হায়দরাবাদ: হেনরিখ ক্লাসেন ও ময়ঙ্ক আগরওয়ালের দুরন্ত লড়াই জলে গেল। পঞ্চম উইকেটে দুইজনে মিলে মহামূল্যবান ৫৫ রান যোগ করেন বটে, তবে দলকে নাগাড়ে তৃতীয় জয় এনে দিতে ব্যর্থ তাঁরা। সানরাইজার্সকে ১৪ রানে হারাল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ১৯২ রান তাড়া করতে নেমে ১৭৮ রানেই অল আউট হয়ে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। চাপের মুখে দুরন্ত শেষ ওভার করলেন অর্জুন তেন্ডুলকর। মাত্র পাঁচ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন অর্জুন।
ক্লাসেন-ময়ঙ্কের লড়াই
১৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সানরাইজার্সের শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি। কেকেআরের বিরুদ্ধে শতরান হাঁকানো হ্যারি ব্রুক মাত্র ৯ রানেই সাজঘরে ফেরেন। রাহুল ত্রিপাঠীও ৭ রানের বেশি করতে পারেননি। ২৫ রানে দুই উইকেট হাঁকিয়ে চাপে পড়ে যায় সানরাইজার্স। উইকেট হারানোয় রানের গতিও ছিল মন্থর। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে মাত্র ৪২ রান তোলে সানরাইজার্স। তবে দলের অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম ও ময়ঙ্ক আগরওয়াল কিন্তু ইনিংসকে ভালভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তৃতীয় উইকেটে ৪৬ রান যোগ করেন তাঁরা। এমন সময়ই ছন্দপতন। পরপর দুই ওভারে গ্রিন ও পীযূষ চাওলা মারক্রাম (২২) ও অভিষেক শর্মাকে (১) সাজঘরে ফেরান।
এরপরেন হেনরিখ ক্লাসেন ও ময়ঙ্ক জুটি বাঁধেন। ক্লাসেনকে বিধ্বংসী মেজাজে দেখাচ্ছিল। মাত্র ১৬ বলে ৩৬ রানে করেন তিনি। এই পার্টনাারশিপ যখন সানরাইজার্সকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিল। ঠিক তখনই চার ওভারের মধ্যে ক্লাসেন, ময়ঙ্ক (৪৮) ও মার্কো জানসেনের (১৩) উইকেট হারায় সানরাইজার্স। আব্দুল সামাদও ব্যাট হাতে প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হন। ১২ বলে মাত্র নয় রান করেন কাশ্মীরের তরুণ ব্যাটার। শেষমেশ আর জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি নিজামের শহরের ফ্র্যাঞ্চাইজি। ১৭৮ রানেই শেষ হয় লড়াই। ম্য়াচে পল্টনদের হয়ে জেসন বেরেনডর্ফ, চাওলা ও রাইলি মেরিডিথ দুইটি করে উইকেট নেন।
প্রথম ইনিংস
এদিন টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সানরাইজার্স অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম। এই ম্যাচেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নেতৃত্বে ফেরেন রোহিত শর্মা। তাঁর পাশাপাশি এই ম্যাচে একাদশে ফেরেন জেসন বেরেনডর্ফও। ফলে যমজ ভাই মার্কো জানসেনের বিপরীতে ডুয়ান জানসেনের মাঠে নামা হল না। মুম্বইয়ের দুই ওপেনার রোহিত ও ঈশান কিষাণ শুরুটা কিন্তু বেশ ভালভাবেই করেন। দুই ওপেনার ৪১ রান যোগ করেন। রোহিত এই ম্যাচেই মাত্র চতুর্থ ব্যাটার হিসাবে আইপিএলে ছয় হাজার রানের গণ্ডি পার করে ফেললেন। তবে ২৮ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। রোহিতকে সাজঘরে ফেরান টি নটরাজন।
রোহিত আউট হওয়ার পর এদিন মুম্বই সকলকে খানিকটা চমকে দিয়েই ক্যামেরন গ্রিনকে তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে পাঠায় মুম্বই ম্যানেজমেন্ট। অজি তারকা ম্যানেজমেন্টের এই সিদ্ধান্তকে কিন্তু নিজের দুরন্ত ব্য়াটিংয়ের মাধ্যমে সঠিকই প্রমাণ করেন। প্রথমে ঈশানের সঙ্গে ৪৬ ও তারপরে তিলকের সঙ্গে ৫৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন গ্রিন। ঈশান এদিন ৩৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন। তবে সূর্যকুমার ফের ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। তিনি মাত্র সাত রানে সাজঘরে ফেরেন। তবে তিলক বর্মার ঝোড়ো ইনিংস মুম্বইকে বড় রানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
শেষের দিকে গ্রিনকে আরেক অজি তারকা টিম ডেভিডও যোগ্য সঙ্গ দেন। দুই অজি তারকা পঞ্চম উইকেটে ২১ বলে ৪২ রান যোগ করেন। ডেভিড ১৬ রান করেন। ইনিংসের শেষ বলে অবশ্য রান আউট হন তিনি। সানরাইজার্সের হয়ে বল হাতে মার্কো জানসেন সফলতম বোলার। তিনি ৪৩ রানের বিনিময়ে দুই উইকেট নেন। মুম্বই এই রান ডিফেন্ড করতে পারবে, না মারক্রামরা জয়ের হ্য়াটট্রিক করবেন, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন: অর্জুনের হাত ধরেই এগোচ্ছে তেন্ডুলকর-নামা, শুভেচ্ছা সৌরভ, শাহরুখের