লন্ডন: প্রত্যাশামতোই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে পৌঁছল ভারত। রবিবার ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে দেয় কোহলি-বাহিনী। এদিন যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে মেন ইন ব্লুু-রা। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-- তিনটি বিভাগেই প্রোটিয়াদের টেক্কা দিয়েছে ভারতীয় দল। এদিনের জয়ের সুবাদে গ্রুপে শীর্ষে শেষ করল টিম ইন্ডিয়া। ফলে, সেমিফাইনালে বাংলাদেশের মুখোমুখি ভারত।


দক্ষিণ আফ্রিকার রাখা ১৯২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। মাত্র ১২ রান করেই ফিরে যান ওপেনার রোহিত শর্মা। তবে, শিখর ধবন ও অধিনায়ক বিরাট কোহলি নিশ্চিত করেন এই ম্যাচের ফলাফল যাতে ভারতের পক্ষে থাকে।


[embed]https://twitter.com/ICC/status/873930034502922241[/embed]

দুজনে মিলে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় ইনিংস গড়তে থাকেন। সাবধানী হলেও, এই দুই ব্যাটসম্যান এদিন ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেছেন। যার ফলে, কখনই দেখে মনে হয়নি যে ম্যাচ ভারতের হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে বা ভারত চাপে রয়েছে। শিখর ও কোহলি দুজনই অর্ধশতরান করেন। দ্বিতীয় উইকেটে কোহলি ও ধরন ১২৮ রানের পার্টনারশিপ করেন। সেখানেই কার্যত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায়।


চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজের দুর্ধর্ষ ফর্ম অব্যাহত রেখেছেন ধবন। এই নিয়ে টানা অর্ধশতরানের হ্যাটট্রিক করলেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। এদিন ৮৩ বলে তিনি ৭৮ রান করেন। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১২টি চার ও একটি ছক্কায়। ধবন যখন আউট হন, ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় ভারতের পকেটে চলে এসেছে।


ভারতীয় ইনিংসের সেরা ঝলক--


[embed]https://twitter.com/ICC/status/873937595566366720[/embed]

শিখরের কথার সঙ্গে এদিন কোহলির ইনিংসের কথা উল্লেখ করতেই হবে। ধবনের মতো এদিন দুর্ধর্ষ ফর্মে ছিলেন অধিনায়ক। উইকেটের দুদিকেই সাবলীল শট খেলেন। কোহলি এদিন অপরাজিত থাকেন ৭৬ রানে। ১০১ বলে তাঁর ইনিংসে সাজানো ছিল ৭টি চার ও একটি ছক্কায়। ধবন আউট হওয়ার পর যুবরাজ সিংহকে (২৩ অপরাজিত) নিয়ে ভারতকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন কোহলি। ম্যাচের সেরা হন জশপ্রীত বুমরাহ।


[embed]https://twitter.com/ICC/status/873932244389425152[/embed]

সেমি-ফাইনালে যেতে গেলে এই ম্যাচ জিততেই হত ভারতকে। গত ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৩২১ রান করেও হারতে হওয়ায় এই ম্যাচে পরিকল্পনা বদল করে ভারতীয় দল। টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।


ইনিংসের শুরুটা ভালই করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলা। প্রথম উইকেটে ওঠে ৭৬ রান। কিন্তু, বোলাররা ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন।  ভারতের আঁটোসাঁটো বোলিং এবং দুরন্ত ফিল্ডিংয়ের সুবাদে চাপে পড়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। যার ফলস্বরুপ, দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে প্রোটিয়ারা।


একটা সময় দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ছিল ১ উইকেটে ১১৬। সেখান থেকে ১৯১ রানেই অল আউট হয়ে যান ডিভিলিয়ার্সরা। শ্রীলঙ্কা ম্যাচে হারের পর এই ম্যাচে দলে একটি বদল করে ভারত। প্রত্যাশামতোই উমেশ যাদবের বদলে দলে আসেন অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন।


[embed]https://twitter.com/BCCI/status/873930129260634112[/embed]

দলে ফিরেই নিজের জাত চেনান তিনি। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হাশিম আমলাকে (৩৫) আউট করে দেন। অর্ধশতরান করা কুইন্টন ডি কককে (৫৩) ফেরান রবীন্দ্র জাডেজা। রান আউট হয়ে যান এবি ডিভিলিয়ার্স (১৬) ও ডেভিড মিলার (১)।


ফাফ ডু প্লেসিকে (৩৬) বোল্ড করে দেনন হার্দিক পাণ্ড্য। ক্রিস মরিসকে (৪) আউট করেন যশপ্রীত বুমরাহ। অ্যান্ডিল ফেলুকওয়ায়োকে (৪) ফেরান বুমরাহ। পরপর দু বলে কাগিসো রাবাদা (৫) ও মর্নি মর্কেলকে (০) আউট করেন ভুবনেশ্বর কুমার। রান আউট হন ইমরান তাহির (১)।


এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার তিনজন ব্যাটসম্যান রান আউটের শিকার হন। এর থেকেই পরিষ্কার, ভারত কতটা ভাল ফিল্ডিং করেছেন।


[embed]https://twitter.com/ICC/status/873934029912977408[/embed]

এই জয়ের ফলে, প্রুপ সেরা হয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে চলে গেল ভারত। অর্থাৎ, সেমিফাইনালে ভারতের মুখোমুখি অপর গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ চারে পৌঁছনো বাংলাদেশ। যাদের কয়েকদিন আগে প্রস্তুতি ম্যাচে হারিয়েছে ভারত।

ভারতীয় দল- রোহিত শর্মা, শিখর ধবন, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), যুবরাজ সিংহ, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, হার্দিক পাণ্ড্য, কেদার যাদব, রবীন্দ্র জাডেজা, ভুবনেশ্বর কুমার, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও যশপ্রীত বুমরাহ।


দক্ষিণ আফ্রিকা দল- কুইন্টন ডি কক, হাশিম আমলা, ফাফ ডু প্লেসি, এবি ডিভিলিয়ার্স, ডেভিড মিলার, জেপি ডুমিনি, ক্রিস মরিস, কাগিসো রাবাদা, অ্যান্ডিল ফেলুকওয়ায়ো, মর্নি মর্কেল ও ইমরান তাহির।