আমদাবাদ: আইপিএলের (IPL 2023) মতো চাকচিক্যময় টুর্নামেন্টের ফাইনাল বলে কথা। তার পরতে পরতে নাটক তো থাকবেই। সে বৃষ্টিতে প্রায় তিনদিন ধরে ফাইনাল ম্যাচ চলা হোক, বা ম্যাচের রাশ পেন্ডুলামের মতো এক শিবির থেকে আর এক শিবিরে ঘোরাফেরা করাই হোক। গোটা টুর্নামেন্টে দুরন্ত ছন্দে থাকা শুভমন গিল বড় রান পাবেন না। কিংবদন্তি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি প্রথম বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরবেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা লেগস্পিনার রশিদ খানকে পরপর ২ বলে জোড়া ছক্কা মেরে দেবেন শিবম দুবে।


যা দেখে কেউ কেউ বলাবলি শুরু করে দিলেন, আইপিএল ফাইনালের চিত্রনাট্য কি স্বয়ং ক্রিকেট ঈশ্বর তৈরি করেছেন?


আর রুদ্ধশ্বাস সেই ম্যাচে শেষ বলে হল ফয়সালা। শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে চেন্নাই সুপার কিংস শিবিরে পঞ্চম আইপিএল খেতাব ঢোকালেন রবীন্দ্র জাডেজা। ৫ উইকেটে গতবারের চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্সকে হারিয়ে দিল সিএসকে। সেই সঙ্গে স্পর্শ করল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের রেকর্ড। আইপিএলে মুম্বইয়ের ঝুলিতেও রয়েছে পাঁচটি ট্রফি। সেই আসনেই এবার বসল সিএসকে।


শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে ১৪ রান তুলতে হতো চেন্নাই সুপার কিংসকে। বোলার মোহিত শর্মা। এই আইপিএলে যাঁর পুনর্জন্ম হয়েছে। প্রথম চার বলে চার রান খরচ করলেন হরিয়ানার পেসার। ২ বলে ১০ রান বাকি তখন চেন্নাইয়ের। পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে দিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। ১ বলে প্রয়োজন চার রান। নাটকীয় পরিস্থিতিতে শেষ বলে ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি মারলেন জাড্ডু। চেন্নাই ক্রিকেটারেরা দৌড়ে মাঠে ঢুকে উৎসব শুরু করলেন। তবে ধোনিকে দেখা গেল ডাগ আউটে নির্লিপ্ত মুখে বসে থাকতে। হয়তো ক্যাপ্টেন কুলও বুঝেছেন যে, গুলিটা নেহাত কান ছুঁয়ে বেরিয়ে গেল।


ফাইনাল ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল রবিবার। কিন্তু এত প্রবল বৃষ্টি হয় যে, টসও করা যায়নি। সোমবার রিজার্ভ ডে-তে ম্যাচ শুরু হয়। বৃষ্টির আশঙ্কায় টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন ধোনি। যাতে পরে বৃষ্টি বাদ সাধলে ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মের অঙ্ক কষে এগতে পারেন।


তাঁর আশঙ্কা অমূলক ছিল না। প্রথমে ব্যাট করে গুজরাত টাইটান্স তোলে ২১৪/৪। সাই সুদর্শন ৪৭ বলে ৯৬ রান করে সর্বোচ্চ স্কোরার। ৩৯ বলে ৫৪ রান ঋদ্ধিমান সাহার। বাইশ গজে একবার প্রাণ ফিরে পেয়ে শুভমন গিল করেন ২০ বলে ৩৯। আইপিএল ফাইনালে রেকর্ড স্কোর তোলে গুজরাত। এত রান এর আগে কোনও ফাইনালে ওঠেনি।


জবাবে ব্য়াট করতে নেমে চেন্নাইয়ের স্কোর তখন ৩ বলে বিনা উইকেটে ৪ রান, বৃষ্টি নামে আমদাবাদে। রাত ১২.১০-এ খেলা যখন  শুরু হয়, তখন চেন্নাইয়ের সামনে পরিবর্তিত লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫ ওভারে ১৭১ রানের।


শুরুটা দারুণ করেছিলেন ডেভন কনওয়ে ও রুতুরাজ গায়কোয়াড়। দুই ওপেনার ৬.৩ ওবারে ৭৪ রান যোগ করেন। রুতুরাজ ১৬ বলে ২৬ রান করে ফেরেন। কনওয়ে ২৫ বলে ৪৭ রান করে আউট হন। একই ওভারে দুজনকে তুলে নেন নূর আমেদ।


সেখান থেকে ফের পাল্টা লড়াই শিবম দুবে (২১ বলে ৩২ নঃ আঃ) ও অজিঙ্ক রাহানের (১৩ বলে ২৭ রান)। অম্বাতি রায়ডু ৮ বলে ১৯ রান করেন। তবে শেষ ওভারে নায়ক জাড্ডু। ক্যাপ্টেন কুলের হাতে যিনি পঞ্চম ট্রফি ওঠা নিশ্চিত করে দিলেন।





আরও পড়ুন: ABP Exclusive: ভারত vs পাকিস্তান না হলেও ইডেনে হয়তো বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলবে ভারত, পাকিস্তান দুই দলই