়েছেন সৌরাষ্ট্রের অলরাউন্ডার যে, প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন দিদি। তবু আক্ষেপ নয়নার গলায়। কেন? ডাবল সেঞ্চুরিটা হল না যে!
রবিবার রাজকোট থেকে মোবাইল ফোনে এবিপি লাইভকে নয়না বললেন, 'জাড্ডুর (ভাইকে এই নামেই ডাকেন) পারফরম্যান্সে আমরা ভীষণ খুশি। বিশেষ করে ও চোটের জন্য দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিল। হাঁটুর চোটের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যেতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে খেলতে পারেনি। দীর্ঘদিন বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে রিহ্যাব করেছে। তারপর মাঠে ফিরেই এই দাপট দেখে খুশি তো হওয়ারই কথা।'
তারপরই নয়না বলছেন, 'ডাবল সেঞ্চুরিটা করতে পারলে আরও ভাল লাগত। দুশো না করার আক্ষেপ তাই থাকছে। তবে লম্বা ইনিংস খেললে ক্লান্তি আসে। তার ওপর শ্রীলঙ্কাকে দুবাির আউট করার ব্যাপারও ছিল। সেই জন্যই হয়তো ইনিংস ডিক্লেয়ার দেওয়া হয়। তবু, ডাবল সেঞ্চুরিটা হলে ভাল লাগত।'
জাডেজা জানিয়েছেন, তিনিই অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma) ইনিংস ডিক্লেয়ার দেওয়ার কথা বলেছিলেন। ভাইকে কি বলবেন, কেন তিনি দুশোর সুযোগ হাতছাড়া করলেন? নয়না হাসতে হাসতে বলছেন, 'না। ক্রিকেটের ব্যাপারে ও অনেক ভাল বোঝে। দলের যেটা ভাল হবে মনে করেছে সেটাই করেছে।'
টিভিতে ভাইয়ের পারফরম্যান্স দেখেছেন। মোহালিতে একের পর এক রেকর্ড ভেঙেছেন বা স্পর্শ করেছেন জাডেজা। টেস্টে সাত নম্বরে নেমে ১৭৫ রান করে কপিল দেবের ৩৬ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙেছেন। ভারতের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসাবে একই টেস্টে ইনিংসে দেড়শো রান ও পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। নয়না বলছেন, 'একের পর এক রেকর্ড গড়ে সকলকে আনন্দ দিয়েছে জাড্ডু। কপিল দেবের রেকর্ড তো ভেঙেছেই। আমাদের জামনগরের এক মহান ক্রিকেটারের ৭০ বছরের পুরনো রেকর্ডও স্পর্শ করেছে। তিনি হলেন বিনু মাঁকড়। ১৯৫২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৮৪ রান করার পাশাপাশি ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মাঁকড়। জাড্ডুও একই টেস্টে দেড়শো রান ও পাঁচ উইকেট নেওয়া ক্রিকেটারদের ক্লাবে ঢুকে পড়ল।'
জাড্ডুর এই ফর্ম যে প্রতিপক্ষ শিবিরে কাঁপন ধরাতে পারে, মনে করিয়ে দিচ্ছেন গর্বিত দিদি। বলছেন, 'ওর এই ছন্দ ভারতকে আরও ম্যাচ জেতাবে।'