সন্দীপ সরকার, কলকাতা: চার বছর আগের এক এপ্রিল। ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) সেদিন ব্যাটিং অর্ডারে প্রোমোশন পেয়েছিলেন তিনি। নেমেছিলেন তিন নম্বরে। তারপর কী হয়েছিল?
গ্যালারিতে উড়ে গিয়েছিল আটটি ছক্কা। বাউন্ডারি লাইনে আছড়ে পড়েছিল ৬টি চার। ৪০ বলে ৮০ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians) বোলিং আক্রমণকে তছনছ করে দিয়েছিলেন।
চার বছর পর ফের এক এপ্রিল। ইডেন গার্ডেন্সে ফের নামছেন তিনি। আন্দ্রে রাসেল (Andre Russell)। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্য সমর্থকেরা যাঁকে মাসল রাসেল বলে ডাকেন।
আর পয়মন্ত ইডেনে ক্যারিবিয়ান সুপারস্টার নামছেন নতুন চেহারায়। হেয়ারস্টাইল বদলে ফেলেছেন রাসেল। বলা ভাল, চুলে নতুন রং করিয়েছেন। তাঁর সেই কালো মোহক গায়েব। মাথার ওপর খেলা করছে সাদা মোহক। যে কোনও টুর্নামেন্টে হেয়ারস্টাইল বদলে নামার রেওয়াজ মেনে চলেন রাসেল। এবারও তার অন্যথা হয়নি।
তবে নাইট ভক্তদের বেশি প্রভাবিত করবে রাসেলের বাইশ গজের ছন্দ। প্রথম ম্যাচে মোহালিতে দলকে জেতাতে পারেননি। কিন্তু যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, পাঞ্জাব কিংসের বোলাররা আতঙ্কে ছিলেন। ১৯ বলে ৩৫ রান করে আউট হন রাসেল। আউট হওয়ার পর যেভাবে প্যাডে ব্যাট আছড়ে হতাশা ব্যক্ত করেছিলেন, বোঝাই গিয়েছিল বড় রান করতে কতটা মরিয়া হয়ে রয়েছেন তিনি।
সেই খিদে কতটা বেঁচে রয়েছে?
বুধবারের ইডেনে তখন একদিকের নেটে ব্যাট করছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ক্রিকেটারেরা। যাঁদের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে ইডেনে চার বছর পর প্রত্যাবর্তন ঘটাচ্ছে কেকেআর। তার ঠিক পাশের নেটে একের পর এক বল গ্যালারিতে ওড়াচ্ছিলেন রাসেল। দেখে কে বলবে যে, মাঝে চার-চারটি বছর কেটে গিয়েছে। এ যেন সেই ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিলের ফর্ম। যে ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়েছিল কেকেআর। নায়ক ছিলেন রাসেল।
সেটাই ছিল ইডেনে কেকেআরের খেলা শেষ ম্যাচ। তারপর ফের আরসিবি ম্যাচ দিয়ে ইডেনে ফিরছেন নাইটরা। আর সেই ম্যাচের আগে নেটে বিধ্বংসী মেজাজে রাসেল। মঙ্গলবার দলের ঐচ্ছিক প্র্যাক্টিসে আসেননি। বুধবার সেই আক্ষেপ যেন সুদে আসলে মিটিয়ে নিলেন ক্যারিবিয়ান তারকা।
আরসিবি শিবিরেও বোলারদের তালিকায় অনেক বড় নাম। মহম্মদ সিরাজ, হর্ষল পটেল, আকাশ দীপ...। কিন্তু রাসেলের ব্যাট চলতে শুরু করা মানে যে কোনও বিশ্ব মানের বোলারকে ক্লাব স্তরে নামিয়ে আনার ক্ষমতা ধরেন। কেকেআর সমর্থকেরাও ফের ইডেনে মাসল রাসেলকে দেখার অপেক্ষায়।
আরও পড়ুন: রাসেল-ঝড় থামাতে বিশেষ পরিকল্পনা? বোলিং কোচের নির্দেশের অপেক্ষায় আকাশ