কলকাতা: আইপিএল শুরু হওয়ার আগেই বিরাট ধাক্কা খেয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস। চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছে অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে অধিনায়ক ছিটকে যাওয়া যে কোনও দলের কাছেই মানসিক ধাক্কা বই কী!


কথায় আছে, কারও সর্বনাশ, কারও পৌষমাস। শ্রেয়স না থাকায় ঋষভ নেতৃত্বের দায়িত্ব পেল। ব্যাট হাতে ও দুরন্ত ছন্দে। তবে নেতৃত্বের ভার ওর সেই ছন্দে ব্যাঘাত ঘটাবে না তো! আবার ভাল দিক হল, শিখর ধবন, স্টিভ স্মিথের মতো সিনিয়রদের না দিয়ে ওকে অধিনায়কত্ব দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এই সম্মান ওকে বাড়তি তাগিদও দিতে পারে। প্রথম কয়েকটি ম্যাচে ওর শরীরী ভাষা না দেখলে বলা মুশকিল কী হবে।


স্টিভ স্মিথকে এবার দলে নিয়েছে দিল্লি। এটা ওদের মাস্টারস্ট্রোক। স্মিথের ব্যাটিং মুন্সিয়ানা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। দিল্লির কোচ রিকি পন্টিং ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে যে, স্মিথকে তিন বা চার নম্বরে খেলাবে। আগে থেকে ব্যাটিং অর্ডার সাজিয়ে রেখেছে। শিমরন হেটমায়ারকে নিয়ে খুব একটা উচ্ছ্বসিত নই আমি। তবে মার্কাস স্টোইনিস দুর্দান্ত ক্রিকেটার। শিখর ধবনও ম্যাচ উইনার।


মুম্বইয়ের দুই ক্রিকেটারের কথা বলতেই হবে। অজিঙ্ক রাহানে ও পৃথ্বী শ। রাহানেকে অনেকে বলেন টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটের আদর্শ নয়। কিন্তু ওর টি-টোয়েন্টি রেকর্ড দারুণ। প্রথম ১১ বলে ৪ রান করলে পরের ৩০ বলে ৫৪ করে দেবে, এমন ক্রিকেটার রাহানে। যেটা রাহুল দ্রাবিড়ের ক্ষেত্রে দেখতাম। পৃথ্বী অস্ট্রেলিয়ায় ব্যর্থতার পর দেশে ফিরে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত খেলেছে। মানসিক কোনও সমস্যা হয়েছিল হয়তো। এখন সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এসেছে।


স্পিন বিভাগে অমিত মিশ্র দারুণ অস্ত্র। ওর বয়স ৩৮। কিন্তু আইপিএলের রেকর্ড দেখুন। ক্রিকেট মহলে একটা কথা খুব চালু রয়েছে। স্পিনারদের বয়স যত বাড়ে, তত বাড়ে বলের ধার। অমিতের ক্ষেত্রেও তাই। সেই সঙ্গে রয়েছে আর অশ্বিন। দুর্দান্ত বৈচিত্র। অক্ষর পটেল ওদের হয়ে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে অক্ষর খুব সফল।


পেস বোলিং বিভাগ দেখুন। একদিকে কাগিসো রাবাডা। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পেসার। ওর ৪ ওভার ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে। সঙ্গী ইশান্ত শর্মা। তরুণ পেসার আবেশ খানকে নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। ঘরোয়া ক্রিকেটে দেখেছি, বাংলার বিরুদ্ধে দুরন্ত বল করেছিল। মধ্যপ্রদেশের পেসার আবেশ স্যুইং দিয়ে বাংলাকে ঘায়েল করেছিল। আইপিএলে স্যুইং কতটা কাজে দেবে জানি না। তবে আবেশ দারুণ।


সব মিলিয়ে দিল্লি খুব ভাল দল। এবার ট্রফি জয়ের অন্যতম প্রধান দাবিদারও।


পুরো দল: অজিঙ্ক রাহানে, পৃথ্বী শ, রিপল পটেল, শিখর ধবন, শিমরন হেটমায়ার, স্টিভ স্মিথ, অমিত মিশ্র, এনরিক নর্ৎজে, আবেশ খান, ইশান্ত শর্মা, কাগিসো রাবাডা, লুকমান মেরিওয়ালা, এম সিদ্ধার্থ, প্রবীণ দুবে, টম কারান, উমেশ যাদব, অক্ষর পটেল, ক্রিস ওকস, ললিত যাদব, মার্কাস স্টোইনিস, আর অশ্বিন, ঋষভ পন্থ, স্যাম বিলিংস ও বিষ্ণু বিনোদ।


অধিনায়ক: ঋষভ পন্থ


হেড কোচ: রিকি পন্টিং


সহকারী কোচ: মহম্মদ কাইফ


ব্যাটিং কোচ: প্রবীণ আমরে


বোলিং কোচ: জেমস হোপস


সহকারী কোচ: অজয় রাতরা


আইপিএলে সেরা পারফরম্যান্স: রানার্স (২০২০)


আইপিএল রেকর্ড: ম্যাচ ১৯২, জয় ৮৫, হার ১০৪, অমীমাংসিত ২


গত আইপিএলের পারফরম্যান্স: ম্যাচ ১৭, জয় ৯, হার ৮


শক্তি: দলের বোলিং। দারুণ বৈচিত্র। ব্যাটিংয়ে স্টিভ স্মিথের অন্তর্ভুক্তি। পন্থের ফর্ম।


দুর্বলতা: প্রথম একাদশ বাছাই নিয়ে টানাপোড়েন। কাকে ছেড়ে কাকে খেলাবে দিল্লি, সেটা নিয়ে সংশয় কাটিয়ে উঠতে হবে। তবে প্রথম কয়েকটা ম্য়াচের পর সেই সমস্যা কেটে যেতে পারে।


এক্স ফ্যাক্টর: ব্যাটে ঋষভ ও বলে রাবাডা।


আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের সূচি:


১০ এপ্রিল  সিএসকে বনাম ডিসি  মুম্বই, রাত ৭.৩০


১৫ এপ্রিল  আরআর বনাম ডিসি  মুম্বই, রাত ৭.৩০


১৮ এপ্রিল  ডিসি বনাম পিকে       মুম্বই, রাত ৭.৩০


২০ এপ্রিল  ডিসি বনাম এমআই    চেন্নাই, রাত ৭.৩০


২৫ এপ্রিল এসআরএইচ বনাম ডিসি     চেন্নাই, রাত ৭.৩০


২৭ এপ্রিল  ডিসি বনাম আরসিবি  আমদাবাদ, রাত ৭.৩০


২৯ এপ্রিল  ডিসি বনাম কেকেআর        আমদাবাদ, রাত ৭.৩০


২ মে পিকে বনাম ডিসি       আমদাবাদ, রাত ৭.৩০


৮ মে কেকেআর বনাম ডিসি        আমদাবাদ, দুপুর ৩.৩০


১১ মে       ডিসি বনাম আরআর  কলকাতা, রাত ৭.৩০


১৪ মে       আরসিবি বনাম ডিসি  কলকাতা, রাত ৭.৩০


১৭ মে       ডিসি বনাম এসআরএইচ     কলকাতা, রাত ৭.৩০


২১ মে       ডিসি বনাম সিএসকে  কলকাতা, রাত ৭.৩০


২৩ মে      এমআই বনাম ডিসি    কলকাতা, দুপুর ৩.৩০


*অনুলিখন: সন্দীপ সরকার